শরীর নিয়ে চিন্তায় থাকতে হবে। মাথা ও কোমরে সমস্যা হতে পারে। উপার্জন ভাগ্য শুভ নয়। ... বিশদ
রামকৃষ্ণ মিশন ও মঠের সাধারণ সম্পাদক স্বামী সুবীরানন্দজী মহারাজ জানান, কৃষি আর একা চলছে না। এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে পশুপালন, মৎস্যচাষ, উদ্যানপালন, স্বনির্ভর গোষ্ঠী প্রভৃতি। রামকৃষ্ণ মিশন লোকশিক্ষা পরিষদ এ ব্যাপারে এগিয়ে এসেছে। গ্রামীণ মানুষ, গঞ্জের মানুষ, গ্রাম কেন্দ্রিক ছোট শহরের মানুষকে নিয়ে পরিষদ এগিয়ে চলেছে। মহিলারা এগিয়ে এসে তৈরি করেছেন নানা ধরনের কৃষিজ সামগ্রী, শাড়ি, শাল, রকমারি সাজের জিনিস, ঘর সাজানোর জিনিসপত্র ইত্যাদি। এসব জিনিস গ্রাম ও শহরে বিনিময় মুদ্রায় বিক্রি করতে হবে। কারও কাছে সর্ষের তেল আছে, তার দরকার শাড়ি। তেল ও শাড়ির বিনিময় নিজেদের মধ্যে মুদ্রায় করতে হবে। এতে চাঙ্গা হবে গ্রামীণ অর্থনীতি।
রাজ্য সরকারের কৃষি উপদেষ্টা প্রদীপ মজুমদার জানান, ২০১১ সাল থেকে এখন পর্যন্ত রাজ্যে কৃষকের আয় প্রায় তিনগুণ। এই বার্ষিক আয় বৃদ্ধির পিছনে রয়েছে বিভিন্ন সরকারি প্রকল্প। যে চাষির এক কাঠা জমি রয়েছে, সেই চাষির মৃত্যুতে তাঁর পরিবারকে সরকারিভাবে দেওয়া হচ্ছে দুই লক্ষ টাকা। এতে তাঁর পরিবার ভেসে যাবে না। চাষিরা সব চাষে বিমা করুন। এতে সরকারি সহযোগিতা পাওয়া যাবে। নরেন্দ্রপুর কৃষি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের অধ্যক্ষ ড. মানস ঘোষ বলেন, কৃষিতে বেশি জল লাগে না। সব্জি চাষে মাটি না ফাটা পর্যন্ত জমিতে জল দেবেন না। মাটি ফাটলে সেই অংশ দিয়ে বায়ু চলাচল বাড়বে।
শিকড়গুলি সরাসরি বায়ুর অক্সিজেন ও নাইট্রোজেন গ্রহণ করবে। এতে উৎপাদন বাড়বে। এর পরই দিতে হবে সেচ। ধান চাষে সুধা অর্থাৎ সুনিশ্চিত ধান চাষ পদ্ধতি এসেছে। এতে ধান চাষে জলের ব্যবহার ৫২ শতাংশ কমেছে। ধান চাষে যে জল লাগে, তার তুলনায় মাত্র ৪০ শতাংশ জলে চাষ করা যাবে গম, ভুট্টা, বিভিন্ন ডালশস্য। নরেন্দ্রপুর রামকৃষ্ণ মিশনের সম্পাদক স্বামী সর্বলোকানন্দ মহারাজ বলেন, কোনও কাজ করব বলে ফেলে রাখা চলবে না। কৃষিকাজে জলের ব্যবহার কমাতে হবে। রাসায়নিক সারেরও ব্যবহার কমাতে হবে। এটা এখন থেকেই করতে হবে। তা হলে কৃষিতে উন্নতি হবে।
রাজ্য সরকারের পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দপ্তরের যুগ্ম সচিব সুপ্তিশিখা ভট্টাচার্য বলেন, সুন্দরবন এলাকায় এই রবি মরশুমে মিষ্টি জলের অভাব দেখা দেয়। এতে হেক্টরের পর হেক্টর জমি বিনা চাষে পড়ে থাকে। তাই এ বছর সুন্দরবনের জন্য দীপাঞ্জলি প্রকল্প এসেছে। এই প্রকল্পে প্রতিটি জমির আলের ধারে কাটা হবে আড়াই ফুট গভীর নালা। এই নালায় জমিয়ে রাখতে হবে বৃষ্টির জল। প্রকল্পের কাজ চলছে একশো দিনের প্রকল্পে। পরের বছর বোরো চাষে সুন্দরবন এগিয়ে যাবে। তবে নালার গভীরতা আড়াই ফুটের বেশি যেন না হয়। তা হলে নুন উঠে আসবে।
এই কৃষিমেলায় লোকশিক্ষা পরিষদের ছোট ও বড় স্বনির্ভর গোষ্ঠীর ৫০টি স্টল হয়। স্টলগুলিতে ছিল নানা সামগ্রী। সম্মিলিত গ্রমোন্নয়ন পরিচালন পরিষদের স্টলে বিক্রি হয় টিস্যু কালচার পদ্ধতিতে উৎপাদন করা জি ৯ প্রজাতির কলাগাছের চারা। দাম দশ টাকা। বিজ্ঞানভিত্তিক জল সংরক্ষণের জন্য ছিল আলাদা স্টল। কৃষিপণ্যের স্টলে ১৮ ইঞ্চি ব্যাসযুক্ত ব্রোকলি, ২০ ইঞ্চি ব্যাসের ফুলকপি, ৪ কেজি ওজনের বাঁধাকপি ছিল। সাত ফুট লম্বা মানকচু, বিভিন্ন অর্কিড নজর কাড়ে।