শরীর নিয়ে চিন্তায় থাকতে হবে। মাথা ও কোমরে সমস্যা হতে পারে। উপার্জন ভাগ্য শুভ নয়। ... বিশদ
জেলা কৃষিদপ্তরের ডেপুটি ডিরেক্টর সুশান্ত মহাপাত্র বলেন, ১০০ শতাংশ চাষি বীজ শোধন করেননি। তাছাড়া প্রতিকূল আবহাওয়ার কারণে জেলায় আলুতে ধসার প্রকোপ ক্রমশ বাড়ছে। ইতিমধ্যে জেলার মোট আলু চাষের প্রায় ৩০ শতাংশ এই রোগের শিকার হয়েছে। আবহাওয়া প্রতিকূল হওয়ায় দ্রুত তা পাশের জমিতেও ছড়িয়ে পড়ছে। তাই দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য আমরা চাষিদের সতর্ক করতে প্রচার শুরু করেছি। মাইকিংয়ের মাধ্যমেই কত দিনের গাছের জন্য কী ধরনের কীটনাশক কতটা ব্যবহার করতে হবে, তা চাষিদের জানানোর চেষ্টা করছি। ধসার পাশাপাশি আবহাওয়া প্রতিকূল হওয়ায় ফলন বেশ কিছুটা কমবে বলে আমরা আশঙ্কা করছি।
জেলা কৃষিদপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, বাঁকুড়া জেলার বিষ্ণুপুর মহকুমার ছ’টি ব্লক ছাড়াও সিমলাপাল, তালডাংরা, রাইপুর, সারেঙ্গা, রানিবাঁধ, বাঁকুড়া-১ ও ওন্দা ব্লকে আলুর চাষ হয়। সব ব্লক মিলিয়ে এবার জেলায় প্রায় ৫২ হাজার হেক্টরের কাছাকাছি জমিতে আলুর চাষ হয়েছে। যার মধ্যে বিষ্ণুপুর মহকুমার ৬টি ব্লকেই প্রায় ৩৮ হাজার হেক্টর জমিতে আলুর চাষ হয়েছে। জেলার মধ্যে শুধু কোতুলপুর ব্লকেই প্রায় ১৬ হাজার হেক্টর জমিতে আলুর চাষ হয়েছে। ধসার আক্রমণের ক্ষেত্রেও বিষ্ণুপুর মহকুমার জয়পুর, কোতুলপুর, সোনামুখী, পাত্রসায়র ও বিষ্ণুপুর ব্লকে বেশি প্রভাব পড়েছে। বাকি ব্লকগুলিতে ধসার আক্রমণ ক্রমশ বাড়ছে।
কৃষিদপ্তরের আধিকারিকরা জানিয়েছেন, ধসার অন্যতম লক্ষণ হল আলু গাছের পাতা হলুদ হয়ে যাওয়া। এই পরিস্থিতি দেখতে পেলেই কম বয়সের গাছের ক্ষেত্রে সাইমক্সাইলিন ৮ শতাংশ ও ম্যানকোজেব ৬৪ শতাংশ লিটার পিছু তিন গ্রাম করে মিশিয়ে সাত দিন অন্তর স্প্রে করতে হবে। ডাইমিথারফ ৫০ শতাংশ ও ম্যানকোজেব ৭৫ শতাংশ লিটার পিছু ৩ গ্রাম মিশিয়ে ব্যবহার করতে হবে। গাছের বয়স ৪০ দিন পেরিয়ে গেলে মেটাল্যাক্সিল ৮ শতাংশ ও ম্যানকোজেব ৬৪ শতাংশ লিটার পিছু ৩ গ্রাম জলে মিশিয়ে ব্যবহার করলে চাষিরা উপকার পাবেন। তবে খুব ভোরের দিকে ওষুধ স্প্রে না করে একটু রোদ উঠলে গাছের পাতা শুকিয়ে যাওয়ার পর ব্যবহার করলে ভালো ফল পাওয়া যাবে।
জয়পুরের আলুচাষি জয়ন্ত কোলে বলেন, অন্যান্য বছরের মতো এবারও বীজ শোধন করে প্রায় ৮ বিঘা জমিতে আলু লাগিয়েছি। তবে বৃষ্টি হওয়ায় এবার আলু লাগাতে একটু দেরি হয়েছে। তারপর কয়েক দিন অন্তর মেঘলা আকাশ ও বৃষ্টির কারণে জমিতে ধসার প্রকোপ দেখা দিয়েছে। জানি না কতটা ফলন ঘরে তুলতে পারব।
ওন্দার চাষি তপন পাত্র ও মধুসূদন চক্রবর্তী বলেন, সানতোড় গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় ধসা ব্যাপক আকারে ছড়িয়ে পড়েছে। আলু ধরার আগেই গাছের পাতা শুকিয়ে যাচ্ছে। ফলে কতটুক আলু পাওয়া যাবে, বুঝতে পারছি না।
সানতোড়ের বাসিন্দা তুষার বিশ্বাস বলেন, শোধন করেই আলুর বীজ লাগিয়ে ছিলাম। চারা লাগানোর পর থেকে এখনও পর্যন্ত প্রায় আটবার কীটনাশক দিয়েছি। কিন্তু, আবহাওয়ার প্রতিকূলতার জন্য কোনও ওষুধ কাজ করছে না। তাই কতটা আলু পাওয়া যাবে বুঝতে পারছি না।