ব্যবসা ও পেশায় ধনাগম ভাগ্য আজ অতি উত্তম। বেকারদের কর্ম লাভ হতে পারে। শরীর স্বাস্থ্য ... বিশদ
উত্তর কলকাতায়
আকাশে পেঁজা তুলোর মতো মেঘের আনাগোনা। ভোরের বাতাসে শিউলি ফুলের সুমিষ্ট সুঘ্রাণ। আর হাওয়ার দাপটে কাশফুলের এলোমেলো দুলুনি। এর মধ্যেই প্যান্ডেল বাঁধার তোড়জোড়— ঠুকঠাক শব্দ কানে এলেই মনে হয় পুজো এসে গেল। পুজো মানেই ক’টা দিন বই-খাতার জেলখানা থেকে মুক্তি। এমনিতে ঘরকুনো আমি। কিন্তু পুজোর দিনগুলিতে যে কীভাবে ছটফটে হয়ে যাই বুঝতে পারি না! লাইন দিয়ে ঠাকুর দেখা, ভূরিভোজ, চারদিকে আলোর রোশনাই, সঙ্গে মিষ্টি মধুর গান— সে এক আলাদা অনুভূতি! লিখে বোঝানো যাবে না। সপ্তমী আর অষ্টমী বন্ধুদের সঙ্গে ঠাকুর দেখব, তা ইতিমধ্যে ঠিক হয়ে গিয়েছে। তবে, নবমী আর দশমীর প্ল্যান এখনও বাকি।
মিলিতা সমাদ্দার
দ্বাদশ শ্রেণি, রাজারহাট শিক্ষানিকেতন
দেশের বাড়ি যাব
বাঙালির শ্রেষ্ঠ উৎসব দুর্গাপুজো। পুজোর ক’টা দিনের জন্য সারা বছরের অপেক্ষা। আমার নতুন জামা কেনা হয়ে গিয়েছে। মা-বাবা আর দিদির সঙ্গে প্রতি বছরের মতো এবার ঠাকুর দেখতে যাব। বাবা বলেছে, পঞ্চমীতে উত্তর কলকাতা, ষষ্ঠীতে দক্ষিণ কলকাতা এবং সপ্তমীতে হাওড়ার ঠাকুর দেখাবে। অষ্টমীর ভোরে পুষ্পাঞ্জলি দিয়েই আমরা চলে যাব দেশের বাড়ি। দশমী পর্যন্ত সেখানেই কাটবে। দেশের বাড়িতে ভাইবোনেরা খুব মজা করব।
রাজন্যা ঘোড়ুই চতুর্থ শ্রেণি, পাঠভবন স্কুল
দীঘা সফর
কখনও প্রখর রোদের তেজ। ঘেমেনেয়ে একসা কাণ্ড। আবার কখনও বৃষ্টি। শরতের চেনা পরিবেশ এবছর নেই। তার উপর বন্যায় গ্রাম-বাংলা ক্ষতিগ্রস্ত। মনখারাপ নিয়েই পুজোয় আনন্দ করতে হবে। রবিবার অর্থাৎ তৃতীয়ার দিনই মা-বাবার সঙ্গে ঘুরতে যাচ্ছি দীঘায়। দাদু-দিদা আর মামাও যাচ্ছে। পুজোর আগেই সমুদ্র সৈকত থেকে ঘুরে চলে আসব। সমুদ্র আমার খুব প্রিয়। উত্তাল জলরাশি। পাড়ে এসে আছড়ে পড়ে ঢেউগুলি। কোনও ক্লান্তি নেই। দীঘা থেকে ফিরে পুজোর আনন্দে মেতে উঠব।
সুস্মিত ঘোষ ষষ্ঠ শ্রেণি, সেন্ট লরেন্স হাই স্কুল
সিমলায় কাটবে দুর্গাপুজো
এবারের পুজো কাটবে কলকাতা থেকে বহুদূরে। সিমলা-কুলু-মানালি বেড়াতে যাচ্ছি আমরা। ষষ্ঠীর দিন হাওড়া থেকে ট্রেনে উঠছি। আমাদের সঙ্গে মামা-মামি ভাই-বোনেরাও যাচ্ছে। রোটাং পাসে যদি বরফ দেখতে পাই তাহলে খুব মজা হবে। বাবার মোবাইলে খালি সিমলার ছবি ঘুরিয়ে ফিরিয়ে দেখছি।
অব্ধিজা চিকি চতুর্থ শ্রেণি, সেন্ট জনস ডায়োসেশন স্কুল
আকাশের মুখ ভার দেখে মনখারাপ
এবার পুজোয় নাকি বৃষ্টি হবে? এমনিতে বৃষ্টি আমার খুব ভালো লাগে। বৃষ্টির ঝাপসা রং, গন্ধ, ভিজে হাওয়া... কিন্তু পুজোর সময়? একেবারেই নয়। তখন আমার ঝকঝকে নীল আকাশের মাঝে পেঁজা তুলোর মেঘগুলোই চাই। আকাশের মুখ ভার দেখে আমারও মনটা খারাপ হয়ে যাচ্ছে। হাফ ইয়ারলির রেজাল্ট ভালো হয়নি। তাই মা বলে দিয়েছে, এই পুজোয় পড়াটাই তোমার প্ল্যানিং। রোজ সকালে পড়তে বসতে হবে। নো ছুট্টি। ওটা ঠিকঠাক হলে বিকেলে বেরনোর ছাড়পত্র মিলবে। আমি অবশ্য পাড়ার পুজোয় অঞ্জলি, ফাংশনে গান গাওয়ার চান্স নিয়ে সুড়ুত করে মণ্ডপে পালিয়ে যাব। আর বিকেলগুলো তো বাবা বেরবেই। তখন সবাই মিলে। কখনও সল্টলেক, কখনও যাদবপুরের পুরনো পাড়ায়। আগের ঠিকানার আবাসনে একদিন তো যেতেই হবে। ওখানে গেলে এখনও মনে হয় চেনা গণ্ডিতে ফিরেছি। মা দুর্গাও তখন আরও আপন লাগে। বলতে ইচ্ছে করে, পরের বার রেজাল্ট যেন ভালো হয় মা। খুব বেশি কিন্তু পড়তে পারব না।
সাগ্নিক দত্তগুপ্ত ষষ্ঠ শ্রেণি, ডন বস্কো পার্ক সার্কাস
পাড়ার মণ্ডপে আড্ডা
প্যান্ডেলে প্যান্ডেলে ইতিমধ্যে এসে গিয়েছে দেবীমূর্তি। অন্যান্য বছরের মতো এবছরও আমার পুজো শুরু হবে ষষ্ঠী থেকে। এবার ষষ্ঠীর সকালে সিউড়ি ছাড়িয়ে মা-বাবার সঙ্গে পাড়ি দেব বোলপুরে। ওখানকার পুজোগুলো দেখব। খুব মজা হবে। সপ্তমীতে সিউড়িতেই ঠাকুর দেখা। বন্ধুদের সঙ্গে চলবে প্যান্ডেল হপিং। অষ্টমীতে মায়ের সঙ্গে অঞ্জলি দিতে যাওয়া। এবার খুব ভোরে অষ্টমীর অঞ্জলি হবে। তারপরই রয়েছে সন্ধিপুজো। ঠাকুর দেখে পা ব্যথা হয়ে গেলে পাড়ার পুজো মণ্ডপে বসে দেদার আড্ডা দিয়ে সময় কাটবে।
রোদসী চক্রবর্তী একাদশ শ্রেণি, পুরন্দরপুর হাই স্কুল
অনেক ঠাকুর দেখব
এবারের পুজোতে নতুন জামা পরে বাবা-মায়ের সঙ্গে অনেক ঠাকুর দেখব। আর অষ্টমীর দিন সকালে বাসে করে দেশের বাড়ি যাব। ওখানে আমার কয়েকজন বন্ধুও আছে। গ্রামে গিয়ে মাঠে যাব, কাশফুল তুলব। সুবর্ণরেখার নদীর জলে এবার আমাদের গ্রামের অনেক ক্ষতি হয়েছে। এটাই
খুব দুঃখের।
অর্পণ জানা
কেজি-টু, রামকৃষ্ণ মিশন আশ্রম শিশু বিদ্যাবীথি, নরেন্দ্রপুর
মহিষাসুরমর্দিনী মানেই পুজো শুরু
মা দুর্গা প্রতি বছর শরৎকালে বাপের বাড়ি আসেন। বাতাসে শিউলির গন্ধ, দিঘি-ভরা পদ্ম আর মাঠে-ঘাটে কাশফুলের ঢেউ মনে করিয়ে দেয় মা আসছেন। মহালয়ার ভোরে রেডিওতে ‘মহিষাসুরমর্দিনী’ শোনার মধ্যে দিয়েই আমার পুজো শুরু হয়। তৃতীয়া এবার রবিবার। তাই ওইদিনই কিছু ঠাকুর দেখব। আমাদের পাশের পাড়া রবীন্দ্রনগরে ষষ্ঠীর দিন অনুষ্ঠিত হবে বসে আঁকো প্রতিযোগিতা। তাতে অংশ নেব বলে ঠিক করেছি। এছাড়াও সপ্তমীতে রয়েছে ক্যুইজ প্রতিযোগিতা। আর ঠাকুর দেখতে বেরিয়ে অবশ্যই বিরিয়ানি খাব।
তৃণাঙ্গনা সিংহ
সপ্তম শ্রেণি,
রামমোহন মিশন স্কুল
জঙ্গল আর জলপ্রপাত দেখব
বোনের হাত ধরে নতুন জামা পরে ঠাকুর দেখতে বেরব। মা-বাবার সঙ্গে ষষ্ঠীর সন্ধে থেকে অষ্টমীর মধ্যে সল্টলেক ও কলকাতার বিখ্যাত পুজোগুলি দেখে ফেলব। আর পাড়ার পুজোতে নৃত্যানুষ্ঠান, অষ্টমীর সকালে মায়ের শাড়ি পরে মা দুর্গার স্নিগ্ধ মুখের দিকে তাকিয়ে অঞ্জলি দেওয়া, ভোগ খাওয়া এসব তো আছেই। কিন্তু আমার কাছে পুজোর সব থেকে বড় উপহার বাবার কাছ থেকে পাওয়া শিশুদের তিনটি রঙিন পূজাবার্ষিকী আর বেড়াতে যাওয়া। নবমীর দিন আমরা সপরিবারে বেড়াতে যাব ওড়িশার সুন্দরগড় জেলার খন্ডধর জলপ্রপাত দেখার উদ্দেশে। যার উদ্দাম জলধারা খন্ড অর্থাৎ তরবারির চকচকে শাণিত ফলার মতো মালভূমি পাহাড় জঙ্গল কেটে উদ্দাম গতিতে উপর থেকে নীচে ঝাঁপিয়ে পড়ে। এর পাশাপাশি ঝাড়খণ্ডের সারান্ডায় শালের বিশাল জঙ্গলও দেখব দু’চোখ ভরে।
সুরধুনী দাস ষষ্ঠ শ্রেণি, বেথুন কলেজিয়েট স্কুল