পুজোপাঠে ও সাধুসঙ্গে মানসিক শান্তিলাভ। দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর কর্মোন্নতি ও উপার্জন বৃদ্ধি। ... বিশদ
আকাশ ভরা সূর্য তারা...’! বিশ্বব্রহ্মাণ্ডের একটা ছোট্ট অংশ আমাদের সৌরজগৎ। কিন্তু ব্রহ্মাণ্ডের শেষ কোথায়? তা নিয়ে কৌতূহলের অন্ত নেই। প্রত্যেক জিনিসেরই তো শুরু রয়েছে, শেষও রয়েছে। তাহলে ব্রহ্মাণ্ডের শুরুই বা কোথায়, শেষই বা কোথায়? যুগে যুগে এই প্রশ্ন তাড়া করে বেড়াচ্ছে মানুষকে। বিজ্ঞানীরা এর সন্ধান চালিয়ে যাচ্ছেন। কিন্তু এখনও পর্যন্ত ব্রহ্মাণ্ডের শেষ কোথায়, তা চিহ্নিত করা সম্ভব হয়নি। বিজ্ঞানীদের মতে, গ্রহ, নক্ষত্র, উপগ্রহ, ব্ল্যাকহোল, গ্রহাণু নিয়ে সুবৃহৎ সংসার ব্রহ্মাণ্ডের। যার কোনও আদি-অন্ত নেই। এই বিশ্বব্রহ্মাণ্ডের একটা মাঝারি মাপের নক্ষত্র সূর্য। এই সূর্যের চারপাশে ঘুরছে পৃথিবীসহ ৮টি গ্রহ, শত শত বামন গ্রহ, দু’শোর বেশি উপগ্রহ, হাজারো ধূমকেতু ও লাখো গ্রহাণু। এই সব মিলিয়েই আমাদের সৌরজগৎ। আমাদের সৌরজগতের অবস্থান ‘আকাশগঙ্গা’ ছায়াপথে বা ‘মিল্কিওয়ে’ গ্যালাক্সিতে। বিশ্বব্রহ্মাণ্ড তো দূরের কথা, সৌরজগতেরই বা শেষ কোথায়, তা কি আমরা জানি? কোনও কিছুর সীমা বলতে আমরা কী বুঝি? তা হল কোনও কিছুর শেষপ্রান্ত। ওই সীমার মধ্যেই তার অস্তিত্ব। বাইরে কিছু নেই। যেমন, টেবিলের শেষপ্রান্ত বা ফুটবল বা ক্রিকেট মাঠের সীমা। কিন্তু আমাদের সৌরজগতের কি এমন কোনও সীমা রয়েছে? বিজ্ঞানীদের ধারণা, আমাদের সৌরজগৎকে বলয়ের মতো ঘিরে রয়েছে ওর্ট ক্লাউড (Oort Cloud)। সেটাই আমাদের সৌরজগতের শেষ সীমানা।
আমাদের সৌরজগতের শেষ গ্রহ নেপচুন। এই কক্ষপথের পর পাথুরে বস্তুর যে বলয় রয়েছে, তাকে বলা হয় কুইপার বেল্ট। এই অঞ্চলই প্লুটোর মতো বামনগ্রহের ঘরবাড়ি। আমাদের সৌরজগতে সূর্য থেকে শুরু করে কুইপার বেল্টের সমস্ত বস্তু একে অপরের সমতলে ঘুরছে। কিন্তু ওর্ট ক্লাউড অতিকায় গোলাকার একটা আবরণ। আমাদের সৌরজগৎকে ঘিরে রয়েছে ওর্ট ক্লাউড। এখানে রয়েছে বরফমোড়া, ধূমকেতুর মতো সব বস্তু। আর হ্যাঁ, এই বস্তুগুলো কিন্তু এক-একটা পর্বতের মতো বা তার চেয়েও বড় হতে পারে। অনেক ধূমকেতুরই সূর্যের চারপাশে একবার ঘুরতে দু’শো বছরেরও বেশি সময় লাগে। এর থেকেই বিজ্ঞানীদের অনুমান, ওই ধূমকেতুগুলির উৎস ওর্ট ক্লাউডই। উদাহরণ হিসেবে তাঁরা বলছেন, ধূমকেতু সি/২০১৩ এ১ সাইডিং স্প্রিং ২০১৪ সালে মঙ্গলের খুব কাছ দিয়ে গিয়েছিল। এই ধূমকেতু এসেছিল ওর্ট ক্লাউড থেকে। ওটির সৌরজগতের কেন্দ্রীয় অঞ্চলে আবার ফিরে আসতে কয়েক হাজার বছর লেগে যাবে। ছোট্ট বন্ধুরা, তাহলেই ভাব কতটা পথ পেরিয়ে এই ধূমকেতুকে আসতে হয়েছিল।
এখন প্রশ্ন হল, ওর্ট ক্লাউড কত দূরে রয়েছে? বহু বহু দূর। এর মাপ তো আর কিলোমিটার বা মাইল দিয়ে করা যায় না। এজন্য বিজ্ঞানীদের একটা অঙ্কের ফিতে রয়েছে। তা হল অ্যাস্ট্রোনমিক্যাল ইউনিট বা জ্যোতির্বিদ্যা একক। এক জ্যোতির্বিদ্যা একক মানে পৃথিবী থেকে সূর্যের গড় দূরত্বের পরিমাণ। অর্থাৎ প্রায় ১৫ কোটি কিমি। উপবৃত্তাকার কক্ষপথে সূর্য থেকে প্লুটো ৩০ জ্যোতির্বিদ্যা একক দূরে। সেখানে ওর্ট ক্লাউডের শুরুই হচ্ছে সূর্য থেকে ২ থেকে ৫ হাজার জ্যোতির্বিদ্যা একক দূর থেকে। এর একেবারে বাইরের প্রান্তের দূরত্ব ১০ হাজার জ্যোতির্বিদ্যা একক বা তারও অনেক বেশি।