Bartaman Patrika
প্রচ্ছদ নিবন্ধ
 

কাঁটার মুকুট
 

সেকাল 
সমৃদ্ধ দত্ত: সভাপতি হিসেবে তাঁকে যে দলের মধ্যেই অনেকে পছন্দ করেন না, সেটা সুভাষচন্দ্র বসু বুঝতে পারছেন। আর এই মনে হওয়া তো ঠিকই। কারণ তাঁকে নিয়ে তাঁর অগোচরে কংগ্রেসের অন্দরে বিরুদ্ধ পক্ষ সমালোচনায় মুখর। সর্দার বল্লভভাই প্যাটেল ১৯৩৮ সালের জুলাই মাসে ডক্টর রাজেন্দ্র প্রসাদকে চিঠি লিখে বলেছিলেন, ‘জওহর বিদেশে গিয়েছে অন্তত চার মাসের জন্য। আপনিও ছ’মাসের জন্য নেই (রাজেন্দ্র প্রসাদ অসুস্থ ছিলেন)। আর আমাদের এমন এক সভাপতির সঙ্গে কাজ করতে হচ্ছে, যিনি জানেনই না তাঁর কাজটি ঠিক কী।’ সেই সময় কংগ্রেসের সভাপতি সুভাষ বোস। প্যাটেলের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক অনেকদিন ধরেই ভালো নয়। প্যাটেল সুভাষচন্দ্রের নেতৃত্বপ্রদান ক্ষমতা এবং সাংগঠনিক শক্তি তথা যুবসমাজকে উদ্বুদ্ধ করার যোগ্যতার ভূয়সী প্রশংসা করেন। কিন্তু সুভাষচন্দ্রের মধ্যে যে একক শক্তির এক আগুন আছে, সেটা বোধহয় তাঁকে অস্বস্তি দেয়। 
১৯৩৩ সালে সেই তিক্ততা চরমে উঠেছিল। প্যাটেলের দাদা বিটঠলভাই প্যাটেলের জেনিভায় দীর্ঘ অসুস্থতার পর মৃত্যু হয়েছিল। তবে, তিনি মৃত্যুর আগে তাঁর সম্পত্তির একাংশ ট্রাস্টের মাধ্যমে সুভাষচন্দ্রকে দিয়ে যান। সেই সম্পত্তি প্রদানের উইলে তিনি লিখে যান, বিদেশে ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনের প্রচার ও প্রসারের স্বার্থে এই অর্থ ব্যয় করা হবে। সেই দায়িত্ব পালন করবেন সুভাষচন্দ্র বসু। বিটঠলভাই প্যাটেলের মৃতদেহ জেনিভা থেকে জাহাজে বম্বে বন্দরে আসে। কিন্তু সেই সময় ভাই বল্লভভাই প্যাটেল ছিলেন নাসিক জেলে। গোটা অন্ত্যেষ্টিপর্বটির দায়িত্বে ছিলেন সরোজিনী নাইডু। কিন্তু পরে প্যাটেল যখন জানতে পারলেন যে, দাদা একটি উইলে সুভাষকে সম্পত্তি দান করে গিয়েছেন, তিনি সেটা মেনে নিতে পারেননি। তিনি সরাসরি অভিযোগ করেন ওই উইলের কোনও বৈধতা নেই। ডাক্তার ও উকিলের স্বাক্ষর কোথায়? শুধু অভিযোগ নয়। তিনি বম্বে হাইকোর্টে এই উইল যে জাল, সেই অভিযোগে মামলাও করেন। পাল্টা সুভাষচন্দ্র প্রবেট ফাইল করেন। যখন সুভাষচন্দ্র কংগ্রেসের সভাপতি, তখনও সেই মামলা চলছে। সুতরাং স্বাভাবিকভাবেই একটি শীতল সম্পর্ক তো অবশ্যই চলছে। সুতরাং পরবর্তী কংগ্রেসের অধিবেশনে অর্থাৎ ত্রিপুরী কংগ্রেসে যে অন্য কাউকে সভাপতি পদে বসানো হবে, সেই সিদ্ধান্ত নিয়ে অন্তত ওয়ার্কিং কমিটির কোনও সন্দেহই নেই।
কিন্তু সমস্যা হল, মাত্র এক বার সভাপতি হয়ে দলের সামগ্রিক উন্নয়ন এবং নীতি নির্ধারণের কাজটি সম্ভব হয় না। এতই কম সময়। এটা স্বাভাবিক। জওহরলাল নেহরুও এই কারণে দু’বার সভাপতি হওয়ার যুক্তি দিয়েছিলেন। ১৯৩৬ ও ’৩৭, দু’বার সভাপতি হয়েছিলেন। সুভাষচন্দ্র যখন আবার দ্বিতীয়বারের জন্য প্রার্থী হতে চাইলেন, তখন প্যাটেলের গোষ্ঠী তীব্র আপত্তি করে এবং মহাত্মা গান্ধীও সেই আপত্তিকে সমর্থন করেন। তিনি প্রাথমিকভাবে চাইলেন মৌলানা আবুল কালাম আজাদকে। দেশজুড়ে আচমকা মুসলিম লিগের উত্থান এবং মহম্মদ আলি জিন্নার আগ্রাসী দাবি যে, ভারতের মুসলিমদের একমাত্র প্রতিনিধি মুসলিম লিগ। এমতাবস্থায় গান্ধী চাইছিলেন, আজাদকে সভাপতি করে মুসলিমদের ইতিবাচক বার্তা দিতে। বরদোলিতে ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠকে আজাদের দলীয় সভাপতি পদে প্রার্থী হওয়ার কথা ঘোষণাও করে দেওয়া হল। সেখানে আজাদ কোনও আপত্তি করলেন না। কিন্তু সুভাষচন্দ্র যখন স্পষ্ট জানালেন যে, তিনি প্রার্থী হবেনই, তখন আজাদ দ্বিধায় পড়লেন। কারণ, আর কেউ গুরুত্ব দিক বা না দিক, কলকাতাবাসী হিসেবে তিনি জানেন, সুভাষচন্দ্র বসুর কী সাংঘাতিক জনপ্রিয়তা। সুতরাং সুভাষবাবুর বিরুদ্ধে প্রার্থী হতে তিনি রাজি নন। অতএব আজাদ সরে দাঁড়ালেন। 
মহাত্মা গান্ধী কিন্তু সিদ্ধান্ত বদল করতে রাজি নন। তিনি জওহরলাল নেহরুকে চিঠি লিখে জানালেন, মৌলানা সাহেব সভাপতি হতে রাজি নন। তুমি যদি রাজি থাক, অনুগ্রহ করে প্রার্থী হও। আর একান্তই তুমি রাজি না হলে, পট্টভী হবে মনে হচ্ছে একমাত্র পছন্দসই প্রার্থী। পট্টভী অর্থাৎ পট্টভী সীতারামাইয়া। মহাত্মা গান্ধীকে বাংলা থেকে এমন একজন চিঠি লিখে অনুরোধ করলেন যে, সুভাষকে আরও একবার সুযোগ দেওয়া হোক, যে, মহাত্মা গান্ধীও যথেষ্ট অস্বস্তিতে। কারণ চিঠি যিনি লিখেছেন, তাঁকে তিনি উপেক্ষা করতে পারেন না। তিনি হলেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। 
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে গান্ধী শুধু বললেন, আমার ব্যক্তিগত মতামত হল, সুভাষকে সভাপতি পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়ার প্রয়োজন। কারণ বাংলায় দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াইতে তিনি অনেক বেশি মনোনিবেশ করতে পারবেন।  ১৯৩৯ সালের ২১ জানুয়ারি সুভাষচন্দ্র সংবাদমাধ্যমে একটি বিবৃতি প্রকাশ করে জানালেন, তাঁর প্রার্থীপদের সপক্ষের যুক্তি। আর পাল্টা কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটির সিংহভাগ সদস্যদের একটি যৌথ বিবৃতি সরাসরি সুভাষবাবুর বিরুদ্ধাচারণ করে জারি করা হল। যৌথ বিবৃতির অন্যতম বক্তব্য হল, সুভাষচন্দ্র ফেডারেল ব্যবস্থা নিয়ে যে মতামত জানিয়েছেন, সেটা কংগ্রেসের অভিমত। সুতরাং এমন নয় যে, তিনিই ওটার প্রবক্তা। সভাপতির আসন এক প্রভূত সম্মানের। সভাপতির কাজ সেখানে একজন চেয়ারম্যানের। আরও বলা হল, আজাদ সরে দাঁড়ানো খুবই দুর্ভাগ্যজনক। কিন্তু এখন সুভাষবাবু সরে দাঁড়ালে পট্টভী সীতারামাইয়া সর্বসম্মতভাবে নির্বাচিত হতে পারেন। 
সুভাষচন্দ্র এই বিবৃতির বিরুদ্ধে আরও একটি বক্তব্য প্রকাশ করলেন। বললেন, সীতারামাইয়ার নাম ওয়ার্কিং কমিটিতে আলোচনা পর্যন্ত হয়নি। সেখানে আজাদের নাম ঘোষণা করা হয়। তিনি সরে দাঁড়ানোর পর এমনকী আচার্য নরেন্দ্র দেবের মতো কেউ সভাপতি পদে প্রার্থী হলেও আমি সরে দাঁড়াবে। কিন্তু এভাবে বিনা আলোচনায় কোনও নাম সামনে নিয়ে আসা রীতিবিরুদ্ধ। 
কিন্তু সবথেকে বিস্ময়কর হল গান্ধীর প্রিয়পাত্র, পুত্রসম জওহরলাল নেহরু এরকম যৌথ বিবৃতিতে রাজি নন। তিনি বললেন, এভাবে সভাপতির বিরুদ্ধে প্রার্থীপদ নিয়ে ওয়ার্কিং কমিটির বিবৃতি নীতি বিরুদ্ধ এবং জটিলতার সৃষ্টি করবে। তবে, তিনিও যে সুভাষচন্দ্রের দ্বিতীয়বার সভাপতি হওয়ার পক্ষে নয়, সেটাও স্পষ্ট করে দিলেন। কিন্তু এই পদ্ধতিতে বিরুদ্ধচারণের তিনি বিরোধী।  
প্যাটেল অথবা গান্ধী কিংবা ওয়ার্কিং কমিটি যতই চেষ্টা করুন সুভাষচন্দ্রকে গণতান্ত্রিকভাবে আটকাতে, সেটা সম্ভব হল না। যখন কংগ্রেস সভাপতি পদে ভোটাভুটি হল, তখন দেখা গেল, সুভাষচন্দ্র বসুর পক্ষে ভোট পড়েছে ১৫৮০। পট্টভী সীতারামাইয়ার পক্ষে ভোট দিয়েছেন ১৩৭৭ জন। বাংলা, মহীশূর, পাঞ্জাব, উত্তরপ্রদেশ ও মাদ্রাজ থেকে সুভাষচন্দ্র সবচেয়ে বেশি ভোট পেয়েছেন। মহাত্মা গান্ধী একটি আশ্চর্য বিবৃতি দিলেন। তিনি বললেন, আমি খুশি হয়েছি সুভাষের এই জয়ে। যদিও সুভাষের নির্বাচনী ইস্তাহারে সব যুক্তিকে আমি সমর্থন করতে পারিনি। আর আমি যেহেতু সীতারামা‌ইয়ার প্রার্থীপদ প্রত্যাহারে বাধা দিয়েছি, তাই সীতারামাইয়ার পরাজয়, তাঁর থেকেও বেশি আমার পরাজয়। 
সুভাষচন্দ্র তাঁর প্রতিক্রিয়ায় বলেছিলেন, আমি গান্ধীজির এই বিবৃতিতে যন্ত্রণা পেয়েছি। ডেলিগেটসরা গান্ধীজির বিরুদ্ধে ভোট দিতে আসেননি। তাঁরা দু’জন প্রার্থীর মধ্যে একজনকে বাছাই করেছেন। সুতরাং গান্ধীজির এভাবে নিজের পরাজয় হিসেবে বিবেচনা করা দুর্ভাগ্যজনক। নির্বাচনে ‌঩জয় হলেও সুভাষচন্দ্র কিন্তু সভাপতি পদে পূর্ণাঙ্গ সময় সমাপ্ত করতে পারলেন না। কারণ প্রথম থেকেই চরম বিরোধিতা শুরু হল। ওয়ার্কিং কমিটি থেকে পদত্যাগ করলেন সদস্যরা। পরিস্থিতি এমন তিক্ততায় গেল যে, সুভাষচন্দ্র পদত্যাগ করতে বাধ্য হলেন। 
আর সুভাষচন্দ্রের এভাবে সরে যাওয়াকে চরম দুর্ভাগ্যজনক আখ্যা দিয়ে ১৯৩৯ সালের ২১ এপ্রিলের মহাত্মা গান্ধীকে অনেকটা যেন দোষারোপ করেই এক শীর্ষ স্থানীয় নেতা চিঠি লিখে বললেন, সুভাষের এভাবে সরে যাওয়া প্রতিরোধ করতে আপনার যা করা উচিত ছিল, সেটা আপনি করেননি। সুভাষকে আমরা যদি ধরে রাখতে না পারি, সেটা চরম ক্ষতি। মহাত্মা গান্ধীকে এরকম চিঠি কে লিখেছিলেন? জওহরলাল নেহরু! 
....
দূরত্ব আগেই ছিল। মতান্তর অনেকবার হয়েছে। এমনকী, দেশ স্বাধীন হওয়ার পর ১৯৪৭ সালের অক্টোবর থেকেই দু’জনের সম্পর্কে এতই তিক্ততা চলে আসে যা ক্রমাগত চলতেই থাকে। একজন প্রধানমন্ত্রী। অন্যজন উপপ্রধানমন্ত্রী। মহাত্মা গান্ধী ১৯২৫ সালের পর থেকেই মোটামুটি মনে মনে স্থির করে নিয়েছিলেন তাঁর দুই উত্তরাধিকারীকে। অর্থাৎ স্বাধীন দেশের দায়িত্ব কাদের হাতে থাকবে, সেটা নিয়ে তাঁর কোনও সংশয় ছিল না। কংগ্রেস ও সরকার। দু’টিই এই দু’জন যোগ্যতার সঙ্গে চালাতে পারবেন বলে তিনি নিশ্চিত ছিলেন। যদিও ১৯৪৬ সালে একটি ধর্মসঙ্কট আসে তাঁর সামনে। দীর্ঘ ৬ বছর পর কংগ্রেসের সভাপতি পদে কাউকে বসাতে হবে। কারণ ভারত ছাড় আন্দোলনের পর থেকে সব কংগ্রেস নেতাই জেলে। অতএব সভাপতি নির্বাচন হবে কীভাবে? ১৯৪০ সালে সভাপতি পদে মনোনীত হয়েছিলেন শেষবার মৌলানা আবুল কালাম আজাদ। এবার ১৯৪৬ সালে নতুন সভাপতি কে হবেন? সর্দার বল্লভভাই প্যাটেল আগ্রহী। জে বি কৃপালনী আগ্রহী। সকলেই তাকিয়ে ছিলেন একজনের সিদ্ধান্তের দিকে। মহাত্মা গান্ধী কী বলেন। তিনি ওই দোলাচলের মুহূর্তে বেছে নিয়েছিলেন জওহরলাল নেহরুকেই। সর্দার বল্লভভাই প্যাটেল সরে দাঁড়ান। তখনই স্পষ্ট হয়ে যায় যে, জওহরলাল নেহরুকে আগামী দিনে প্রধানমন্ত্রী পদে দেখতে চান গান্ধীজি। আর  প্যাটেল সংগঠনকে মহাশক্তিশালী রাখতে সবথেকে যোগ্য ভূমিকা পালন করবেন। কিন্তু তাঁর এই দু‌ই ঩প্রিয় শিষ্যের মধ্যে স্বাধীন সরকার চালানোর সময় একের পর এক ইস্যুতে এতই মতান্তর তৈরি হল, যে ১৯৪৮ সালের জানুয়ারি মাসে দু’জনেই গান্ধীজির কাছে এসে ইস্তফা দেওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেন।
গান্ধীজির তখন শ্যাম রাখি না কুল রাখি অবস্থা। তিনি ১২ জানুয়ারি মাউন্টব্যাটেনকে অসহায়ভাবে বলেছিলেন যে, আপনি দু’জনের সঙ্গে কথা বলে বোঝান। আমার তুলনায় এখন এই দু’জন আপনার কথাই বেশি গুরুত্ব দেবে। কিন্তু গোটা পরিস্থিতি বদলে গেল সেই মাসের ৩০ তারিখ। নাথুরাম গডসে নামক এক যুবকের গুলিতে নিহত হলেন মহাত্মা গান্ধী। আর তারপরই প্যাটেল ও নেহরু পরস্পরকে বললেন, বাপুর স্বপ্নের ভারত তৈরি করাই আমাদের লক্ষ্য। সব ভেদাভেদ ভুলে তাই আমরা একজোট হয়ে কাজ করব। 
কিন্তু সেই প্রতিজ্ঞা টেকেনি। ১৯৪৯ সালে যখন সামনে এল একটি সিদ্ধান্ত। সেটি হল কে হবেন স্বাধীন ভারতের প্রথম রাষ্ট্রপতি। ১৯৫০ সালের ২৬ জানুয়ারি পর্যন্ত ভারত ছিল ডোমিনিয়ন স্ট্যাটাসের। অর্থাৎ আলঙ্কারিক রাষ্ট্রপ্রধান তখনও গভর্নর জেনারেল মাউন্টব্যাটেন। সাধারণতন্ত্র হিসেবে আত্মপ্রকাশ করার পর সেই স্থলাভিষিক্ত হবেন রাষ্ট্রপতি। নেহরুর পছন্দের প্রার্থী চক্রবর্তী রাজাগোপালাচারী। আর প্যাটেল চান ডক্টর রাজেন্দ্র প্রসাদকে। কিন্তু কংগ্রেসের অন্দরে সংগঠনে প্যাটেলের প্রভাব অনেক বেশি ছিল। অতএব রাজাজি নন, প্রথম রাষ্ট্রপতি হলেন ডক্টর রাজেন্দ্র প্রসাদ। যা নেহরুকে এতটাই ধাক্কা দিয়েছিল যে, তিনি ইস্তফা দেওয়ার কথা ভেবেছিলেন।
এবার ঠিক তারপরই কংগ্রেস সভাপতি নির্বাচন। প্যাটেল প্রার্থী করতে চাইলেন পুরষোত্তম দাস ট্যান্ডনকে। নেহরুর সেটা পছন্দ নয়। কারণ কয়েকটি কারণে ট্যান্ডনের সঙ্গে ছিল তাঁর নীতিগত বিরোধ। ট্যান্ডন হিন্দি ভাষাকে সর্বত্র চাপিয়ে দেওয়ার পক্ষপাতী। তিনি চাইতেন রাজ্যে রাজ্যেও হিন্দিই হোক প্রধান রাষ্ট্রভাষা। নেহরু এই হিন্দি আগ্রাসনের বিরোধী। সভাপতি নির্বাচনে লড়াই হল জোরদার। জে বি কৃপালনী বনাম পুরুষোত্তম দাস ট্যান্ডন। আবার প্যাটেলের জয়। কারণ ট্যান্ডন বিপুলভাবে জয়ী হয়ে সভাপতি হলেন। আবার বিধ্বস্ত নেহরু। যদিও খোদ প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গেই মতান্তরের জেরে কংগ্রেসের সভাপতি হয়ে কাজ করা অত্যন্ত কঠিন। ট্যান্ডন পারলেনও না। তাই তিনি অচিরেই পদত্যাগ করলেন। আর তাঁর সবথেকে বড় সহায় বল্লভভাই‌ প্যা঩টেলের ১৯৫০ সালের ডিসেম্বরে মৃত্যু হয়েছে। 
প্যাটেল নেই। আর কোনও নেতা নেই যে, নেহরুর সঙ্গে কোনও বিষয়ে মতান্তর হবে। অতএব গোটা কংগ্রেস নেতাকর্মীদের দাবি এবার হাল ধরুন নেহরুই। ১৯৫১ সাল থেকে ১৯৫৫ সাল পর্যন্ত কংগ্রেসের সভাপতি হয়ে থাকলেন জওহরলাল নেহরু। তাঁর স্থানে ১৯৫৬ সালে সভাপতি পদে বসেন ইউ এন ধেবার। এরপর যতদিন ভারতের জাতীয় কংগ্রেস অখণ্ড ছিল, অর্থাৎ ১৯৬৯ সালে দ্বিখণ্ডিত হওয়ার আগে পর্যন্ত আর কখনও নির্বাচন হয়নি সভাপতি পদে। সর্বসম্মতির ভিত্তিতে (অর্থাৎ ইন্দিরা গান্ধীর ইচ্ছায়) সভাপতি পদে বসেছেন বিভিন্ন নেতা। পরবর্তীকালে যখন ইন্দিরা গান্ধীর নামেই কংগ্রেসের পরিচয় হয় অর্থাৎ কংগ্রেস (ই) এবং ১৯৯৬ সালে সরাসরি আবার পুরনো নাম ফিরে এল, অর্থাৎ ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস, তখন আবার নির্বাচনের টানটান উত্তেজনা শুরু হল সীতারাম কেশরীর সভাপতি হিসেবে নির্বাচন হওয়ার সময়। 
মতান্তর ছিল। তিক্ততা ছিল। অভিযোগ ছিল। কিন্তু তা সত্ত্বেও ভারতের জাতীয় কংগ্রেসের ইতিহাসের নেতারা মাপে এতটাই বৃহৎ ছিলেন যে, ব্যক্তিগত শ্রদ্ধার আসন থেকে কেউ কাউকে সরিয়ে দেননি। তাই কংগ্রেসে চরম অপমানিত হলেও সুভাষচন্দ্র বসু আজাদ হিন্দ বাহিনীর তিন ব্রিগেডের নাম দিয়েছিলেন গান্ধী ব্রিগেড, নেহরু ব্রিগেড, আজাদ ব্রিগেড। 
কাশ্মীর থেকে উদ্বাস্তু। পাকিস্তান পলিসি থেকে দেশীয় রাজন্যবর্গ। অসংখ্য বিষয়ে মতান্তর চরমে। কিন্তু এতকিছুর পরও কী চোখে দেখতেন নেহরুকে প্যাটেল? ১৯৫০ সালের ২ অক্টোবর ইন্দোরে একটি অনুষ্ঠানে তিনি বলেছিলেন, ‘মহাত্মা গান্ধী নেই। আমাদের এখন নেতা জওহরলাল নেহরু। বাপু তাঁকে নিজের উত্তরাধিকারী মনোনীত করে গিয়েছেন। বাপুর সব সৈনিকের তাই কর্তব্য তাঁকে মান্য করা। আমিও সেরকম সৈনিক। আনুগত্যহীন হতে পারব না।’ আশ্চর্য উদার ছিল সেকালের রাজনীতি! 

একাল
 ২০০০ সালে সোনিয়া গান্ধী বনাম জিতেন্দ্রপ্রসাদের মধ্যে সভাপতি পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা হলেও সেটি নিয়ে বিশেষ কোনও উত্তেজনার অবকাশ ছিল না। কারণ স্বয়ং গান্ধী পরিবারের সদস্য যখন প্রার্থী, তখন আর কোনও প্রার্থীর জয়ের সম্ভাবনা নেই। অতএব সেবারও অনায়াসে জয়ী হন সোনিয়া গান্ধী। বরং ১৯৯৭ সালে ছিল শেষবার উত্তেজনাপূর্ণ নির্বাচন। 
১৯৯৬। কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটির মিটিং ডাকা হয়েছে ৯নং মতিলাল নেহরু মার্গে। এটা হল পি ভি নরসিমা রাওয়ের সরকারি বাসভবন। নরসিমা রাও আর কংগ্রেস সভাপতি পদে থাকতে চান না। কারণ তাঁর বিরুদ্ধে একের পর এক অভিযোগ উঠেছে দুর্নীতির। ওয়ার্কিং কমিটির কাছে তিনি বললেন, গোটা ব্যাপারটা যেদিকে গড়িয়েছে এরপর আমার আর উচিত নয় সভাপতি পদ আঁকড়ে ধরে থাকা। অন্য কেউ হন। প্রণব মুখোপাধ্যায় ছিলেন স্পেশাল ইনভাইটি। তাঁকে আলাদা করে ডেকে নরসিমা রাও হঠাৎ বললেন, আমার মনে হয় কেশরীজিকে দায়িত্ব দেওয়া উচিত।  সীতারাম কেশরীর নাম ঘোষণা করে নরসিমা রাও নিজের আসন অফার করলেন নতুন সভাপতি হিসেবে। সেটাই রীতি। ১৯৮০ সাল থেকে কংগ্রেসের কোষাধ্যক্ষ সীতারাম কেশরী। অর্থাৎ ১৬ বছর ধরে তিনি কংগ্রেস নামক একটি প্রাচীন বৃহত্তম দলের ট্রেজারার। তাঁর সম্পর্কে পরিচিত কৌতুক ছিল, ‘না খাতা, না বহি/যো কেশরীজি কহে ওহি সহি’। সেই কেশরী সভাপতি হলেন সহজে।
১৯৯৭ সালে সভাপতি নির্বাচনে কেশরী কিন্তু প্রবল প্রতিদ্বন্দ্বিতায় পড়লেন। তাঁর বিরুদ্ধে প্রার্থী দুই হেভিওয়েট। শারদ পাওয়ার ও রাজেশ পাইলট। কেশরীর ইলেকশন এজেন্ট প্রণব মুখোপাধ্যায়। কংগ্রেস রাজনীতির চাণক্য। হাই প্রোফাইল দুই নেতাকে পরাস্ত করে অনায়াসে জয়ী হলেন কেশরী।  ১৯৯৭ সালে কলকাতায় কংগ্রেসের প্লেনারি সেশন। সীতারাম কেশরীর সভাপতিত্বে। কিন্তু এই প্লেনারির সবথেকে তাৎপর্যপূর্ণ ঘটনা হল দুটি। প্রথমত, সোনিয়া গান্ধী সেই প্রথম কংগ্রেসের সদস্য হলেন। দ্বিতীয়ত, চমকপ্রদ ঐতিহাসিক ঘটনা, যা বাংলার রাজনীতিকে চিরতরে বদলে দিল। সেটি হল, নেতাজি ইন্ডোরে কংগ্রেসের প্লেনারি সেশনকে ভিড় ও সাফল্যে উড়িয়ে দিয়ে ব্রিগেড প্যারেড গ্রাউন্ডে একটি বিরাট সভা করলেন বাংলার কংগ্রেসের সবথেকে জনপ্রিয় নেত্রী। তিনি কংগ্রেসের প্লেনারিকে শ্লেষাত্মক তকমা দিয়ে বললেন, ‘ওটা ইন্ডোর। আসল কংগ্রেস আমরাই। আমরা আউটডোরে দেখিয়ে দিলাম মানুষ ও কংগ্রেস কর্মীরা কোন সভায় আছে।’ কথাগুলো বললেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ঠিক পাঁচ মাস পর কংগ্রেস পরিত্যাগ করে যিনি নতুন একটি দল গঠন করবেন। নাম হবে তৃণমূল কংগ্রেস।
....
আগামী কাল ১৭ অক্টোবর। আবার ২২ বছর পর কংগ্রেসের সভাপতি পদে নির্বাচন হচ্ছে। কে হবেন নতুন সভাপতি? শশী থারুর? নাকি মল্লিকার্জুন খাড়্গে? জানা যাবে ১৯ অক্টোবর। সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ বার্তা হল, ২২ বছর পর আবার গান্ধী পরিবারের হাত থেকে চলে যাচ্ছে এআইসিসির সর্বোচ্চ পদের মুকুট। কমবেশি সকলের ধারণা, সভাপতি যিনিই হবেন, তিনি আদতে আলঙ্কারিক সভাপতি। প্রকৃত রিমোট কন্ট্রোল মেকানিজম থাকবে গান্ধী পরিবারের হাতেই! কারণ ‘নেহরু-গান্ধী’ পদবি এই দলটির নিচুতলার কাছে আজও সেরা চালিকাশক্তি! তাঁরা বহুবার ছিটকে গিয়েছেন রাজনীতির চড়াই উতরাইয়ে! আশ্চর্যভাবে আবার ফিরে এসেছেন সাফল্যকে সঙ্গী করে! ১৯১৯ সালে  মতিলাল নেহরু সভাপতি হওয়ার ১০ বছর পর ১৯২৯ সালে তাঁর পুত্র হয়েছিলেন সভাপতি। পিতার সেই সভাপতি হওয়া লাহোরের এক অডিটোরিয়ামে বসে যে ১২ বছরের বালিকা দেখেছিল, সেই বালিকা ১৯৫৯ সালে সেই দলেরই সভানেত্রী হয়েছিলেন। ইন্দিরা গান্ধী। অতএব যে পরিবারের সঙ্গে এই দলটির নাম অঙ্গাঙ্গীভাবে জুড়ে গিয়েছে, পরিবারের  পঞ্চম প্রজন্মে এসে তার ভাগ্যে কী আছে? রাহুল-প্রিয়াঙ্কার কাছে সেটাই চ্যালেঞ্জ! 
 গ্রাফিক্স : সোমনাথ পাল
 সহযোগিতায় : উজ্জ্বল দাস
16th  October, 2022
হারানো ঐতিহ্য

বাংলার আনাচেকানাচে ছড়িয়ে হাজার  ‘বিপন্ন’ বিস্ময়। প্রচারের আলোর নীচে ঠিক কী অবস্থায় রয়েছে ইতিহাসের সেই নির্দশনগুলি। আন্তর্জাতিক হেরিটেজ সপ্তাহশেষে খোঁজ নিল ‘বর্তমান’।  বিশদ

27th  November, 2022
বিশ্বকাপের রণাঙ্গন
শেষ সুযোগ
সোমনাথ বসু

ক্যারিংটন গ্রাউন্ডে ফ্রি-কিক অনুশীলনে ব্যস্ত ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডো। বক্সের সামান্য বাইরে পাশাপাশি কয়েক গজ অন্তর বসানো সাতটি বল। নির্দিষ্ট দূরত্বে কৃত্রিম মানবপ্রাচীর। আর দুর্গরক্ষায় ডেভিড ডি গিয়া। এক, দুই, তিন... জালের হদিশ পেলেন না সিআরসেভেন। প্রথম দু’টি জমা পড়ল ডি গিয়ার গ্লাভসে। বিশদ

20th  November, 2022
স্মৃতির পর্দায় দূরদর্শন
জগন্নাথ বসু

বিগত শতাব্দীর অন্যতম বিস্ময়! সেই অক্টাগন থেকে আজকের স্মার্ট, ওএলইডি—টেলিভিশনের বিবর্তন বন্ধ হয়নি এই ফাইভজি যুগেও। আর একসপ্তাহ পরেই ২১ নভেম্বর। ১৯৯৬ সালের এই দিনেই রাষ্ট্রসঙ্ঘে আয়োজিত হয়েছিল প্রথম বিশ্ব টেলিভিশন ফোরাম। সেই থেকে তারিখটি বিশ্ব টেলিভিশন দিবস হিসেবে পরিচিত। তার আগে এই মাধ্যমের সঙ্গে জড়িয়ে থাকা স্মৃতির পথে হাঁটল ‘বর্তমান’
বিশদ

13th  November, 2022
ঋষি সুলভ
 

বাঙালি রেস্তরাঁর ওয়েটার থেকে প্রধানমন্ত্রী। সেই চমকপ্রদ উত্থানের নেপথ্য কাহিনি লিখলেন মৃণালকান্তি দাস।  বিশদ

06th  November, 2022
রাজার ঘরেও সে ধন নেই
রূপাঞ্জনা দত্ত

ব্রিলিয়ান্ট। ফুলব্রাইট স্কলার। হ্যান্ডসাম। সৎ। আরও যা যা বিশেষণ কাউকে আর পাঁচজনের থেকে আলাদা করে তোলে, তিনি তা-ই। জন্মসূত্রে বিত্তবান নন। বলা যায়, ভারতীয় বংশোদ্ভূত এক উচ্চ মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান। বাবা ডাক্তার। মা ওষুধের দোকান চালাতেন। তাঁদের ছেলে আজ বৈভবে টেক্কা দেন স্বয়ং রাজা চার্লসকে। বিশদ

06th  November, 2022
ধন্বন্তরি নীলরতন
রজত চক্রবর্তী

চলতি মাসেই ছিল তাঁর জন্মদিন। নিঃশব্দে পেরিয়ে গেল সেই দিনটি। প্রাতঃস্মরণীয় বাঙালি চিকিৎসকদের মধ্যে তাঁর নাম অগ্রগণ্য। তিনি ডাঃ নীলরতন সরকার। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর একসময়ের শিয়ালদহ মেডিক্যাল স্কুলের নামকরণ করা হয় এই প্রাক্তনীর নামেই যা আমাদের চিরপরিচিত— এনআরএস হাসপাতাল। বিশদ

30th  October, 2022
নানা রূপে কালী
ভাস্কর বন্দ্যোপাধ্যায়

 

মহাপরাক্রমী মহাবীর দুই অসুর শুম্ভ ও নিশুম্ভ স্বর্গ-মর্ত-পাতাল ত্রিলোকের অধীশ্বর। ইন্দ্র রাজ্যহীন। দেবতারা স্বর্গ থেকে বিতাড়িত। সূর্য, চন্দ্র, কুবের, বরুণ, অগ্নির জন্য যে কাজ নির্দিষ্ট, সেই কাজ করতে লাগল ওই দুই অসুর। পরাজিত, রাজ্যচ্যুত দেবতারা বিপদ থেকে বাঁচতে আদিশক্তি মহাদেবীকে স্মরণ করলেন। বিশদ

23rd  October, 2022
দক্ষিণাকালীর মাহাত্ম্য

সাধক যে মূর্তির সাধনা করছেন, সাধারণভাবে তার তাৎপর্য বোঝা যায় না। আসলে সাধকের মূর্তি বর্ণনায় থাকে গভীর আধ্যাত্মিক সঙ্কেত। দক্ষিণাকালীর যে রূপ আমরা প্রত্যক্ষ করি, পুজো করি— তারও গভীরে রয়েছে আধ্যাত্মিক সঙ্কেত। বিশদ

23rd  October, 2022
বাঙালির বাণিজ্যে 
লক্ষ্মীলাভ
শান্তনু বসু

কোনও সন্দেহ নেই উনিশ শতকের নবজাগরণ, পাশ্চাত্যের খোলা হাওয়া এবং সাহেব সংসর্গ এক দল সাহসী বাঙালিকে লক্ষ্মীর সাধনায় উদ্বুদ্ধ করেছিল। বিশদ

09th  October, 2022
মা দুর্গার নৈবেদ্য
লোকনাথ চক্রবর্তী

 

আমরা যা খাই বা গ্রহণ করি, তা যখন দেবতাকে দিই, তখন তাকে বলে নৈবেদ্য। বাড়িতে কেউ এলে তাকে যেমন আমরা হাত-পা ধোয়ার জল দিই, আসন দিই, কিছু খেতেও দিই। সেইরকম পুজোর সময় যে দেবতাকে আমাদের ভদ্রাসনে ডেকে আনি তাঁকেও নানা আচারে-উপচারে সম্মানিত করতে চাই। বিশদ

02nd  October, 2022
প্রথম ফোনটা এল
ভোর চারটে পাঁচে
সায়ম ভদ্র
(বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্রের নাতি)

প্রথম ফোনটা এল ভোর চারটে পাঁচে। সালটা ১৯৭৬। তার পাঁচ মিনিট আগেই শুরু হয়েছে মহালয়া উপলক্ষে বেতারের প্রভাতী অনুষ্ঠান ‘দুর্গা-দুর্গতিহারিণীম‌’। যেটি উত্তমকুমারের মহালয়া বলে পরিচিত। আমরা সকলে বাড়ির রেডিওটি চালিয়ে শুনতে বসেছি। সকলে বলতে দিদা, বড় পিসি, মা আর আমি। দাদু আছেন পাশের ঘরে। বিশদ

25th  September, 2022
 মহালয়ার শঙ্খধ্বনি

এক হাতে তুলে বাজাতে বেশ বেগ পেতে হয়, এত ভারী! বয়স দুশো কিংবা তারও বেশি। নিত্যানন্দ মহাপ্রভুর প্রত্যক্ষ বংশধরদের যে ধারাটি কলকাতার সিমলে অঞ্চলে রয়েছে, তাঁদের মন্দিরে রাখা রয়েছে শঙ্খটি। এই শাঁখটাই বাজানো হয়েছিল আকাশবাণীর ‘মহিষাসুরমর্দিনী’তে। বিশদ

25th  September, 2022
জাগো দুর্গা... জাগো
দশপ্রহরণধারিণী
কলহার মুখোপাধ্যায়

প্রচুর আলো। গঙ্গার জলে রোদ্দুর পড়লে চোখ ঝলসে যায়। তবে তা সত্ত্বেও আর্চের নীচে এ দিকটায় রোদ তেমন আসতে পারে না। একটু ছায়া ছায়া। ঝুপসি অন্ধকার। ‘মালিশ পার্টি’ না থাকলে কালো কাঠের পাটা পেতে এখানেই শুয়ে থাকে লখেশ্বর। বিশদ

25th  September, 2022
বিদায় এলিজাবেথ
শাসন-হীন এক শাসকের গল্প

বিষণ্ণ বৃষ্টিটা বন্ধ হয়েছিল শেষপর্যন্ত। জলে ধোয়া পরিষ্কার আকাশ। জোড়া রামধনুর দেখা পেতে বেশিক্ষণ লাগেনি। মনে হচ্ছিল ও দুটো বোধহয় বাকিংহাম প্যালেসেরই তোরণ।
বিশদ

18th  September, 2022
একনজরে
সিঁড়ি থেকে পড়ে গিয়ে গুরুতর চোট পেলেন সঙ্গীতশিল্পী জুবিন নটিয়াল। সঙ্গে সঙ্গে তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। গায়কের ডান হাতে একটি ছোট অস্ত্রোপচারও হয়েছে। আপাতত তিনি বিপন্মুক্ত। গায়কের মুখপাত্র জানিয়েছেন, ‘জুবিনের কনুই আর পাঁজরের হাড় ভেঙেছে। ...

আফগানিস্তানের কাবুলে নিযুক্ত পাকিস্তানি রাষ্ট্রদূতের উপর হামলা। ঘটনার কড়া নিন্দা করলেন পাক প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ। তবে ওই হামলায় যে নিরাপত্তারক্ষীর দৌলতে পাক দূত বেঁচে গিয়েছেন, তাঁরও প্রশংসা করেন প্রধানমন্ত্রী ...

বৃহস্পতিবার রাতে হালিশহরের খাসবাটিতে একটি খালি স্কুলগাড়িতে আগুন লাগে। ঘটনাস্থলে আসে দমকলের একটি ইঞ্জিন ও হালিশহর থানার পুলিস। পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, পুরো গাড়িটি পুড়ে গিয়েছে। ...

এবছর জলপাইগুড়ি জেলা বইমেলা আয়োজিত হতে চলেছে ধূপগুড়িতে। আগামী ২২ ডিসেম্বর থেকে ধূপগুড়ি পুরসভার মাঠে শুরু হচ্ছে বইমেলা। চলবে ২৮ ডিসেম্বর পর্যন্ত। সাত দিনব্যাপী বইমেলা করতে ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে প্রশাসনিক তৎপরতা। ...




আজকের দিনটি কিংবদন্তি গৌতম ( মিত্র )
৯১৬৩৪৯২৬২৫ / ৯৮৩০৭৬৩৮৭৩

ভাগ্য+চেষ্টা= ফল
  • aries
  • taurus
  • gemini
  • cancer
  • leo
  • virgo
  • libra
  • scorpio
  • sagittorius
  • capricorn
  • aquarius
  • pisces
aries

দুর্ঘটনা আর আঘাত যোগ আছে; সতর্ক হোন। মানসিক উত্তেজনায় লাগাম দিন, বাক বিতণ্ডা এড়িয়ে চলুন। ... বিশদ


ইতিহাসে আজকের দিন

বিশ্ব প্রতিবন্ধী দিবস
১৮৮২: চিত্রশিল্পী নন্দলাল বসুর জন্ম
১৮৮৪: বিশিষ্ট দার্শনিক, রাজনীতিবিদ তথা ভারতের প্রথম রাষ্ট্রপতি ডক্টর রাজেন্দ্র প্রসাদের জন্ম
১৮৮৯: বিপ্লবী ক্ষুদিরাম বসুর জন্ম
১৯৫৬: সাহিত্যিক মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের মৃত্যু
১৯৬৭: দক্ষিণ আফ্রিকার কেপটাউনে ডা. ক্রিশ্চিয়ান বার্নার্ড প্রথমবারের মত মানবদেহে হৃৎপিণ্ড প্রতিস্থাপন করেন
১৯৭৯: হকির জাদুকর ধ্যানচাঁদের মৃত্যু
১৯৮২: কবি বিষ্ণু দে’র মৃত্যু
১৯৮৩: বাংলা ভাষায় প্রথম ‘ছোটদের অভিধান’ প্রকাশ করে বাংলা অ্যাকাডেমি
১৯৮৪: ভোপালে গ্যাস দুর্ঘটনায়  কমপক্ষে আড়াই হাজার মানুষ প্রাণ হারান
২০১১: অভিনেতা দেব আনন্দের মৃত্যু
২০২০: সুভাষচন্দ্র বসুর ১২৫ তম জন্মদিন স্মরণে কলকাতার মাঝেরহাটে জয় হিন্দ সেতু নামে নতুন ব্রিজের উদ্বোধন হয়।



ক্রয়মূল্য বিক্রয়মূল্য
ডলার ৮০.৩২ টাকা ৮২.০৬ টাকা
পাউন্ড ৯৭.৭৯ টাকা ১০১.১৪ টাকা
ইউরো ৮৩.৮৯ টাকা ৮৬.৯৪ টাকা
[ স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া থেকে পাওয়া দর ]
পাকা সোনা (১০ গ্রাম) ৫৪,২৫০ টাকা
গহনা সোনা (১০ (গ্রাম) ৫১,৪৫০ টাকা
হলমার্ক গহনা (২২ ক্যারেট ১০ গ্রাম) ৫২,২০০ টাকা
রূপার বাট (প্রতি কেজি) ৬৪,৮০০ টাকা
রূপা খুচরো (প্রতি কেজি) ৬৪,৯০০ টাকা
[ মূল্যযুক্ত ৩% জি. এস. টি আলাদা ]

দিন পঞ্জিকা

১৭ অগ্রহায়ণ, ১৪২৯, শনিবার, ৩ ডিসেম্বর ২০২২। একাদশী ৫৮/৪৪ শেষ রাত্রি ৫/৩৫। রেবতী নক্ষত্র অহোরাত্র। সূর্যোদয় ৬/৫/২, সূর্যাস্ত ৪/৪৭/৩০। অমৃতযোগ দিবা ৬/৪৬ মধ্যে পুনঃ ৭/২৯ গতে ৯/৩৮ মধ্যে পুনঃ ১১/৪৭ গতে ২/৩৯ মধ্যে পুনঃ ৩/২২ গতে অস্তাবধি। রাত্রি ১২/৪৫ গতে ২/৩২ মধ্যে। মাহেন্দ্রযোগ রাত্রি ২/৩২ গতে ৩/২৫ মধ্যে। বারবেলা ৭/২৫ মধ্যে পুনঃ ১২/৪৭ গতে ২/৭ মধ্যে পুনঃ ৩/২৭ গতে অস্তাবধি। কালরাত্রি ৬/২৭ মধ্যে পুনঃ ৪/২৫ গতে উদয়াবধি। 
১৬ অগ্রহায়ণ, ১৪২৯, শনিবার, ৩ ডিসেম্বর ২০২২। দশমী দিবা ৮/২৬। উত্তরভাদ্রপদ নক্ষত্র দিবা ৯/৪। সূর্যোদয় ৬/৬, সূর্যাস্ত ৪/৪৮। অমৃতযোগ দিবা ৭/১ মধ্যে ও ৭/৪৩ গতে ৯/৫০ মধ্যে ও ১১/৫৭ গতে ২/৫২ মধ্যে ও ৩/২৭ গতে ৪/৪৮ মধ্যে এবং রাত্রি ১২/৫৬ গতে ২/৪৩ মধ্যে। মাহেন্দ্রযোগ রাত্রি ২/৪৩ গতে ৩/৩৭ মধ্যে। কালবেলা ৭/২৭ মধ্যে ও ১১/৪৭ গতে ২/৮ মধ্যে ও ৩/২৮ গতে ৪/৪৮ মধ্যে। কালরাত্রি ৬/২৮ মধ্যে ও ৪/২৭ গতে ৬/৭ মধ্যে। 
৮ জমাদিয়ল আউয়ল।

ছবি সংবাদ

এই মুহূর্তে
বিশ্বকাপ ২০২২: আর্জেন্টিনা-১ : অস্ট্রেলিয়া-০ (৩৫ মিনিট) (ভারতীয় সময় ১:০৫ এ.এম.)

11:59:00 PM

বিশ্বকাপ ২০২২: ইউএসএ-কে ৩-১ গোলে হারিয়ে কোয়ার্টার ফাইনালে নেদারল্যান্ডস

10:27:10 PM

বিশ্বকাপ ২০২২: নেদারল্যান্ডস-৩ : ইউএসএ-১ (৮০ মিনিট)

10:12:03 PM

বিশ্বকাপ ২০২২: নেদারল্যান্ডস-২ : ইউএসএ-১ (৭৬ মিনিট)

10:07:28 PM

বিশ্বকাপ ২০২২: নেদারল্যান্ডস-২ : ইউএসএ-০ (হাফ টাইম)

09:21:28 PM

বিশ্বকাপ ২০২২: নেদারল্যান্ডস-১ : ইউএসএ-০ (৯ মিনিট)

08:45:26 PM