শরীর-স্বাস্থ্যের প্রতি নজর দেওয়া প্রয়োজন। কর্মক্ষেত্রে উন্নতির সম্ভাবনা। গুপ্ত শত্রুতার মোকাবিলায় সতর্কতা প্রয়োজন। উচ্চশিক্ষায় বিলম্বিত ... বিশদ
মঞ্চায়নের আগে প্রযোজক ‘গেমপ্ল্যান’ এক সাংবাদিক সম্মেলনের আয়োজন করে। স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন ওঠে, এতদিন বাদে আবার কেন ‘প্রত্যাশা’?
উত্তরে নাটকের নির্দেশক খেয়ালি জানালেন,‘থিয়েটারের জন্য নিবেদিত প্রাণ ছিলেন চন্দ্রা ও জোছন দস্তিদার। এটা তাঁদের প্রতি আমাদের শ্রদ্ধাঞ্জলি। তাই এই পুনর্নিমাণ। ১৯৮৯ সালে আমার মা, মানে চন্দ্রা দস্তিদার নাটকটি লিখেছিলেন। এখন অনেকটা সময় গড়িয়ে গিয়েছে। তাই সময়ের সঙ্গে রিলেট করার জন্য আমি পুণর্লিখন করেছি। তবে এই বদলটা মায়ের লেখার ধরন এবং ধাঁচকে বজায় রেখেই।’
একটা নাটক মঞ্চস্থ করা মানে তার পেছনে ছোট-বড় নানা খরচ থাকে। যে খরচটা জোগাড় করতে কালঘাম ছুটে যায় যে কোনও নাট্য সংস্থার। ঠিক এই জায়গাটাতেই খেয়ালিদের দিকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছে গেমপ্ল্যান। ‘কর্পোরেট একটি সংস্থা, যেভাবে নাটককে ভালোবেসে, নাটকের উন্নতির কথা চিন্তা করে আমাদের পাশে এসে দাঁড়িয়েছে , তার জন্য আমি গেমপ্ল্যানের মালবিকা ও জিতের কাছে কৃতজ্ঞ’, জানালেন খেয়ালি।
‘প্রত্যাশা’ যখন প্রথম মঞ্চস্থ হয়, তখন খেয়ালির সঙ্গে অভিনয় করেছিলেন সব্যসাচী চক্রবর্তী। এই সময়ের ‘প্রত্যাশা’-এও তিনি আছেন। ‘তখন আমি ছেলের রোল করতাম, এখন আমি বাবার চরিত্র করছি। যে চরিত্রটা তখন জোছন দস্তিদার করতেন,’ জানালেন সব্যসাচী, ‘তাই একটু টেনশনে আছি। ‘অভিনেতার থেকে জানা গেল, আগের নাটকে অনেক চরিত্র ছিল। এখন কমানো হয়েছে। তবে এ নাটক প্রাসঙ্গিক তো বটেই, পাশাপাশি ইমোশানালও।
‘প্রত্যাশা’ এক বিবাহবিছিন্ন দম্পতি এবং তাদের ছেলেমেয়ের গল্প। বদলে যাওয়া সময়ের প্রেক্ষিতে সম্পর্কের, আবেগের, অনুভূতির পরিবর্তন। প্রতিটি মানুষের আলাদা আলাদা ইচ্ছে, চাহিদা, প্রত্যাশা। কারও পূরণ হয়, কারও হয় না। আর এই নিয়েই এই নাটক।
‘প্রত্যাশা’কে কেন্দ্র করে তিনটি নতুন ঘটনা ঘটেছে সাম্প্রতিক নাট্যজগতে। এক, এই প্রথম কোনও কর্পোরেট সংস্থা কোনও নাটক প্রযোজনা করছে। দুই, এই প্রথম আবৃত্তিকার ব্রততী বন্দ্যোপাধ্যায় নাটকে অভিনয় করছেন। তিন, গায়িকা লোপামুদ্রা মিত্র এই প্রথম কোনও নাটকে সুর করলেন।
‘প্রত্যাশা’র হাত ধরে মঞ্চে পদার্পণ করতে চলেছেন ব্রততী। শিল্পী জানালেন, ‘একটি বিশেষ কবিতার জন্য যেমন সারা জীবন অপেক্ষা করা যায়, তেমন একটি নাটকের জন্য সারা জীবন অপেক্ষা করা যায়। প্রত্যাশা সে রকম একটি নাটক। আমার চরিত্র, মানে প্রতিমা রায়, অনেকটাই আমার মতো। তার ব্যক্তিত্ব, তার শান্তিনিকেতনের প্রেক্ষাপট, তার অধ্যাপনা, সবকিছুই আমার সঙ্গে মিলে যায়। বহু বছর আগে, কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে নাটকে অভিনয় করা। তারপর এত বছর বাদে মঞ্চে ওঠা। দেখা যাক, (হেসে) খেয়ালিই ভরসা’।
খেয়ালি দস্তিদার, সব্যসাচী চক্রবর্তী এবং ব্রততী বন্দ্যোপাধ্যায়ের পাশে, মঞ্চে চরিত্র হয়ে উঠবেন কৌশিকী গুহ, ডন রায়, রাহুল দেব বসু এবং অনুসা বিশ্বনাথান-এর মতো পরিচিত মুখগুলি।
কাজেই, গেমপ্ল্যানের প্রযোজনায় এবং খেয়ালি দস্তিদারের পরিচালনায়, নাট্যপ্রেমী মানুষ এক ভিন্ন স্বাদের, চিরন্তন ভাবনার সমকালীন এক নাটক দেখতে চলেছেন। তাদের প্রত্যাশা পূরণের পারদটাকে ভালোলাগার শীর্ষবিন্দুতে পৌঁছে দেওয়ার জন্য প্রস্তুত ‘প্রত্যাশা’, তার নতুন আঙ্গিক নিয়ে।