পঠন-পাঠনে আগ্রহ বাড়লেও মন চঞ্চল থাকবে। কোনও হিতৈষী দ্বারা উপকৃত হবার সম্ভাবনা। ব্যবসায় যুক্ত হলে ... বিশদ
যে বৃদ্ধার কথা হচ্ছে, তিনি আমাদের দেশের চণ্ডীগড়ের বাসিন্দা হরভজন কউর। আর তাঁর মেয়ের নাম রবিনা। মেয়ের কাছেই থাকেন তিনি। মেয়ে-জামাই-নাতনিকে ঘিরেই এখন তাঁর পরিবার। মায়ের আক্ষেপের কথা জানার পর থেকেই রবিনা স্থির করে ফেলেছিলেন মায়ের জন্য কিছু করতে হবে। ছোটবেলায় তিনি দেখতেন, বাড়ির সকলেই মায়ের রান্নার প্রশংসা করতেন খুব। বাড়িতে যে কোনও উৎসব বা অনুষ্ঠানে দোকান থেকে কখনও মিষ্টি আসত না। বাড়িতেই সকলের জন্য মিষ্টি বানাতেন মা। নানারকম সুস্বাদু আচারও বানাতেন তিনি।
সে সময় মা খুবই লাজুক ছিলেন। তাঁর রান্না মুখে দিয়ে অতিথিরা প্রশংসা করতেন, অথচ মা সামনে আসতেনই না। দিনের বেশির ভাগ সময় ওই রান্নাঘরেই কাটাতেন তিনি। আজ থেকে চার বছর আগে রবিনা মায়ের কাছে তাঁর নিজের স্টার্ট-আপ শুরুর প্রস্তাব রাখেন। কিন্তু এই বয়সে পৌঁছে ব্যবসার কথা শুনে প্রথমে ভাবতেই পারছিলেন না হরভজন। পরে নাতনি এবং মেয়ে রবিনা জোর করায় ওই বয়সেই (৯০ বছর) তিনি নিজের ব্যবসা শুরু করলেন। প্রথমদিন বেসনের বরফি আর নানারকম আচার বানিয়ে কাছের একটি অর্গ্যানিক বাজারে বিক্রি করেছিলেন। প্রথম দিন সবটাই বিক্রি হয়ে গিয়েছিল। বাড়ি ফিরেছিলেন ২ হাজার টাকা নিয়ে। সেটাই ছিল তাঁর প্রথম উপার্জন। মেয়ে রবিনা জানিয়েছেন, সেদিন মায়ের চোখে-মুখে ভরপুর আত্মবিশ্বাস দেখেছিলেন তিনি। তারপর থেকে মেয়ে বা নাতনিকে আর জোর করতে হয়নি। নিজেই গ্রাহকদের থেকে অর্ডার নিতেন, আর বেসনের বরফি বানিয়ে দোকানে ডেলিভারি করতেন। নাতনি তাঁর প্যাকিংয়ের কাজ করে দেয়। বর্তমানে হরভজনের বয়স ৯৪ বছর। প্রথম দিনের মতোই উৎসাহের সঙ্গে ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছেন তিনি। তাঁর তৈরি এক কেজি বেসনের বরফির দাম ৮৫০টাকা। এই চার বছরে মোট ৫০০ কেজি বরফি বিক্রি করেছেন তিনি। নাতনির বিয়েতেও নিজের হাতে মিষ্টি বানিয়ে অতিথিদের খাইয়েছেন। এতদিন সব কিছু একাই করতেন, এবার লোক নিয়োগ করে তাঁর ব্যবসার আরও প্রসার ঘটাতে চান মেয়ে রবিনা।