পঠন-পাঠনে আগ্রহ বাড়লেও মন চঞ্চল থাকবে। কোনও হিতৈষী দ্বারা উপকৃত হবার সম্ভাবনা। ব্যবসায় যুক্ত হলে ... বিশদ
শহরের এক টোটোচালক বিজয় দাস বলেন, টোটোয় দু’জনের বেশি যাত্রীকে একসঙ্গে তোলা বারণ। কিন্তু ঘরে বসে আর কতদিন চলবে। তাই সরকারি নির্দেশিকা মেনেই টোটো চালাচ্ছি। এতে লোকসান বেড়েছে। তাই অনেক চিন্তাভাবনা করে বেআইনি হলেও ২০ টাকা চেয়ে নিচ্ছি। তবে কাউকে জোর করা হচ্ছে না। অনেকেই টাকা দিয়ে দিচ্ছেন।
নিমাই দাস নামে এক সিটি অটো চালক বলেন, আগে ১০ টাকা ভাড়া ছিল। কিন্তু এখন তো এতো কম সংখ্যক যাত্রী নিয়ে ওই টাকায় যাব কী করে। তারমধ্যে নতুন গাড়ি কিনতে হল। কিস্তি গুণতে হচ্ছে। হাকিমপাড়ার বাসিন্দা সৈকত বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, আগে বাড়ির সামনে থেকে ১০ টাকা দিয়ে বিধানমার্কেটে বাজার করতে টোটোয় যাতায়াত করতাম। এখন টোটোয় চড়লেই ২০ টাকা দিতে হচ্ছে। সংক্রমণের শঙ্কায় ওরা দু’জন করে যাত্রী নিচ্ছে ঠিকই। তবে কখনও তিনচারজনও যাত্রী তুলছেন।
নর্থ বেঙ্গল টোটো ওনার্স অ্যান্ড ড্রাইভার ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি শঙ্কর কর বলেন, শিলিগুড়িতে প্রায় হাজার চারেক টোটো রয়েছে। এখন অর্ধেকের মতো টোটো চলছে। আমরা সংগঠনগতভাবে ভাড়া বাড়ানোর কথা বলিনি। ভাড়া বাড়ানোর দাবিও করা হয়নি। কিন্তু অনেকক্ষেত্রেই ভাড়া বেশি নেওয়া হচ্ছে, এরকম অভিযোগ আমার কানেও এসেছে। চালকরা সমস্যায় আছেন। ওঁদের পর্যাপ্ত রোজগার নেই। তাই অনেকে ভাড়া বেশি নিচ্ছেন। তবে আমরাও বিষয়টি দেখব। যাত্রীদের অসুবিধা করে কেউ বেশি ভাড়া নিলে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে। একই কথা বলেছে সিটিঅটো ইউনিয়নও।
শিলিগুড়িতে অঘোষিতভাবে আনলক পর্বে টোটো বা অটোর ভাড়া দ্বিগুণ হয়ে গিয়েছে। ইউনিয়নগুলি সূত্রে জানা গিয়েছে, লকডাউন শুরুর আগে শিলিগুড়িতে টোটো বা অটোতে উঠলেই একজন যাত্রীকে ভাড়া হিসেবে ১০ টাকা দিতে হতো। আনলক পর্ব-২ শুরু হলেও রাস্তায় গাড়ি নামিয়ে অটো-টোটচালকরা সেইঅর্থে যাত্রীর দেখা পাচ্ছেন না। আবার প্রশাসনিক নির্দেশ মেনে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে গাড়িতে যাত্রী তুলতে হচ্ছে। এতে টোটোয় আড়াআড়িভাবে দু’জনকে নিতে হচ্ছে। আর আট আসনের সিটিঅটোয় তুলতে হচ্ছে চারজনকে। এতে লোকসান বাড়ছে চালকদের। আর লোকসান এড়াতেই চালকরা নিজেরাই জন প্রতি ২০ টাকা করে ভাড়া নিচ্ছেন।
কোনওরকম নোটিস ছাড়াই এভাবে ভাড়া বৃদ্ধি অনেকেই মেনে নিতে পারছেন না। এনিয়ে একাংশ যাত্রীর মধ্যে ক্ষোভ বিক্ষোভও রয়েছে। একদিকে কাজের জন্য বাইরে বেরনোর তাড়া, অন্যদিকে সংক্রমণের শঙ্কা। এই দু’য়ের গেরোয় বাধ্য হয়েই অনেকে দ্বিগুণ ভাড়া দিয়ে টোটোতে চড়ছেন। যদিও অনেকক্ষেত্রেই সামাজিক দূরত্ব মানা হচ্ছে না বলে যাত্রীরা অভিযোগ করছেন। শহরের বিধান মার্কেট, হিলকার্ট রোড, হাসমিচক প্রভৃতি ব্যস্ততম এলাকায় এই ছবি হামেশাই ধরা পড়ছে।