সন্তানের সাফল্যে গর্ব বোধ। আর্থিক অগ্রগতি হবে। কর্মে বিনিয়োগ বৃদ্ধি। ঘাড়, মাথায় যন্ত্রণা বৃদ্ধিতে বিব্রত ... বিশদ
পুজোর গন্ধ বলুন, পুজোর আমেজ বলুন বা পুজোর চোখধাঁধানো রোশনাই— সবকিছু বোধহয় সবচেয়ে সুন্দরভাবে একসঙ্গে ধরা পড়ে অষ্টমীর সাজে। গোটা শারদোৎসবের মধ্যে এ দিনটা যেন একটু বেশিই স্পেশাল। সেরা সাজটাও তাই জমিয়ে রাখা এদিনের জন্যই। কীভাবে সকলের মাঝে ব্যতিক্রমী অথচ অভিজাত শাড়িটি খুঁজে পাবেন? ভাবছেন সেই কবে থেকে, তাই না? ঘুড়ি বুটিকের দেবযানী বসু রায়চৌধুরী খোঁজ দিলেন এমন কিছু রংবাহারি চোখজোড়ানো হাতে বোনা বেনারসি আর কাঞ্জিভরমের। তাঁর সংগ্রহের সেই শাড়িগুলো দেখতে যেমন অসাধারণ, তেমনই উৎসবের জন্য তো বটেই, সারাজীবন সংগ্রহে রাখার মতো।
হাতে বোনা কাঞ্জিভরমের কথা প্রথমে বলি। দেবযানী জানালেন, এই কাঞ্জিভরমে ডবল ওয়ার্প সিল্ক থ্রেডে কাজ করা হয়। একে পিটলুম বলা হয়। পিটলুমে আজকাল কাঞ্জিভরম কমই তৈরি হয়। বেশিরভাগটাই হয় পাওয়ারলুমে। এই কাঞ্জিভরমগুলি যে হাতে বোনা তা বোঝা যাবে, এর পিছন দিকের অংশটা দেখলে। বোঝা যাবে সব সুতো একটা ধারাবাহিক বুননের মধ্যে রয়েছে। লাল কাঞ্জিভরমটি ব্রোকেডের। লাল ডবল ওয়ার্প সিল্কের সঙ্গে কপার জরি ব্যবহার করা হয়েছে। এই কপার জরি অত্যন্ত উঁচু মানের। এতে ৪০ শতাংশ ধাতু থাকে। সিল্ক থ্রেডের উপর মেটাল ওয়্যার কয়াল করা থাকে। এইভাবে এই লাল ব্রোকেডের শাড়িটি তৈরি হয়েছে। পুজোর রংদার সাজ ছাড়া এগুলো বিয়েতেও নিঃসন্দেহে পরা যায়।
সাদা যে কাঞ্জিভরমটি দেখছেন, তাতে সাদার সঙ্গে ব্যবহার করা হয়েছে সিলভার জরি। এতেও সিলভার অর্থাৎ রুপো আছে ৪০ শতাংশ আর সিল্ক বাকি ৬০ শতাংশ। এইভাবে সিলভার জরি দিয়ে ডবল ওয়ার্প সিল্কে হাতে বোনা সাদা কাঞ্জিভরম তৈরি হয়েছে। জরিভরা অভিজাত শ্বেতশুভ্র সাজ কিন্তু উৎসবে তৈরি করতে পারে ব্যতিক্রমী স্টেটমেন্ট।
দেবযানী তাঁর সংগ্রহে যেসব বেনারসি রেখেছেন, সেগুলিও হাতে বোনা ও কাতান সিল্কে করা হয়েছে। এগুলি ট্র্যাডিশনাল পিটলুমে ডবল ওয়ার্প টুইস্টেড সিল্ক থ্রেড দিয়ে তৈরি। দু’জন তাঁতি মিলে কাজ করেন এখানে। একজন তাঁত চালান আর একজন শাড়িজুড়ে নকশা ফুটিয়ে তোলেন। এই বেনারসিতে রয়েছে কারুয়া মোটিফ। ‘করা হুয়া’ কথাটি থেকে এসেছে কারুয়া যার অর্থ এমব্রয়ডারির মতো মোটিফ, বললেন দেবযানী। এখানেও সেই মোটিফের ধারাবাহিকতা বজায় রয়েছে। ছবিতে যেগুলো দেখতে পাচ্ছেন, সেগুলি ছাড়াও এই কালেকশনে আছে একটি বেগুনিরঙা বেনারসি। তাতে রয়েছে কারুয়া গুলদস্তা মোটিফ যেখানে প্রতিটি ফুল আলাদা করে প্লেস করা হয়েছে। আর একটি সবুজ বেনারসিতেও পাবেন কারুয়া জাল মোটিফ। শাড়ির দু’দিকেই এগিয়েছে জালের মতো এগিয়েছে মোটিফ। তাই এই নাম। দেবযানী বললেন, শাড়িতে যে জরি ব্যবহার করা হয়েছে, তাকে বলা হয় দো রতিয়া জরি অর্থাৎ দুই তারের জরি। বেনারসে এইভাবেই বলার চল রয়েছে।
তাছাড়া সংগ্রহে আছে একটি পিঙ্ক বেনারসি। সেটি কাতান থ্রি প্লাই সিল্কের উপর ডবল ওয়ার্প টুইস্টেড সিল্ক থ্রেডে তৈরি বলে জানালেন তিনি। এতেও আছে কারুয়া জাল মোটিফ। যেহেতেু পুরো মোটিফটা আবার হাতে তৈরি হয়, তাই এর আলাদা নাম। একে বলা হচ্ছে জংলা মোটিফ। এধরনের প্রতিটি শাড়িরই দু’দিকে একই মোটিফ। প্রতিটির পাড় থেকে জমি সবটাই হাতে বোনা। এক একটি শাড়ি বুনতে মোটামুটি ৪৫-৫০ দিন লেগেই যায়। তবে আর দেরি কেন, অষ্টমী সাজের প্ল্যানটা এবার করে ফেলুন চটপট।
ছবি: রাজীব চক্রবর্তী গ্রাফিক্স: সোমনাথ পাল