কর্মক্ষেত্রে অশান্তির সম্ভাবনা। মাতৃস্থানীয় কার শরীর-স্বাস্থ্যের অবনতি। প্রেমে সফলতা। বাহন ক্রয়-বিক্রয়ের যোগ। সন্তানের বিদ্যাশিক্ষায় উন্নতি।প্রতিকার: ... বিশদ
মনুষ্য ক্ষুদ্র কীট তার এত অভিমান যে, সে আত্মজ্ঞানে ভূমা ঈশ্বরকে জানিবে, কখনই নহে। আত্মজ্ঞানে ঈশ্বরকে জানা দূরে থাক্, নিজের শরীর ছাড়া আত্মাকে জানিতে পারে না।
যে বস্তু ভালবাসি তাহার সম্বন্ধে যত ভাল কথা শুনিয়াছি, বলিতে ইচ্ছা স্বাভাবিক। নিজের অবস্থা বলিয়া বলিলে দোষ হয়। প্রশংসার প্রচারে দোষ নাই।
কাম, শারীরিক গুণের সঙ্গে মিশ্রিত থাকিলেই কাম; শরীর হইতে ভিন্ন হইয়া পড়িলে প্রেম। তখন আত্মার অংশ অথবা আত্মা। শারীরিক গুণ সহজে ছাড়ে না। আহার সংযম একমাত্র ব্যবস্থা। যাঁহারা বিষয় কর্ম্ম করেন, তাঁহারা এ নিয়ম পালন করিতে পারেন না। বিষয় কর্ম্ম না থাকিলে পারা যায়।
আহার স্বপাকে এবং ক্রমে কমাইয়া ফল মূলে পরিণত করিতে হয়। প্রাতঃকাল হইতে সমস্ত দিন রাত্রি আসনে বসিতে অভ্যাস। নিদ্রা কমাইতে অভ্যাস করা। সর্ব্বদা নাম করিতে না পারিলেও কেবল বসিয়া থাকার উপকার আছে। গ্রাম্য আলাপ ত্যাগ, নিম্ন দৃষ্টি এ সমস্ত দ্বারা শারীরিক গুণের পরিবর্ত্তন হইলে কাম নিস্তেজ হয়।
শান্ত দাস্য প্রভৃতি ভাব ভিন্ন। সংকীর্ত্তনে যে ভাব হয় তাহা নামোন্মত্ততা। না মাতিয়া নাচিলেই দোষ, যেমন মদ না খেয়ে মাতলামি।
কৃপা করিয়া অবস্থা করে দেওয়া। তাহাতে এ সকল বস্তুর মূল্য থাকে না। তপস্যার একটা যে মূল্য আছে, তাহা স্বীকার্য্য। তপস্যা কিছুদিন কর্ত্তব্য। পথে না চলিলে কেহ চক্ষু বাঁধিয়া লইয়া যায়। স্থানে গেলাম, কিন্তু পথের সংবাদ কিছুই জানিলাম না। এজন্য তপস্যা অনুষ্ঠান।
বিশ্বামিত্র বহু তপস্যা করিয়াও রিপু জয় করিতে পারিলেন না। নিস্তেজ করিলেন। তখন বলিষ্ট বিশ্বামিত্রকে ব্রাহ্মণ বলিয়া সম্বোধন করিলেন, তখন তিনি রিপুর হস্ত হইতে মুক্ত হইলেন। আহার কমিয়ে কমিয়ে কেবল ফলে মূলে আনিলে শারীরিক উত্তেজনা হইতে রক্ষা পাওয়া যাইবে। এ উপায়ে যিনি করেন, তিনিই উপকার পান।
কাম যাওয়া, যদি যায় তখন শারীরিক যন্ত্রণা এত অসহ্য হবে, তাহা সহ্য কঠিন। মেরুদণ্ড করাতে কাটে।
ধর্ম্ম সাধন দুই প্রকার। যারা প্রবৃত্তির অধীন, তাহাদিগের প্রবৃত্তি-ধর্ম্মকে শাক্ত ধর্ম্ম নাম দিয়াছেন।
নিবৃত্তি ধর্ম্মকে বৈষ্ণব ধর্ম্ম নাম দিয়াছেন। শ্রীমদ্ভাগবতে আছে।
ভগবান, প্রথমে বামন অবতার হইয়া বলি নামে মানবাত্মারূপ অসুরের যজ্ঞে গমন করেন। মনুষ্য সংসারে ধর্ম্ম করিতে বসিয়া অত্যন্ত অভিমান প্রকাশ করে। আমি দাতা, আমি জ্ঞানী, আমি ভক্ত, আমি সমস্ত ইন্দ্রিয়রূপ দেবগণের রাজা। মনুষ্যের এই ধর্ম্মাভিমান দেখিয়া পরমেশ্বর বামন হইয়া অর্থাৎ আত্মার আত্মা হইয়া মনুষ্যের নিকট ত্রিপদ প্রার্থনা করেন। ত্রিপদ শুনিতে সামান্য, কিন্তু উহাই জীবের সর্ব্বস্ব। তত্ত্বঃ তমঃ রজঃ ভগবান এই ত্রিপদ অধিকার করিলে তখন বিরাট মূর্ত্তি ধরিয়া জীবের সর্ব্বস্ব অধিকার করিয়া সর্ব্বদা তাহার সঙ্গে সঙ্গে থাকেন। বামনদের বলির দ্বারে দ্বারী হইয়া পাতালে ছিলেন। এরূপ যে ব্যক্তি ভগবানে আত্মসমর্পণ করেন, ভগবান তাঁহার জন্য সর্ব্বদা ব্যস্ত। জীবকে আর ভাবিতে হয় না।