মাতৃকুল থেকে সম্পত্তি প্রাপ্তির যোগ। ডাক্তার, আইনজীবী, প্রমুখের পেশার প্রসার, সুনাম ও উপার্জন বৃদ্ধির সম্ভাবনা। ... বিশদ
গ্রাহককে সরাসরি ফোন করে কিংবা তার ফোন নম্বরে মেজেস অথবা ইমেল লিঙ্ক পাঠিয়েই তাদের বোকা বানানো হয়। জনপ্রিয় ব্যাঙ্ক, বিমা কোম্পানি, বিদ্যুৎ সংস্থা কিংবা মোবাইল ফোন অপারেটরের নাম ভাঁড়িয়ে গ্রাহকের সঙ্গে তারা ‘বন্ধুবেশে’ যোগাযোগ করে। কখনও বলা হয় কেওয়াইসি আপডেট করতে হবে; কখনও জানানো হয় বিদ্যুৎ বিল নির্দিষ্ট সময়ে জমা পড়েনি অতএব বাড়ির বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবে। বন্ধ বিমার পলিসি ফের চালু করা কিংবা আটকে থাকা বিমার ক্লেম পাইয়ে দেওয়ারও টোপ দেওয়া হয় অনেক সময়। মোটা টাকার লটারির ক্লেম গ্রহণেরও লোভ ধরানো হয় কখনও। সর্বশেষ চাতুরির নাম ডিজিটাল অ্যারেস্ট—এই ফাঁদও পাতা হয় একাধিক কৌশলে। কোনও ‘শিকার’ তাদের কথায় বিভ্রান্ত হয়ে ওটিপি কিংবা ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের গোপন তথ্যাদি শেয়ার করলেই সর্বনাশ! আধার এবং প্যান সংক্রান্ত তথ্য হাতিয়ে কিংবা বিপজ্জনক লিঙ্ক দিয়েও দুষ্কৃতীরা সরল গ্রাহকের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট সাফ করে দিতে পারে। নরেন্দ্র মোদির সাধের ডিজিটাল ইন্ডিয়ার হালফিল ট্রেন্ড এটাই। বস্তুত, প্রবণতাটি ক্রমবর্ধমান। সাইবার বিশেষজ্ঞদের হিসাবে, দেশে আর্থিক জালিয়াতির ৭৩ শতাংশই এখন হচ্ছে ফোন করে অথবা মেসেজ পাঠিয়ে। প্রতারিত লোকজন প্রতিকারের জন্য প্রথম দিকে তেমন কোনও পদক্ষেপ করতেন না। সরকারের ক্রেতাসুরক্ষা বিভাগ এবং সাইবার থানাসহ একাধিক ক্ষেত্র সম্পর্কে প্রচার বৃদ্ধির পর থেকে প্রতারিত নাগরিকরা প্রতিদিনই তাঁদের অভিযোগ নথিবদ্ধ করছেন।
অনেকে প্রশ্ন তোলেন, এত প্রচার সত্ত্বেও সবাই সচেতন হচ্ছেন না কেন? সমস্যাটি ঠিক এখানেই। মোবাইল নম্বর এবং ই-মেল সংযোগ ছাড়া ব্যক্তিগত ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের কথা এখন কল্পনাও করা যায় না। আবার ওই ফোনেই গ্রাহককে আরও অনেক প্রয়োজনীয়/জরুরি ফোন কল গ্রহণ করতেই হয়। যোগাযোগ চালু থাকে মেসেজ, হোয়াটসঅ্যাপ, টেলিগ্রাম, ই-মেল মারফতও। সেখানে এগুলির কোনটি আসল এবং নকল/বিপজ্জনক—একজন সাধারণ মানুষের পক্ষে সেই প্রভেদ করা মুশকিল। কারণ আসলটাকে ‘কপি’ করেই প্রতারকরা এই অসাধু কারবার চালিয়ে থাকে। সকলের বিভ্রান্তি দূর করতে আগেই উদ্যোগী হয়েছিল টেলিকম নিয়ন্ত্রক সংস্থা ‘ট্রাই’। এবার এই বিষয়ে নয়া নির্দেশিকা প্রকাশ করেছে রিজার্ভ ব্যাঙ্কও। আরবিআইয়ের নির্দেশে ব্যাঙ্ক এবং অন্যান্য বাণিজ্যিক পরিষেবামূলক ফোন নম্বরই আলাদা করে দেওয়া হচ্ছে। এক্ষেত্রে আসল নম্বরগুলি শুরু হবে কেবল ‘১৪০’ অথবা ‘১৬০’ দিয়ে। অতএব, অন্য নম্বর থেকে আসা যাবতীয় ফোন এবং এসএমএস ‘ভুয়ো’ বলেই নিশ্চিত হবেন গ্রাহক। কোনও বাণিজ্যিক সংস্থা (ব্যাঙ্ক, মিউচুয়াল ফান্ড, বিমা কোম্পানি প্রভৃতি) গ্রাহকের সঙ্গে যোগাযোগের সময় এই নিয়ম লঙ্ঘন করলে তাকে শাস্তির মুখে পড়তে হবে বলেও হুঁশিয়ার করে দেওয়া হয়েছে। ট্রাই এবং আরবিআইয়ের এই উদ্যোগ প্রশংসার দাবি রাখে। আশা করা যায়, দেশজুড়ে সাইবার প্রতারণা হ্রাসের পক্ষে উদ্যোগটি সহায়কই হবে। তবে, নাগরিক বা গ্রাহক সচেতনতা সবসময়ই এবং অধিক কাম্য। ‘আসল’ এবং ‘নকল’ চিনে নিতে তাঁরা যেন আর ভুল না করেন, অন্যথায় এত কাণ্ড অর্থহীনই হয়ে যাবে!