স্বদেশের বা বিদেশের নামী প্রতিষ্ঠানে বিদ্যালাভের সুযোগ পেতে পারেন। সব কাজে কমবেশি সাফল্যের যোগ। আয় ... বিশদ
মহারাষ্ট্র বিধানসভার এই নির্বাচনে ১৫টি আসনে পুরুষের চেয়ে মহিলারাই বেশি সংখ্যায় ভোট দিয়েছেন। নির্বাচন কমিশনের তথ্য আরও বলছে, ওই রাজ্যে মেয়েদের মধ্যে রাজনীতি এবং নাগরিক সচেতনতা বাড়ছে। প্রতিবছর বেশি সংখ্যায় মহিলারা ভোটার তালিকায় তাঁদের নাম তুলছেন। পুরনো সংস্কার, সংকোচ কাটিয়ে উঠে ভোটের লাইনেও দাঁড়াচ্ছেন তাঁরা বেশি সংখ্যায়। তার ফলে পুরুষ ও মহিলাদের মধ্যে ভোটদানের ভিতরে যে চিরকালীন গ্যাপ বা ফাঁক সেটাও ক্রমে হ্রস্ব হয়ে আসছে। যেমন ২০০৪ সালে পুরুষ ও মহিলাদের মধ্যে ভোটপ্রদানের ব্যবধান ছিল ৭ শতাংশ। এবার তা নেমে এসেছে মাত্র ৪ শতাংশে। ২০১৯-এর বিধানসভা নির্বাচনের তুলনায় এবার ৫২ লক্ষ ৫৮ হাজার ৬৭১ জন বেশি মহিলা ভোট দিয়েছেন। গত বিধানসভা নির্বাচনে মহিলাদের মধ্যে থেকে ভোট পড়েছিল ২ কোটি ৫৩ লক্ষ ৯০ হাজার ৬৪৭টি, এবার সেটা বেড়ে হয়েছে ৩ কোটি ৬ লক্ষ ৪৯ হাজার ৩১৮টি। অর্থাৎ মহিলাদের মধ্যে ভোটপ্রদানের হার বেড়েছে ৫.৯৫ শতাংশ। আরও লক্ষণীয় যে, এই নির্বাচনে গ্রামীণ এবং আদিবাসী মহিলারাই অধিক সংখ্যায় বা বেশি হারে এগিয়ে এসেছেন।
এটাকে তাঁদের উৎসাহ হিসেবেই দেখতে হবে। মহিলাদের ভোটদানে উৎসাহ বৃদ্ধির নেপথ্যে কোন জাদু কাজ করেছে? ভোট বিশেষজ্ঞদের মতে, মহিলা ভোটারদের মন জয় করেছে ‘লাড়কি বহিন যোজনা’ এবং মহিলাদের জন্য নিবেদিত আরও একাধিক সরকারি প্রকল্প। মহারাষ্ট্রে মাত্র ছ’মাস আগে লাড়কি বহিন স্কিমে প্রতিমাসে মাথাপিছু ১৫০০ টাকা প্রদান চালু হয়েছে। বিজেপির নেতৃত্বাধীন মহাযুতি প্রতিশ্রুতি দিয়েছে, এই প্রকল্পে আগামী দিনে ২১০০ টাকা করে মিলবে। এটাকেই গেমচেঞ্জার বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল। বিজেপি এই ফর্মুলায় মধ্যপ্রদেশে ইতিমধ্যেই জয়ের হাসি চওড়া করেছে। ফলে শিবরাজ সিং চৌহানের পরীক্ষিত পথ বদলের সাহস না দেখিয়ে সেটাকে আরও বেশি করে আঁকড়ে ধরাই শ্রেয় মনে করেছে মহাযুতি। তারা আরও দেখেছে, এমনই প্রকল্প সামনে রেখে নির্বাচনী সাফল্য পেয়েছে কংগ্রেসও—কর্ণাটক (‘গৃহলক্ষ্মী’ প্রকল্পে প্রতিমাসে ২০০০ টাকা) এবং তেলেঙ্গানায় (‘মহালক্ষ্মী’ প্রকল্পে প্রতিমাসে ২০০০ টাকা)। ঝাড়খণ্ডে শিবু সোরেন জয় ফিরে পেয়েছেন যে দুটি কারণে তার মধ্যে একটি ‘রাজনৈতিক প্রতিহিংসার জবাব’ হলে অন্যটি অবশ্যই ‘মুখ্যমন্ত্রী মাইয়া সম্মান যোজনা’। অতএব, নারীর ক্ষমতায়নের নীতির ন্যায্যতা আজ প্রমাণিত। এর ‘আবিষ্কর্তা’ নিঃসন্দেহে বাংলার জননেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর এই অবদান সমাজ-রাজনীতির গবেষকদের জন্য নতুন বিষয় হয়ে উঠেছে ইতিমধ্যেই। যাই হোক, মেয়েদের শুধু লক্ষ্মীর ভাণ্ডার দিলেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দেখানো পথের লক্ষ্যপূরণ হবে না। তাকে সম্পূর্ণতার দিকে নিয়ে যেতে হবে আরও নানাভাবে। মেয়েদের জন্য শিক্ষা এবং প্রশিক্ষণের সুযোগ বাড়াতে হবে। তাঁদের কাজের ব্যবস্থা করতে হবে সমস্ত ফিল্ডেই। সর্বোপরি চাই—প্রশাসনে, রাজনীতিতে এবং বিভিন্ন সংগঠনে তাঁদের অংশগ্রহণের পরিসর বৃদ্ধি। এজন্য প্রতিটি নির্বাচনে সব দলকে দিতে হবে বেশি সংখ্যায় মহিলা প্রার্থী। মন্ত্রী, মুখ্যমন্ত্রী থেকে প্রধানমন্ত্রী প্রভৃতি পদেও তাঁদের প্রতিনিধিত্ব বৃদ্ধি কাম্য। তবেই সফল হবে নারী জাগরণের ধারণা, সার্থক হবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় থেকে দ্রৌপদী মুর্মু প্রমুখের উচ্চাসন গ্রহণ।