স্বদেশের বা বিদেশের নামী প্রতিষ্ঠানে বিদ্যালাভের সুযোগ পেতে পারেন। সব কাজে কমবেশি সাফল্যের যোগ। আয় ... বিশদ
পান্ডেসরার কর্মযোগী সোসাইটিতে জনসেবা মাল্টিস্পেশালিটি হাসপাতাল নামের এই দ্বিতল ভবন সম্পর্কে সুরাতের মুখ্য জেলা স্বাস্থ্য আধিকারিক (সিডিএইচও) অনিল প্যাটেল মিডিয়াকে বলেন, ‘স্বাস্থ্য পোর্টালে এই হাসপাতালের নামে কোনও রেজিস্ট্রেশন নেই। এমনকী, আমাদের রেকর্ড খুঁটিয়ে দেখেও এমন হাসপাতালের কোনও অস্তিত্ব আমরা খুঁজে পাইনি।’ বায়ো-মেডিক্যাল বর্জ্য নিষ্কাশন, ডাক্তারদের গুজরাত মেডিক্যাল কাউন্সিলের (জিএমসি) রেজিস্ট্রেশন এবং ফায়ার ডিপার্টমেন্টের এনওসির মতো জরুরি নথিগুলিও অভিযুক্ত কর্তৃপক্ষ দেখাতে পারেনি। কড়া পদক্ষেপ করার জন্যই আমরা প্রয়োজনীয় দিকগুলি বিস্তারিতভাবে যাচাই করছি।’ রাজ্য সরকারের নিয়মে, প্রতিটি হাসপাতালের জন্য জেলা স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে ক্লিনিকাল এস্টাব্লিশমেন্ট অ্যাক্ট ২০২১-এর অধীনে একটি রেজিস্ট্রেশন সার্টিফিকেট গ্রহণ বাধ্যতামূলক। এই হাসপাতাল সেটাও নেওয়ার প্রয়োজন বোধ করেনি বলেই অভিযোগ। ফায়ার অফিসার নরোত্তম খালাসি মিডিয়াকে বলেন, ‘এদের ফায়ার পাম্পগুলির সঙ্গে ইলেক্ট্রিক মোটরের কানেকশন পাওয়া যায়নি। আইনসিদ্ধ অগ্নিনির্বাপক যন্ত্রও এদের নেই। আগুন সংক্রান্ত আরও অনেক বিধি লঙ্ঘনের দিক আমরা খুঁজে পেয়েছি। এসবের ভিত্তিতেই হাসপাতালটি সিল করে দেওয়া হয়েছে।’
একটি বেআইনি বা ভুয়ো হাসপাতাল বন্ধ হল, এটা বড় খবর নয়—আসল খবর তো নেপথ্যে, যা এখনও সামনে আসা বাকি। চিকিৎসার মতো একটি মহৎ পেশা নিয়ে এত বড় জালিয়াতি করার সাহস কোত্থেকে পেল এই প্রতিষ্ঠানের মাথারা? তাদের মধ্যে একাধিক ব্যক্তি তো অল রেডি দাগি। তাদের মাথার উপর আইনের খাঁড়া ঝুলেই আছে, তারপরও তারা বুক ফুলিয়ে এই কাণ্ড ঘটিয়েছে! এর পিছনে শাসক দলের মদত নেই, একথা একটি শিশুকেও বিশ্বাস করানো যাবে না। তদন্তকারীদের হাত-পা যদি বাঁধা না-থাকে, তবে তাঁরা প্রথমেই সেটা খুঁজে বের করুন। সেই ‘কান’ টানলেই ‘মাথা’র নাগালও পাওয়া যাবে। এই ঘটনা গুজরাতে সরকারি চিকিৎসা পরিষেবার করুণ ছবিও সামনে এনে দেয়। কেননা, সরকারি চিকিৎসা ব্যবস্থা চৌপাট না-হলে বেসরকারি চিকিৎসা পরিষেবা ক্ষেত্রের এমন রমরমা হবে কেন? প্রধানমন্ত্রীর রাজ্যে ‘ব্যবসাটি’ এতটাই লোভনীয় হয়ে উঠেছে যে রাম-শ্যাম-যদু-মধুর অনুপ্রবেশও সেখানে ঠেকানো যাচ্ছে না। একটা রাজ্যে আইনের শাসন কোন তলানিতে পৌঁছলে যে-কেউ ডাক্তার সেজে বড় ভুয়ো হাসপাতাল খুলে ফেলারও সাহস পায়, ভেবে দেখতে হবে সেটাও। তার কিঞ্চিৎ নমুনা তো হাতের কাছেই: ‘ভুয়ো’ কর্মকাণ্ডে গুজরাতের হাত পাকানো এটাই প্রথম নয়, মাসকয়েক আগেই আমেদাবাদের বাভলা তালুকে ভুয়ো ডাক্তারের হাতযশে এক রোগীর মৃত্যু হয়। ভুয়ো আইপিএল ম্যাচ, সরকারি দপ্তর, টোল প্লাজা, আদালত—কী ভেলকিই না দেখিয়ে চলেছে এই ‘ডাবল ইঞ্জিন’! বাকি ছিল জনসেবা মাল্টিস্পেশালিটি হসপিটাল, সেটাও দেখে নিল সারা দেশ। এই লজ্জা মহাত্মা গান্ধী, সর্দার প্যাটেল, মোরারজি দেশাইদের—কেননা তাঁরা এই গুজরাতের সুসন্তান বলেই জানে দেশ-দুনিয়া। মোদি-শাহরা তাঁদের সম্মান মর্যাদা রক্ষার যোগ্যতা হারিয়েছেন।