সম্পত্তি সংস্কার বিষয়ে চিন্তাভাবনা ফলপ্রসূ হতে পারে। কর্মক্ষেত্রে প্রভাব-প্রতিপত্তি বৃদ্ধি। যাবতীয় আটকে থাকা কাজের ক্ষেত্রে ... বিশদ
জয়ন্ত বেতাই উচ্চ বিদ্যালয়ের দ্বাদশ শ্রেণীর ছাত্র ছিল। মীরা হালদার ও জয়দেব হালদারের দুই মেয়ে, এক ছেলে। একমাত্র ছেলেকে হারিয়ে বারবার জ্ঞান হারাচ্ছেন মা মীরা হালদার। বাবা জয়দেব হালদারও কথা বলার মতো পরিস্থিতিতে নেই। মৃতের পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, সোমবার সকাল ১১টায় বন্ধুদের সঙ্গে বাড়ি থেকে বের হয় জয়ন্ত। বিকেল চারটের সময় শেষবারের মতো ফোনে পরিবারের সঙ্গে কথা হয়। সন্ধ্যার সময় মৃত্যুর খবর তার বাড়িতে পৌঁছায়। মৃতের তিন বন্ধুর সঙ্গে কথা বলে পুলিস জানতে পেরেছে, স্থানীয় একটি স্কুলের নবম শ্রেণীর এক ছাত্রীর সঙ্গে জয়ন্তর প্রেমের সম্পর্ক তৈরি হয়। সম্প্রতি ওই মেয়েটির পরিবার এই সম্পর্ক মানতে চায়নি। তাই নিয়ে সম্প্রতি ওই ছাত্রী ও জয়ন্তের মধ্যে মনোমালিন্য চলছিল। সেই মনোমালিন্য মেটানোর জন্য ওই তিন বন্ধুকে সঙ্গে নিয়ে জয়ন্ত সোমবার তেহট্ট এসেছিল। ওই দিন তেহট্ট-১ ব্লক অফিস থেকে সবুজ সাথী প্রকল্পের সাইকেল বিতরণ হচ্ছিল। তেহট্ট-১ ব্লক অফিসে ওই মেয়েটির সঙ্গে জয়ন্ত ও তাঁর তিন বন্ধু দেখা করে। সেখানে বেশ কিছুক্ষণ গল্প করার পর তাঁরা রাস্তায় খাবে বলে একসঙ্গে ব্লক অফিস থেকে বের হয়। হাউলিয়া পার্ক মোড়ে গিয়ে জয়ন্ত ও ওই মেয়েটি বাকবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়ে বলে পুলিসকে জানিয়েছে আটক হওয়া মৃতের তিন বন্ধু। তারা বলে, বচসা চলাকালীন হঠাৎ মেয়েটির ফোন কেড়ে নিয়ে জয়ন্ত আছাড় মেরে ভেঙে ফেলে। সেই অভিমানে মেয়েটি অটো ধরে নাজিরপুর বাড়ির উদ্দেশে চলে যায়। এরপর ওই চার বন্ধু বেতাই ছানাতলায় এক বন্ধুর বাড়িতে আসে। বাড়িতে সেই সময় কেউই ছিল না। বিকেল চারটে নাগাদ তার বন্ধু খেলতে যাচ্ছি বলি বাইরে যায়। বাকি দু’জন খাওয়া দাওয়া করবে বলে চলে যায়। ফাঁকা বাড়িতে জয়ন্ত একাই ছিল। বেশ কিছুক্ষণ পর ওই বন্ধু এসে জয়ন্তকে ডাকাডাকি করে। সাড়া শব্দ না পেয়ে সে জয়ন্তের কাছে যায়। সে দেখে জয়ন্ত নিস্তেজ হয়ে পড়ে রয়েছে। এরপর খবর পেয়ে বাকি বন্ধুরা আসে। তিনবন্ধু স্থানীয় এক টোটো চালককে ডেকে জয়ন্তকে তেহট্ট মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যায়। হাসপাতালে কর্মরত চিকিৎসক জয়ন্তকে মৃত বলে জানান। খবর পেয়ে পুলিস হাসপাতালে যায়। তারপর পুলিস ওই তিন বন্ধু সহ টোটো চালককে আটক করে থানায় নিয়ে আসে। পরে টোটো চালককে ছেড়ে দিলেও ওই তিন বন্ধুকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করে। মৃতের বাবা জয়দেব হালদার বলেন, আমার ছেলেকে খুন করা হয়েছে। দিন কয়েক আগে নাজিরপুর এলাকার এক ছাত্রীর মা আমার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে এসে আমাকে ও আমার ছেলেকে হুমকি দিয়ে গিয়েছে। আমার সন্দেহ ওই মহিলা আমার ছেলের মৃত্যুর পিছনে রয়েছে। আমার ছেলে আত্মহত্যা করার ছেলে নয়, এভাবে আত্মহত্যা করতে পারে না। জয়দেববাবুর অভিযোগ, ছেলেকে ঘরের মধ্যে মুখে বালিশ চাপা দিয়ে মারা হয়েছে। পুলিস জানিয়েছে, ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তিনজনকে আটক করা হয়েছে। তবে মঙ্গলবার বিকেল পর্যন্ত কোনও লিখিত অভিযোগ দায়ের হয়নি।