শরীর-স্বাস্থ্যের আকস্মিক অবনতি। বিদেশ ভ্রমণের সুযোগ আসতে পারে। সম্পত্তি নিয়ে পারিবারিক বিবাদ। ব্যবসায় নতুন সুযোগ ... বিশদ
ইলিশ মূলত একটি নির্দিষ্ট মরশুমে সমুদ্রে পাওয়া যায়। জুন থেকে সেপ্টেম্বর মাস পর্যন্ত ইলিশ ধরা পড়ে। অন্য সময়ে ইলিশ ধরাছোঁয়ার বাইরে থাকে। সামুদ্রিক মাছ ধরার জেলায় মোট ৩৬০০ট্রলার আছে। ৫০হাজারের কাছকাছি মৎস্যজীবী সামুদ্রিক মাছ ধরার সঙ্গে যুক্ত। রামনগর-১ ও ২, কাঁথি-১ ও দেশপ্রাণ এবং খেজুরি-২ মেরিন ব্লক হিসেবে পরিচিত। বিকল্প রোজগারের জন্য ওই পাঁচ ব্লকের পাশাপাশি মহিষাদল, হলদিয়া, সুতাহাটা, নন্দকুমার এবং নন্দীগ্রাম-২ ব্লকের মৎস্যজীবীদেরও আনার পরিকল্পনা করেছে প্রশাসন ও জেলা পরিষদ। অনেকেই মাছের মিন ধরে রোজগার করেন। মিন ধরাটা বৈধ নয়। কিন্তু, রোজগারের ব্যবস্থা না থাকায় অনেকেই জাল পেতে মিন ধরে সংসার চালান। এই অবস্থায় মিন ধরা আটকাতে ওই সব মৎস্যজীবীকেও বিকল্প রোজগারের ব্যবস্থা করে দিতে চাইছে মৎস্য দপ্তর।
এবছর দীঘার সমুদ্রে ইলিশ সেভাবে ওঠেনি। মৎস্যজীবী থেকে ওই পেশার সঙ্গে যুক্ত সকলেই কমবেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। তাছাড়া আবহাওয়া দপ্তরের সতর্কতায় এবছর মাঝেমধ্যেই মৎস্যজীবীদের সমুদ্রে যাওয়ার উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছিল। যার ফলে অন্যান্য বছরের মতো এবছর ইলিশ পাওয়া যায়নি। গত ১৯আগস্ট মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দু’দিনের জেলা সফরে দীঘায় এসে প্রথমেই রামনগর-১ ব্লকের পদিমা-২ গ্রাম পঞ্চায়েতের মৈত্রাপুর গ্রামে গরিব মৎস্যজীবীদের মহল্লায় গিয়েছিলেন। সেখানে মুখ্যমন্ত্রীকে কাছে পেয়ে মৎস্যজীবী পরিবারের মহিলারা বিকল্প রোজগারের ব্যবস্থার জন্য মুখ্যমন্ত্রীর কাছে আবেদন জানিয়ে ছিলেন। শেষমেশ এই প্রথম রাজ্য সরকার মৎস্যজীবীদের বিকল্প রোজগারের ব্যবস্থা করার উদ্যোগ নিল।
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, বিকল্প রোজগারের জন্য মোট ৩৫লক্ষ ৫৮হাজার টাকা এসেছে। ওই টাকায় এক হাজার মৎস্যজীবীকে ২০টি করে হাঁস বাচ্চা, আরও এক হাজার মৎস্যজীবীকে ২০টি করে মুরগিছানা এবং ১০০জনকে সেলাই মেশিন দেওয়া হবে। প্রাণিসম্পদ বিকাশ দপ্তর এই মুহূর্তে মাথাপিছু পাঁচটি করে হাঁস, মুরগির ছানা বিলি করছে। যদিও মৎস্য দপ্তর এক্ষেত্রে মাথাপিছু ২০টি করে হাঁস-মুরগির বাচ্চা দেবে। দীঘায় ইলিশ ধরার কাজে যুক্ত পাঁচটি মেরিন ব্লকের মৎস্যজীবীদের পাশাপাশি অন্য আরও ছ’টি ব্লক থেকে মৎস্যজীবীদের বেছে উপভোক্তা তালিকা তৈরি করা হবে। মিন ধরা পুরোপুরি বন্ধ করার জন্য বিকল্প রোজগারের উপর জোর দেওয়া হবে।
পূর্ব মেদিনীপুরের সহ মৎস্য অধিকর্তা(মেরিন) সুরজিত বাগ বলেন, ইলিশ একটা মরশুমে পাওয়া যায় না। বছরের অন্যান্য সময়ে মৎস্যজীবীদের আয়ের সংস্থান থাকে না। তাছাড়া মিন ধরা আটকাতে গেলে তখন অনেকেই বিকল্প রোজগারের ব্যবস্থা করে দিতে বলেন। এই অবস্থায় মৎস্যজীবীদের বিকল্প রোজগারের ব্যবস্থা করতে আমরা একটা প্রস্তাব পাঠিয়েছিলাম। সেই প্রস্তাব গ্রহণ করে টাকা দিয়েছে রাজ্য সরকার। আমরা দ্রুত ২১০০জনকে বিকল্প আয়ের ব্যবস্থা হিসেবে সামগ্রী দেব।
এছাড়াও ২০১৯-’২০আর্থিক বছরে জেলায় নোনাজলে ভেনামি চিংড়ি চাষের জন্য ১কোটি ৩৯লক্ষ ২০হাজার টাকা এসেছে। নোনা জলে বাগদা চিংড়ি চাষের জন্য বরাদ্দ হয়েছে আরও ১কোটি ৩৯লক্ষ ২০হাজার টাকা। নোনা জলে মিশ্র মাছ চাষের জন্য এসেছে ৯৩লক্ষ ৬০হাজার টাকা।