সঠিক বন্ধু নির্বাচন আবশ্যক। কর্মরতদের ক্ষেত্রে শুভ। কর্মক্ষেত্রে বদলির কোনও সম্ভাবনা এই মুহূর্তে নেই। শেয়ার ... বিশদ
উল্লেখ্য, ২০১৬ সালে বিধানসভা নির্বাচনে বিষ্ণুপুর, সোনামুখী ও বড়জোড়া বিধানসভা কেন্দ্রে সিপিএম ও কংগ্রেসের জোট প্রার্থীদের কাছে তৃণমূল প্রার্থীরা সামান্য ভোটের ব্যবধানে হারেন। বড়জোড়ায় তৃণমূলের তারকা প্রার্থী সোহম চক্রবর্তী জোট প্রার্থী সিপিএমের সুজিত চক্রবর্তীর থেকে মাত্র ৬১৬ ভোট কম পান। বিষ্ণুপুরেও তৃণমূল প্রার্থী শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় জোট প্রার্থী কংগ্রেসের তুষারকান্তি ভট্টাচার্যের চেয়ে মাত্র ৮৯১টি ভোট কম পান। এছাড়াও সোনামুখীতে তৃণমূল প্রার্থী দীপালি সাহা সিপিএমের অজিত রায়ের চেয়ে ৮ হাজার ৭১৯টি ভোট কম পান। অন্যদিকে, বাকি কোতুলপুর, ওন্দা, ইন্দাস ও খণ্ডঘোষ, এই চারটি বিধানসভা কেন্দ্রে তৃণমূল প্রার্থীরা বিরোধীদের চেয়ে সব মিলিয়ে ৫৪ হাজারেরও বেশি ভোটে জয়ী হন। তাই ওই কেন্দ্রগুলিতে জয় নিশ্চিত ধরে নিয়ে মার্জিন বাড়ানোর লক্ষ্যে ঝাঁপাচ্ছে শাসক দল।
অন্যদিকে, সামান্য ব্যবধানে পিছিয়ে থাকা কেন্দ্রগুলিকে এবার বাড়তি নজর দেওয়ায় দলের হেভিওয়েট নেতা ও মন্ত্রীদের এলাকায় প্রচারে নামানো হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী একাধিকবার এলাকায় নির্বাচনী সভায় এসে স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিমান ভুলে উন্নয়ন করার সুযোগ দেওয়ার আবেদন জানিয়েছেন। রাজনৈতিক মহল মনে করছে, গত বিধানসভা ভোটে তৃণমূলের পিছিয়ে থাকা তিন কেন্দ্রে বিজেপির তেমন প্রভাব ছিল না। তাছাড়া কংগ্রেস ও সিপিএমের মধ্যে জোট হওয়ায় ভোটাররা খানিক উৎসাহিত হয়ে জোটপ্রার্থীকে ভোট দিয়েছিলেন। কিন্তু, এবার সিপিএমের ছেড়ে আসা কর্মীদের বলে বিজেপি কিছুটা বলিয়ান হলেও এলাকায় বামেদের নিজস্ব একটা ভোটব্যাঙ্ক রয়েছে। বিজেপি ও সিপিএমের মধ্যে শাসক-বিরোধী ভোট ভাগাভাগির জেরে ওই তিন এলাকায় তৃণমূল এবার বাড়তি সুবিধা পাবে বলে ওয়াকিবহাল মহল মনে করছে। যদিও সিপিএম ও বিজেপি দুই দলের প্রার্থীরা নিজেদের জয় নিশ্চিত বলে দাবি করেছেন।
বিষ্ণুপুর লোকসভা কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী শ্যামল সাঁতরা বলেন, ২০১৬ সালের বিধানসভা ভোটে বড়জোড়া, বিষ্ণুপুর ও সোনামুখীর মানুষ একটা অশুভ জোটকে ভুল করে ভোট দিয়েছিলেন। সামান্য ব্যবধানে দলের প্রার্থীরা পিছিয়ে পড়েছিলেন। এবার এলাকার উন্নয়ন এবং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের একের পর এক প্রকল্পে মানুষ ব্যক্তিগত সুবিধা পাওয়ায় তাঁদের অধিকাংশই ফিরে এসেছেন। পাশাপাশি মুখ্যমন্ত্রী নিজে একাধিকবার এলাকায় সভা করেছেন। দলের অন্যান্য নেতারাও বারে বারে এসে সেকথা মনে করিয়ে দিয়েছেন। আমি নিজেও এলাকার মানুষের কাছে গিয়েছি। দারুণ সাড়া মিলেছে। এবার সিপিএমের কিছু ভোট ভাগ হয়ে বিজেপিতে পড়তে পারে। কিন্তু তাতে কিছু হবে না। মা মাটি মানুষেরই জয় হবে।
সিপিএমের প্রার্থী সুনীল খাঁ বলেন, তিন বছর আগে বিষ্ণুপুর, সোনামুখী ও বড়জোড়ায় যারা তৃণমূলকে ভোট দেননি, তারা এবারও দেবেন না। বরং তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব ও পঞ্চায়েত এলাকায় দুর্নীতির কারণে তাদের একটা বড়ে অংশ এবার ছিটকে বেরিয়ে আসবে। যার অধিকাংশই বামেদের প্রতি আস্থা রাখবে। বিজেপির মতো সাম্প্রদায়িক দলকে মানুষ ভোট দেবে না। সব মিলিয়ে ওই তিন কেন্দ্রে আমার জিত নিশ্চিত। বরং মার্জিন বাড়ানোটাই আমাদের লক্ষ্য।
অন্যদিকে, বিজেপি প্রার্থী সৌমিত্র খাঁ বলেন, তিনবছর আগে বড়জোড়া, বিষ্ণুপুর ও সোনামুখীর মানুষ তৃণমূলের বিরুদ্ধে একটা জোটকে ভোট দিয়েছিলেন। কিন্তু, তাঁরা বুঝেছেন তৃণমূলের দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য একমাত্র বিকল্প বিজেপি। তাই এবার ওই তিন এলাকায় তৃণমূল বিরোধী ভোট পদ্মফুলের বাক্সে পড়বে। তাই আমার জয় শুধু সময়ের অপেক্ষা।