বিদ্যার্থীদের উচ্চবিদ্যার ক্ষেত্রে মধ্যম ফল আশা করা যায়, প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার ক্ষেত্রে সাফল্য আসবে। ব্যবসাতে যুক্ত ... বিশদ
রবিবার মুম্বই থেকে ফেরার পর বারদুয়ারী কোয়ারেন্টাইন সেন্টারে আসার সময় থেকেই অসুস্থ ছিল পীযূষ। তাকে প্রথমে মশালদহ ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রে ভর্তি করা হয়। সেখানে তার প্রাথমিক চিকিৎসা করার পর মালদহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানেই সোমবার রাতে তার মৃত্যু হয়েছে। প্রসঙ্গত, দিন কয়েক আগেই পাশের হরিশ্চন্দ্রপুর-১ ব্লকের এক শ্রমিক রাজস্থান থেকে ফেরার পথে শ্রমিক স্পেশাল ট্রেনেই মারা যান। শ্রমিক স্পেশাল ট্রেনের সঙ্গে জেলার দুই বাসিন্দার পরপর মৃত্যুর ঘটনা ছড়িয়ে পড়ায় মালদহে ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। হরিশ্চন্দ্রপুর থানার আইসি সঞ্জয়কুমার দাস বলেন, হরিশ্চন্দ্রপুর-২ ব্লকের মনোহরপুর গ্রামের এক কিশোরের মৃত্যু হয়েছে মালদহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। বিষয়টি আমরা খতিয়ে দেখছি।
হরিশ্চন্দ্রপুর-২ ব্লকের বিডিও প্রীতম সাহা বলেন, পীযূষ দাস নামে ওই কিশোর কোয়ারেন্টাইন সেন্টারে এসেই অসুস্থ হয়ে পড়ে। সঙ্গে সঙ্গে তার চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়েছিল। পরে তার মৃত্যু হয়েছে বলে জানতে পারি।
হরিশ্চন্দ্রপুর-২ ব্লকের বিএমওএইচ সাগর বসাক বলেন, তার অসুস্থতার খবর জেনেই তাকে মশালদহ ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রে এনে চিকিৎসা করা হয়। সে বার বার বমি করছিল। অবস্থার অবনতি হলে তাকে মালদহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। তার পর সেখানেই সে মারা যায়। ঘটনাটি খুবই দুঃখজনক। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মনোহরপুর গ্রামের বাসিন্দা ১৫ বছর বয়সী পীযূষ মুম্বইতে পাইপ লাইনের কাজে শ্রমিক হিসেবে কাজ করত। লকডাউনের ফলে কাজ হারিয়ে অনাহারে তার দিন কাটছিল। শ্রমিক স্পেশাল ট্রেন চালু হলে গত সপ্তাহে সে বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দেয়। ট্রেনে যাত্রা করার সময় পীযূষ পর্যাপ্ত খাবার ও পানীয় জল পায়নি বলে অভিযোগ তার পরিবারের। ফলে ট্রেনেই অসুস্থ হয়ে পড়ে সে। তিনদিন অর্ধাহারে ট্রেন সফরের পর বাড়ি ফেরার পর তাকে বারদুয়ারী হাইস্কুলের কোয়ারেন্টাইন সেন্টারে রাখা হয়। পীযূষের মামা গাবলু দাস বলেন, আমার ভাগ্নে ছয় মাস আগে মুম্বইতে কাজ করতে যায়। তারপর সেখানে লকডাউনে আটকে যায়। আমরাই ওকে বাড়ি ফিরে আসতে বলি। শ্রমিক স্পেশাল ট্রেনে আসার সময় বিস্কুট, পাউরুটি খেয়ে কোনওরকমে ছিল সে। একে তো লম্বা যাত্রার ধকল, তার উপর অর্ধাহারে এই ক’দিন ট্রেন যাত্রা। বাড়িতে এসে অসুস্থ হয়ে পড়ে সে। ওর বাবা দীর্ঘদিন থেকে দিল্লিতে পরিযায়ী শ্রমিক হিসেবে কাজ করছেন। অভাবের সংসারে তা ভাগ্নেকেও কাজে যেতে হয়েছিল। খুবই দরিদ্র তার পরিবারকে প্রশাসনের পক্ষ থেকে আর্থিক সহায়তা প্রদান করা প্রয়োজন।
মৃত কিশোরের কাকা বচ্চন দাস বলেন, শুনেছি ওর লালারস নেওয়া হয়েছে। ময়নাতদন্তও করা এভাবে তার অকালমৃত্যু আমরা মেনে নিতে পারছি না।