মানসিক অস্থিরতার জন্য পঠন-পাঠনে আগ্রহ কমবে। কর্মপ্রার্থীদের যোগাযোগ থেকে উপকৃত হবেন। ব্যবসায় যুক্ত হলে শুভ। ... বিশদ
নিজে থেকে রাস্তায় কুড়িয়ে পাওয়া বা কিনে আনা দেশলাই বাক্স তো রয়েইছে বন্ধুবান্ধব বা আত্মীয়স্বজনরা কেউ বাইরে বেড়াতে গেলে তাঁর আবদার থাকে সেখানকার দেশলাই বাক্স এনে দেওয়ার। এনেও দেন সকলে। আর তা দিয়েই নিজের শিল্পসত্ত্বাকে রূপ দিচ্ছেন। অপূর্ব, দৃষ্টিনন্দন তাঁর সেই সৃষ্টি মালদহ হস্তশিল্প মেলায় প্রদর্শিত হয়েছে। প্রশংসাও কুড়িয়েছে। কাজ নিয়ে গর্বিত পরিবারও।
পুরাতন মালদহ বাণীভবন টাউন লাইব্রেরির গ্রন্থাগারিক সুবীরবাবু বলেন, খেয়ালের বশে দেশলাইয়ের মার্কা জমাতে শুরু করি ৪৭-৪৮ বছর বয়সে এসে। এখন বয়স ৫১। রাস্তার ধারে বা দোকানে দেশলাইয়ের কোনও নতুন মার্কা দেখলেই তা সংগ্রহ করতাম। নতুন মার্কা খুঁজতে খুঁজতে যে কতদূর চলে যেতাম কোনও হুঁশ থাকত না। কোনও ধূমপায়ীর হাতে বা পরিচিত কোনও বাড়িতে দেশলাইয়ের নতুন মার্কা দেখলেই সংগ্রহ করতে চাইতাম। কেউ দিতেন, কেউ দিতেন না। পরিচিত কেউ বাইরে বেড়াতে গেলে দেশলাইয়ের বাক্স আনতে বলতাম। এভাবে ধীরে ধীরে অনেক দেশলাই বাক্স জমে যায়। গুছিয়ে রেখে দিলে কেউ দেখত না। ২০১৭ সালে এগুলিকে দিয়ে শিল্প তৈরির ভাবনা মাথায় আসে। আর্ট পেপার, আঁঠা, কাঁচি কাজে লাগিয়ে নানা মনীষীর মডেল, ইন্ডিয়া গেট, ফিরোজ মিনার অনেক কিছু তৈরি করেছি। এটা আমার নেশা। যতদিন আছি সৃষ্টি করে যাব। বাড়িতে প্রথম দিকে বলত এত কী করছ? শুধু শুধু টাকা আর সময় নষ্ট! তাঁরাও এখন কাজ দেখে খুশি হয়। যখন সবাই ভালো বলে, আমি আরও উৎসাহিত হই।
তাঁর বাড়িতে গিয়ে দেখা গেল দেশলাইয়ের নানা উপকরণ দিয়ে তৈরি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, নেতাজি, বিদ্যাসাগরের মূর্তি, ইন্ডিয়া গেট, ফিরোজ মিনারের মিনিয়েচার মডেল। নিজের ড্রয়িং রুমে সারি সারি সাজানো রয়েছে সব। শুধু তাই নয়, সাইকেল, নৌকা, টেবিল, কম্পিউটার টেবিল, বসার সোফা সবই রয়েছে তাঁর সংগ্রহে।
সুবীরবাবু বলেন, ভবিষ্যতে স্বপ্ন রয়েছে মিউজিয়াম গড়ার। কিন্তু সরকারি সহায়তা ছাড়া আমার পক্ষে তা করা সম্ভব নয়। বিভিন্ন সময়ের, বিভিন্ন জায়গার, বিভিন্ন ধরনের দেশলাই বাক্স রয়েছে। হাজারের উপর তো বটেই। তাঁর স্ত্রী মধুলেখা সাহা বলেন, প্রথম দিকে ওর এই কাজ দেখে খুব বিরক্ত লাগত। পরে দেখলাম এটা ওর নেশা। এটা ছাড়া থাকতে পারবে না। আর জিনিসগুলি দেখতেও ভালো লাগছে। এখন ওর কাজে আমরা খুব খুশি ও গর্বিত। ওর স্বপ্ন পূরণ হোক।