কর্মপ্রার্থীদের কোনও চুক্তিবদ্ধ কাজে যুক্ত হবার যোগ আছে। ব্যবসা শুরু করা যেতে পারে। বিবাহের যোগাযোগ ... বিশদ
এদিকে এনআরসি আতঙ্কে আত্মহত্যার ঘটনাকে নিয়ে রাজনৈতিক মহলে চাপানউতোর শুরু হয়েছে। বিজেপির অভিযোগ, তৃণমূল কংগ্রেস এনআরসি নিয়ে মিথ্যা প্রচার করছে। যার জেরে মানুষের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়েছে। আত্মহত্যা পিছনে অন্য কারণ থাকলেও এনআরসি ইস্যু জুড়ে দেওয়া হচ্ছে। অন্যদিকে তৃণমূল কংগ্রেস এনআরসি আতঙ্ক ছড়ানোর পেছনে বিজেপি সরকারের দিকেই আঙুল তুলছে। তাঁদের অভিযোগ, বিজেপি তাদের কুকর্ম ঢাকতে মানুষকে মিথ্যাবাদী বানাতে চাইছে।
মৃতের ছেলে উত্তম দাস বলেন, বেশ কয়েকদিন ধরেই বাবার মানসিক অবস্থা ভালো ছিল না। এনআরসি চালু হবে এই আতঙ্কে ছিলেন তিনি। বাবার বহু সরকারি নথিতে তথ্যে ভুল ছিল। যা ঠিক করার জন্য বিভিন্ন দপ্তরে গিয়েছিলেন তিনি। স্থানীয় পঞ্চায়েত থেকে শুরু করে বিডিও অফিস সর্বত্র গিয়েও শেষ পর্যন্ত কাগজপত্র ঠিক করে আনতে পারেননি। গতকাল ব্যাঙ্কে গিয়ে আধার কার্ডের লিঙ্ক করাতে গিয়েও সমস্যায় পড়েন বাবা। তারপর থেকে মানসিক অবসাদ আরও বেশি চেপে বসে তাঁর মনে। আজ সকালে বাড়ির কিছুটা দূর থেকে বাবার মৃতদেহ ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পাওয়া যায়।
এবিষয়ে উত্তর দিনাজপুর জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি কানাইয়ালাল আগারওয়াল বলেন আমাদের মুখ্যমন্ত্রী বলে দিয়েছেন এনআরসি নিয়ে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। তবে সাধারণ মানুষের মধ্যে এনআরসি আতঙ্ক জাঁকিয়ে বসছে। সম্প্রতি কয়েকটি ঘটনা তার প্রমাণ। চাকুলিয়ায় এমন একটি ঘটনা হয়েছিল। এখানকার ঘটনাটা শুনলাম। এবিষয়ে খোঁজখবর নিয়ে ওই পরিবারের পাশে আমরা থাকব। এদিকে বিজেপির জেলা সাধারণ সম্পাদক বিশ্বজিৎ লাহিড়ি বলেন এনআরসি আতঙ্কে এখনও পর্যন্ত রাজ্যে কেউ মারা যাননি। আমরা খোঁজ নিয়ে দেখেছি বিভিন্ন জায়গায় যে ঘটনাগুলি ঘটেছে তার পেছনে এনআরসি নয় বরং অন্য কারণ রয়েছে। বারবার করে এই ধরনের ভুল প্রচার করছে তৃণমূল কংগ্রেস। ইচ্ছাকৃতভাবে মানুষকে ভয় দেখানোর চেষ্টা করছে তারা।
পেশায় কৃষক উদয়বাবু বেশ কিছুদিন ধরেই আতঙ্কিত ছিলেন বলেই অভিযোগ করছে তার পরিবার। তাদের দাবি বিভিন্ন কাগজপত্র যেমন রেশন কার্ড আধার কার্ড ভোটার আই কার্ডে তাঁর নামে ভুল ছিল। কোথাও উদয় চন্দ্র দাস কোথাও আবার উদয় চন্দ্র লেখা এসেছে। গ্রামবাসীদের মধ্যে এনআরসি নিয়ে আলোচনায় তিনি এবিষয়ে আরও বেশি আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। সম্প্রতি পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে বেশি কথা বলতেন না তিনি। বারবার কী হয়েছে জানতে চাইলেও তিনি বিশেষ কিছু বলতেন না। সরকারি নথিতে তথ্য ভুল থাকার ব্যাপারে মাঝেমধ্যে চিন্তার কথা জানিয়ে ছিলেন। সেসব ঠিক করতে প্রচুর জায়গায় ছোটাছুটি করেছেন। সোমবার অন্যান্য দিনের মতো রাতে খাওয়া দাওয়ার পর ঘুমাতে যান উদয়বাবু। ভোর বেলায় তাঁকে আর ঘরে পাওয়া যায় না। পরিবারের লোকেরা খুঁজতে বেরলে বাড়ি থেকে কিছুটা দূরে একটি গাছে ঝুলন্ত অবস্থায় উদয়বাবুর নিথর দেহ দেখতে পান। এরপর রায়গঞ্জ থানায় খবর দিলে দ্রুত এলাকায় পুলিস পৌঁছে মৃতদেহ উদ্ধার করে। এরপর ময়নাতদন্ত করা হয়। এই ঘটনা স্বাভাবিকভাবেই নরম কলোনি এলাকায় শোকের ছায়া নেমেছে। সম্প্রতি রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় এনআরসি আতঙ্কে আত্মহত্যার খবর সংবাদপত্রের শিরোনামে উঠেছে। এরপর এই ঘটনায় স্বাভাবিকভাবেই স্থানীয়দের মধ্যে আতঙ্কের সৃষ্টি হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে ময়দানে নেমেছে তৃণমূল ও বিজেপি।