কর্মপ্রার্থীরা বেশ কিছু সুযোগের সংবাদে আনন্দিত হবেন। বিদ্যার্থীরা পরিশ্রমের সুফল নিশ্চয় পাবে। ভুল সিদ্ধান্ত থেকে ... বিশদ
প্রকৃতি ভেদে গন্ধ ছড়ায় বসুন্ধরা। গভীর জঙ্গলে সবুজের গন্ধ এক ধরনের। রুক্ষ-শুষ্ক মরুভূমির আর এক। পাহাড়-পার্বত্য এলাকার ভিন্ন সুবাস। আবার সমুদ্র উপকূল, সমতল কিংবা মালভূমি অঞ্চলও গন্ধ দিয়ে যায় চেনা। তবে বৃষ্টির স্পর্শে মৃত্তিকা যে সেঁাদা-সুগন্ধি ছড়ায়, তার তুলনা বোধহয় খুব একটা নেই। পৃথিবীর সব দেশেই প্রায় সমান।
কিন্তু মহাশূন্যের গন্ধটা ঠিক কেমন? কটু, ঝাঁঝালো নাকি সব গন্ধের মিশেলে বিচিত্র? জানতে হলে পিছিয়ে যেতে হবে ২০০৮ সালে। ওই বছর নাসা যোগাযোগ করে রসায়নবিদ পিয়ার্সের সঙ্গে। তাঁকে বলা হয়, ল্যাবরেটরিতে বসে বানাতে হবে বিশেষ পারফিউম। শোঁকামাত্রই মহাকাশের অনুভূতি পাওয়া যাবে। নাসার উদ্দেশ্য ছিল একটাই—মহাশূন্যের গন্ধের সঙ্গে মহাকাশচারীদের সহজাত করে তোলা। রকেটে চড়ে পৃথিবীর বায়ুমণ্ডল ছাড়লেই এক ধরনের বিচিত্র গন্ধ নভশ্চরদের নাকে আসে। তার ঘ্রাণ নিতে অনেকের পক্ষে কষ্টকর হয়ে দাঁড়ায়। তাই আগেভাগে ওই গন্ধের সঙ্গে ধাতস্থ হয়ে গেলে খুব অসুবিধার মুখোমুখি হতে হবে না নভশ্চরদের।
নাসা’র অনুরোধ ফেরাননি পিয়ার্স। এরপর বছর চারেকের অক্লান্ত পরিশ্রম। মহাকাশের গন্ধের নিখুঁত রেপ্লিকা তৈরি করা চাই! আর এর জন্য একদিকে পিয়ার্স বুঁদ রইলেন গবেষণাগারে। অন্যদিকে, নভশ্চরদের সঙ্গে কথা বলতে শুরু করলেন তিনি। তাঁদের অভিজ্ঞতা লিখে রাখলেন ডায়েরিতে। নভশ্চরদের মধ্যে কেউ পিয়ার্সকে জানিয়েছেন, মহাকাশের গন্ধ অনেকটা গানপাউডার, পোড়া মাংস, রাসবেরি ও রাম-এর মিশ্রণ। আবার কেউ কেউ ব্যাখ্যার সুরে তাঁকে বলেছেন, গন্ধটা মূলত কষাটে কার্তুজ পোড়া গন্ধ। অর্থাৎ, গুলি ছোঁড়ার ঠিক পরের মুহূর্তে যে পোড়া পোড়া গন্ধ নাকে আসে, ঠিক তেমনই। সব অভিজ্ঞতার নির্যাসের সঙ্গে মেধার মিশ্রণ ঘটিয়ে পিয়ার্স তৈরি করে ফেললেন ‘মহাকাশ-পারফিউম’।
কিন্তু এমন মহার্ঘ বস্তুকে কি আর ‘ল্যাব-বন্দি’ করে রাখা চলে? রাখতে চায়ওনি নাসা। নভশ্চরদের প্রশিক্ষণের গণ্ডি ছাড়িয়ে মহাকাশের গন্ধকে সাধারণের মধ্যে ছড়িয়ে দিতে চেয়েছে তারা। শুরু করতে চলেছে বিপণনও। সাড়াও মিলছে ভালো। এমনটাই জানিয়েছেন প্রোডাক্ট ম্যানেজার ম্যাট রিচমন্ড। নাসার তরফেও জানানো হয়েছে, এতদিন নভশ্চররা মহাকর্ষ বলের গণ্ডি পেরনোর পর অদ্ভুত এক গন্ধ পেতেন। সেটাই এবার আমজনতা ঘরে বসেই উপভোগ করতে পারবেন। অতঃপর, চোখের দেখা না হোক ঘ্রাণেই কল্পনার মহাকাশ ধরা থাক ড্রেসিংরুমে।