উচ্চবিদ্যার ক্ষেত্রে বাধার মধ্য দিয়ে অগ্রসর হতে হবে। কর্মপ্রার্থীদের ক্ষেত্রে শুভ যোগ। ব্যবসায় যুক্ত হলে ... বিশদ
রবিবার মোদিকে ফোন করে দু’দেশের সার্বিক উন্নয়নে একসঙ্গে কাজ করার আহ্বান রেখেছিলেন ইমরান। আঞ্চলিক শান্তি স্থাপনেও মোদির কাছে আর্জি ছিল তাঁর। ইমরানের সেই আহ্বানকে গ্রহণ করে মোদিও পাল্টা জানিয়ে দিয়েছেন, শান্তি আলোচনার জন্য প্রয়োজন সন্ত্রাসমুক্ত পরিবেশ ও একে অপরের উপর বিশ্বাস। কারণ, সন্ত্রাস কিংবা অবিশ্বাসের আবহে শান্তি আলোচনা কিংবা উন্নয়নের কাজ সফল হয় না। সন্ত্রাসমুক্ত পরিবেশ তৈরি হলে দু’দেশের দারিদ্র দূরীকরণ থেকে, সার্বিক বিকাশে যৌথ উদ্যোগে কাজ করতে ভারতের আপত্তি নেই বলেও ইমরানকে আশ্বস্ত করেছেন মোদি। কারণ, পড়শি রাষ্ট্রের পাশে দাঁড়ানোই মোদি সরকারের অগ্রাধিকারের তালিকায়। এমনটাই জানানো হয়েছে বিদেশ মন্ত্রকের তরফে। এদিন পাকিস্তানের বিদেশমন্ত্রকও জানিয়েছেন, ভারতের প্রধানমন্ত্রীকে শুভেচ্ছা জানিয়ে ফোন করেছিলেন ইমরান। দু’ দেশের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের উন্নয়নে উভয়ের কথাবার্তা হয়েছে। পাকিস্তানের বিদেশমন্ত্রী শাহ মেহেমুদ কুরেশিও জানিয়ে দিয়েছেন, ভারতের নতুন সরকারের সঙ্গে আলোচনার জন্য মুখিয়ে রয়েছে ইসলামাবাদ। কুরেশিকে উদ্ধৃত করে পাকিস্তান রেডিও জানিয়েছে, ভারতের সঙ্গে সমস্তরকম বকেয়া বিবাদ মেটাতে ইসলামাবাদ আগ্রহী।
এদিন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ছাড়াও মোদিকে ফোন করেন মালদ্বীপের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট মহম্মদ নাসিদ ও নেপালের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মাধব নেপাল। সকলেই মোদিকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। বিদেশমন্ত্রক সূত্রে খবর, এদিন প্রধানমন্ত্রীকে শুভেচ্ছা জানাতে ফোন করেছিলেন ইমরান। মোদিও পাল্টা ধন্যবাদ জানিয়েছেন ইমরানকে। উভয়ের মধ্যে দীর্ঘক্ষণ কথাবার্তা হয়। তাঁদের মধ্যে আঞ্চলিকস্তরে শান্তি স্থাপন থেকে শুরু করে একাধিক বিষয়ে কথা হয়। দু’দেশের মানুষের সার্বিক উন্নয়নে যৌথ উদ্যোগে কাজ করার ইচ্ছা প্রকাশ করেন ইমরান। এর আগে পাক প্রধানমন্ত্রীকে দারিদ্র দূরীকরণের উপর জোর দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছিলেন মোদি। এদিন ফোনে সেই কথা ইমরানকে স্মরণ করিয়ে দিয়ে মোদি জানিয়ে দিয়েছেন, পড়শি দেশের সঙ্গে সুসম্পর্ক গড়ে তুলতে ভারত বরবরাই আগ্রহী। এবং এটাই সরকারের নীতিগত অবস্থান। তবে তার আগে উভয় দেশের বিশ্বাসের বাতাবরণ তৈরি করতে হবে। গড়ে তুলতে হবে সন্ত্রাসমুক্ত পরিবেশ।
পাকিস্তানের মসনদে বসেই ভারতের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক এগিয়ে নিয়ে যেতে চেয়েছিলেন ইমরান। তিনি বলেছিলেন, ‘ভারত এক হাত বাড়িয়ে দিলে আমি দু’হাত বাড়িয়ে দেব।’ কিন্তু তারপরও জম্মু ও কাশ্মীরে পুলওয়ামা জঙ্গি হামলা হয়েছে। মারা গিয়েছেন ৪০জন সিআরপিএফ জওয়ান। এই হামলার নেপথ্যে রয়েছে পাক মদতপুষ্ট জঙ্গি সংগঠন জয়েশ-ই-মহম্মদ। পুলওয়ামার পর দুই পড়শি দেশের সম্পর্ক একেবারে তলানিতে এসে ঠেকে। এমনকী পাকিস্তানকে আন্তর্জাতিকস্তরে একঘরে করতে উঠে পড়ে লাগে মোদি সরকার। সেই চেষ্টায় সফলও হয়েছে ভারত। ভোট প্রক্রিয়ার মধ্যেই জয়েশ মাথা হাফিজ সঈদকে আন্তর্জাতিক জঙ্গি হিসেবে ঘোষণা করে রাষ্ট্রসঙ্ঘ। তাতে পাকিস্তানের স্নায়ুর চাপ আরও বাড়ে।
কূটনৈতিক বিশেষজ্ঞদের একটা বড় অংশ মনে করছে, আন্তর্জাতিকস্তরে কোণঠাসা অবস্থা থেকে ঘুরে দাঁড়াতেই ইমরান থেকে কুরেশি এখন উঠে পড়ে লেগেছেন। সেক্ষেত্রে ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক সহজ না করলে যে পরিস্থিতির তেমন কোনও বদল হবে না, তা বিলক্ষণ বুঝতে পারছে ইসলামাবাদ। তাই দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক উন্নয়নেও ইতিমধ্যেই প্রক্রিয়া শুরু করে দিয়েছেন ইমরান। গত সপ্তাহে দিল্লিতে নতুন রাষ্ট্রদূতও নিয়োগের ফাইলে সই করেছেন তিনি। এদিন মোদির সঙ্গে ফোনে কথা বলে সেই প্রক্রিয়াকে আরও এগিয়ে নিয়ে গেলেন বলে মনে করা হচ্ছে। পাকিস্তানের বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র মহম্মদ ফয়জল এক ট্যুইটবার্তায় বলেছেন, ‘দক্ষিণ এশিয়ার অগ্রগতিতে ভারত-পাকিস্তানকে অগ্রণী ভূমিকা নিতে হবে। দু’দেশের মানুষের উন্নয়নের স্বার্থে একসঙ্গে কাজ করতে হবে। ভারতের প্রধানমন্ত্রীকে ফোনে এটাই বলেছেন ইমরান।’ এর আগেও পাক প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন, ‘মোদির দল ক্ষমতায় এলে শান্তি আলোচনায় গতি আসবে। কাশ্মীর সমস্যা মেটানোর সুযোগ বাড়বে।’