ইসলামাবাদ: ক্ষমতায় আসার পরই বেশ ঘটা করেই শুরু করেছিলেন তেল সম্পদের খোঁজ। গত মার্চেই ইমরান খান ঘোষণা করেছিলেন যে, পাকিস্তানকে আর তেল আমদানি করতে হবে না। কারণ, করাচি উপকূলের কাছেই গভীর সমুদ্রে তেলের সন্ধান পাওয়া গিয়েছে। পাকিস্তানের অর্থনৈতিক দৈন্যদশা কাটাতে এই পদক্ষেপকে অনেকেই প্রধানমন্ত্রীর ইমরান খানের মাস্টারস্ট্রোক বলতেন। তা আর সাফল্যের মুখ দেখল না। উপকূলে তেল ও প্রাকৃতিক গ্যাসের ভান্ডারের সন্ধান পেল না পাকিস্তান। পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যম ট্রিবিউন ডটকম জানিয়েছে, করাচি উপকূলে আরব সাগরে তেল ও গ্যাসের অনুসন্ধানে চার মাস আগে খননকাজ শুরু হয়। ইতালির ইএনআই, মার্কিন তেল উৎপাদন সংস্থা এক্সন মোবিল, পাকিস্তানের রাষ্ট্রীয় কোম্পানি গ্যাস ডেভেলপমেন্ট কোম্পানি লিমিটেড (ওজিডিসিএল) এবং পাকিস্তান পেট্রোলিয়াম (পিপিএল) একসঙ্গে খনন কাজ শুরু করে। ২৫ শতাংশ করে ভাগে নিয়ে চার কোম্পানি খননকাজ করলেও কিছুই খুঁজে পায়নি। সরকারি এক উচ্চপদস্থ কর্তা ট্রিবিউনকে বলেছেন, সাড়ে পাঁচ হাজারের বেশি মিটার খনন করেও কোনও জ্বালানির সন্ধান মেলেনি। তিনি বলেন, এখানে ১০ বছর আগে নেদারল্যান্ডসের কোম্পানি সেলও খননকাজ করেছিল। তারাও কিছু খুঁজে পায়নি। অথচ, করাচি উপকূলে আরব সাগরে তেল, গ্যাসসহ প্রাকৃতিক জ্বালানি খুঁজে পাওয়ার ব্যাপারে আশাবাদী ছিলেন ইমরান খান। ওই তেল ও গ্যাসের উপর নির্ভর করেই চরম আর্থিক দুরবস্থা থেকে দেশকে বের করে আনার স্বপ্ন দেখেছিলেন তিনি। সেদিক থেকে তাঁর জন্য বড় দুঃসংবাদ তো বটেই। তেল বা গ্যাসভাণ্ডারের সন্ধান না মেলায় করাচির কাছে গভীর সমুদ্রে খননকাজ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রীর পেট্রোলিয়ামবিষয়ক বিশেষ উপদেষ্টা নাদিম বাবর। তিনি সংবাদমাধ্যমকে জানান, পরিত্যক্ত এই খনন প্রকল্পের জন্য ১০ কোটি মার্কিন ডলারের বেশি খরচ হয়েছে। প্রায় ভেঙে পড়েছে পাকিস্তানের অর্থনীতি। চীন, সৌদি আরবের কাছে হাত পাততে হয়েছে ইমরান খানকে। তবুও শেষ রক্ষা হয়নি। আগের সরকারের সমালোচনা করলেও আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) কাছ থেকে বিপুল ঋণ নিচ্ছেন ইমরান খান। আপাতত পাকিস্তানকে ৬০০ কোটি মার্কিন ডলার ঋণ দিচ্ছে আইএমএফ। বিশেষজ্ঞদের মতে, আইএমএফ থেকে ঋণ নিলেও সমস্যা মিটবে না। কারণ পাকিস্তানের রাজস্ব ঘাটতি বেড়েই চলেছে।