উচ্চতর বিদ্যায় সফলতা আসবে। সরকারি ক্ষেত্রে কর্মলাভের সম্ভাবনা। প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় সাফল্য আসবে। প্রেম-প্রণয়ে মানসিক অস্থিরতা ... বিশদ
জুন মাসে প্রথম দিকে এনআইএর দপ্তরে ফোন করে মুম্বই হামলার মতো আবার দেশে জঙ্গিহানা হতে চলেছে বলে হুমকি দেওয়া হয়। ওই ফোনের সূত্র ধরে তদন্তে নেমে গোয়েন্দারা জানতে পারেন, ওই ফোনটি যে করেছিল, সে রানাঘাটের বাসিন্দা। এরপরই রাজ্য পুলিসের তরফে ওই যুবকের খোঁজ শুরু হয়। তদন্তকারীরা প্রকাশের বাড়ি যেতেই পরিবারের লোকজন আকাশ থেকে পড়েন। কারণ তার বৃদ্ধ বাবা-মা ছেলের এই কীর্তি টের পাননি।
যুবকের মা জ্যোতিকা সরকার বলেন, স্বামী আগে ঝাড়খণ্ডে কয়লা উত্তলনকারী একটি কোম্পানিতে কাজ করত। স্বামীর অবসরের পর ছোট ছেলেকে নিয়ে রানাঘাটের বাড়িতে ফিরে আসি। বড় ছেলে এখনও ঝাড়খণ্ডেই থাকে। ছোট ছেলে ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের ছাত্র। তবে, বছর তিনেক ধরে সে মানসিক রোগে ভুগছে। সাইকিয়াট্রিস্টের পরামর্শমতো ছেলের চিকিৎসা চলছে। তবে ছেলে যে এমন কাণ্ড ঘটাবে, তা ভাবতেই পারিনি। বাড়িতে পুলিস এসেছিল। আমরা তাদের বিষয়টি জানিয়েছি। ছেলের চিকিৎসার সমস্ত কাগজপত্র অফিসারদের দিয়েছি।
প্রকাশের পরিবার ও পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, বাবার অবসরের পর সে পড়াশোনার পাশাপাশি ছোট একটা ব্যবসা শুরু করেছিল। কিন্তু ব্যবসায় লোকসান হয়। নতুন এলাকায় বন্ধুও ছিল না। ফলে মানসিক অবসাদে ভুগতে থাকে। তবে ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের ছাত্র হওয়ায় কম্পিউটার, অ্যান্ড্রয়েড মোবাইল, ইন্টারনেটে সে পারদর্শী। গুললে সার্চ করে সে একাধিক দপ্তরের ফোন নম্বর জোগাড় করেছিল।
সেই সব ফোন জোগাড় করে প্রকাশ জানিয়েছিল, আবার ২৬/১১-র মতো হামলা হবে। নাশকতা চালাতে ব্যবহার করা হবে আইইডির মত উচ্চক্ষমতা সম্পন্ন বিস্ফোরক। ইতিমধ্যেই আইআইডি তৈরির উপকরণ, আগ্নেয়াস্ত্র, বুলেট ইত্যাদি চোরাপথে বাংলাদেশ ও নেপাল থেকে ঢুকে গিয়েছে দেশের জঙ্গি গোষ্ঠীর স্লিপার সেলের হাতে। পাশাপাশি সে ফোনে এও বলেছিল, পাকিস্তানের জঙ্গি সংগঠন এই পরিকল্পনা করছে। তাই ওই ফোন কল নিয়ে কেন্দ্র ও রাজ্যের গোয়েন্দাদের কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়ে। সতর্ক করা হয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীকেও। শেষমেষ ফোনের রহস্য ভেদ হতে হাঁফ ছেড়ে বাঁচেন তদন্তকারীরা।
প্রকাশ মানসিকভাবে অসুস্থ থাকায় তার বিরুদ্ধে এখনই আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না। তবে এব্যাপারে যুবকের পরিবারকে সতর্ক করা হয়েছে বলে পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে।