নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: মহাজোট হচ্ছে, তবে আসনের ভাগ বাঁটোয়ারা নিয়ে এখনও কিছু আলোচনা বাকি। শনিবার রাতে হুগলির বৈদ্যবাটিতে সিপিএমের এরিয়া কমিটির অফিসে বাম, কংগ্রেস এবং আইএসএফ-এর ত্রিপাক্ষিক বৈঠকের নির্যাস এটাই। বৈঠকের পর বামেদের তরফে মহম্মদ সেলিম, কংগ্রেসের প্রদীপ ভট্টাচার্য, আবদুল মান্নান এবং আইএসএফ-এর তরফে নৌসাদ সিদ্দিকি যৌথভাবে সাংবাদিক সম্মেলন করে এমন বার্তাই দিয়েছেন। তিনপক্ষের নেতারই দাবি, অত্যন্ত সৌহার্দপূর্ণ পরিবেশে বৈঠক হয়েছে। ২৯৪টি কেন্দ্র ধরে ধরে আলোচনা চলছে। তাই সময়ও লাগছে বেশি। মহম্মদ সেলিম স্পষ্ট করে বলেছেন, কে কোন আসনে লড়বে, তার চেয়েও বেশি গুরুত্ব দিয়ে ভাবা হচ্ছে কে কোন আসন জিতবে। এদিন সেলিম আরও বলেন, দক্ষিণবঙ্গে আসন ভাগাভাগি প্রায় চূড়ান্ত হয়ে গিয়েছে। রাজ্যের বাকি জেলাগুলির ক্ষেত্রেও শীঘ্রই ঐকমত্যে পৌঁছে যৌথ সাংবাদিক সম্মেলন করে সবটাই স্পষ্ট করে দেওয়া হবে। এই কথায় সমর্থন দিয়েছেন আইএসএফ নেতা নৌসাদও। তিনি বলেন, উত্তরবঙ্গের ব্যাপারেও আমরা আশা করছি, একটা সুষ্ঠু সমাধানে পৌঁছাতে পারব। এই মহাজোটই আগামীদিনে উন্নত বাংলা গড়ে তুলতে পারবে বলে দাবি করেন তিনি। কংগ্রেসের তরফে প্রদীপবাবু বলেন, তৃণমূলস্তরের নেতাকর্মীদের কথা মাথায় রেখে প্রদেশ সভাপতি, দিল্লিতে কংগ্রেসের হাইকম্যান্ডের সঙ্গে আলোচনা করে আমরা এগচ্ছি। তাই ঐকমত্যে পৌঁছতে একটু সময় লাগছে। তার মানে এই নয় যে জোটপ্রক্রিয়া ভেস্তে গেল।
সূত্রের খবর, দক্ষিণবঙ্গে পাঁচটি আসন কংগ্রেস আইএসএফ-কে ছাড়তে রাজি হয়েছে এদিন। আরও তিন-চারটি আসন ছাড়ার ব্যাপারে আলোচনা চলছে। তবে মালদহ, মুর্শিদাবাদ সহ উত্তরবঙ্গের জেলাগুলিতে কংগ্রেস আব্বাস সিদ্দিকির দলকে আসন ছাড়ার ব্যাপারে যে অবস্থানে ছিল, সেখান থেকে খুব একটা সরে আসেনি বলেই জানা গিয়েছে। এর মধ্যে গত বিধানসভা নির্বাচনে কংগ্রেসের জেতা আসনগুলির দাবি শর্তসাপেক্ষে আইএসএফ দাবি না করলেও তাদের চাহিদা কংগ্রেস কতটা পূরণ করবে, তা নিয়ে যথেষ্ট ধন্দ রয়েছে। ফলে জোট প্রক্রিয়া খুব মসৃণ হবে বলে এখনই মনে করা ঠিক হবে না বলে ধারণা রাজনৈতিক মহলের। আবার এদিন তিন পক্ষের নেতারাই জোটের প্রয়োজনীয়তার কথা যেভাবে উল্লেখ করেছেন বারবার, তাতে সব বাধা কাটিয়ে তিনদলের মহাজোট হতেই পারে বলে মনে করছেন অনেকে। জানা গিয়েছে, ইতিমধ্যে বামেরা গোটা ২৫ আসন আব্বাসদের জন্য বরাদ্দ করায় আইএসএফ বেজায় সন্তোষ ব্যক্ত করেছে। কিন্তু ঠিক তার উল্টো প্রতিক্রিয়া তৈরি হয় তাদের জন্য কংগ্রেসের আসন ছাড়া নিয়ে। এদিন মূলত সেই জট কাটানোর চেষ্টা হয় বৈঠকে।