কোনও কিছুতে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে ভাববেন। শত্রুতার অবসান হবে। গুরুজনদের কথা মানা দরকার। প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় সুফল ... বিশদ
দ্বিতীয় দিনের শুরুতে অভিষেক লাহিড়ী শ্রুতিমধুর সরোদে রাগ জৌনপুরী পরিবেশন করেন তবলিয়া ঈশান ঘোষকে সঙ্গে নিয়ে। কলকাতার উমা মেমোরিয়াল কলায়লাম কথাকলি নৃত্য উপস্থাপন করেন। প্রবীণ সন্তুর বাদক সতীশ ব্যাস অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়কে সঙ্গে নিয়ে মধুমন্তী ও কিরওয়ানি রাগ পরিবেশন করেন। আগ্রা ঘরানার কণ্ঠ শিল্পী ভারতী প্রতাপের রাগ ‘শ্রী’ ও পরে আনন্দী কল্যাণের বন্দিশ অনবদ্য। শেষে মীরার ভজন এদিনের সমগ্র অনুষ্ঠানের সেরা প্রাপ্তি। সমর সাহার পরিমিত ও বুদ্ধিদীপ্ত সঙ্গত মনে রেখাপাত করে।
ইন্দ্রজিৎ বসু তৃতীয় দিনের শুরুতে বাঁশিতে পটদীপ রাগের যথাযথ রূপ ফুটিয়ে তোলেন। সঙ্গে যোগ্য তবলা সঙ্গত উজ্জ্বল ভারতীর। ওমকার দাদরকার স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গিমায় প্রথমে মাড়োয়া ও পরে উপভোগ্য তিলক কামোদ গেয়ে শোনান। মিতা নাগ সেতারে ললিতা গৌরী রাগে সুরেলা আলাপ, জোড় ও ঝালার পর মধ্যলয় পূর্বী এবং পুরিয়া কল্যাণ রাগে দ্রুত বন্দিশ বাজিয়ে শোনান। শুভেন চট্টোপাধ্যায়ের বুদ্ধিদীপ্ত তবলা সঙ্গত প্রশংসার দাবি রাখে। জয়তীর্থ মেভুন্দি পরিবেশন করেন প্রথমে রাগ শুদ্ধকল্যাণ ও পরে বসন্ত। বিস্তারের পর বৈচিত্র্যময় তান শ্রোতাদের আবিষ্ট করে রাখে। অমিত চট্টোপাধ্যায় তবলায় যোগ্য সহযোগিতা করেন। আমন আলি বাঙ্গাশ সরোদে প্রথমে সরস্বতী রাগে একটি একতাল গৎ এবং পরে মন্দ্র ও মধ্য সপ্তকে ললিত গৌরী রাগ পরিবেশনায় মুন্সিয়ানার পরিচয় দেন। শিল্পীর শেষ নিবেদন ছিল রাগ মালকোষ। শুভঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়ের তবলার সঙ্গে দুরূহ তানকারী, তেহাই উপভোগ্য ছিল। যদিও মালকোষ রাগের পরিবেশনের সময় নির্বাচন প্রশ্নের ঊর্ধ্বে নয়।
সম্মেলনের শেষ দিনে কণ্ঠশিল্পী অত্রি কোটাল ভীমপলশ্রী রাগে অপরাহ্নের বিষণ্ণতায় তিনতাল ও একতালে দু’খানি বন্দিশ গেয়ে শোনান। বিভাস সাংঘাই শিল্পীকে তবলায় নির্ভরতা দেন। পটদীপ রাগে নন্দিনী সরকার ও দেবপ্রিয়া চট্টোপাধ্যায় রণদীভের বেহালা ও বাঁশির সুরেলা যুগলবন্দির সঙ্গে সন্দীপ ঘোষের সার্থক সঙ্গত প্রশংসনীয়। তন্ময় বসু (তবলা), সতীশ পাত্রী (মৃদঙ্গম ) ও গিরিধর উদুপার (ঘটম)-এর মিলিত তালবাদ্য শ্রোতাদের মাতিয়ে রাখে। ইমদাদখানি বাজের প্রতিভূ অনুপমা ভাগবত সেতারে ঝিঁঝোটি রাগে আলাপ জোড়ের পর মধ্য লয় ও দ্রুত তিনতালে দু’খানি গৎ বাজিয়ে শোনান। শিল্পীর মীড়ের কাজ, একহারা তান গুণীজনের কাছে প্রশংসিত হয়। রশিদ খান সাহেবের সুযোগ্য প্রতিশ্রুতিমান পুত্র আরমান খান পুরিয়া রাগে চমৎকার একটি খেয়াল গেয়ে শোনান। পরিশেষে রশিদ খান তাঁর অসামান্য কণ্ঠমাধুর্যে পর্যায়ক্রমে রাগ যোগ, নায়কী কানাড়া, জনসম্মোহনী, সোহিনী, বহুশ্রুত ‘ইয়াদ পিয়া কি আয়ে’ ও ভৈরবী গেয়ে সম্মেলনের মধুর পরিসমাপ্তি করেন। অসামান্য মীড়ের কাজ, বোলতান, সপাট ও ছুট তানে সাজানো ছিল তাঁর নিবেদন। কথায় আছে যা ধরেন তাই সোনা। এদিন রশিদ খান সম্পর্কে এই বিশেষণ যোগ করলে এতটুকু অত্যুক্তি হবে না। শিল্পী শুভঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়ের তবলা অনুষ্ঠানটিকে অন্যমাত্রায় নিয়ে যায়। সমগ্র অধিবেশনকে সমৃদ্ধ করে হারমোনিয়ামে হিরণ্ময় মিত্র, সনাতন গোস্বামী, গৌরব চট্টোপাধ্যায়, বিনয় মিশ্র, প্রদীপ পালিত ও রূপশ্রী ভট্টাচার্যের সঙ্গত, সারেঙ্গিতে মুরাদ আলি, সারওয়ার হোসেনের সহযোগিতা।
—অমিত চক্রবর্তী ছবি: অভিজিৎ সেন