ব্যবসাসূত্রে উপার্জন বৃদ্ধি। বিদ্যায় মানসিক চঞ্চলতা বাধার কারণ হতে পারে। গুরুজনদের শরীর-স্বাস্থ্য নিয়ে সচেতন থাকা ... বিশদ
পেঁয়াজ সংরক্ষণের উন্নত ব্যবস্থা হলে চাষিদের পাশাপাশি সাধারণ ক্রেতারাও লাভবান হবেন। গত কয়েক বছরে রাজ্যে পেঁয়াজ উৎপাদন অনেকটাই বেড়েছে। গত বছর প্রায় পাঁচ লক্ষ টন উৎপাদন হয়েছিল। এবার পেঁয়াজের চড়া দামে উৎসাহিত হয়ে চাষিরা আরও বেশি জমিতে চাষ করায় উৎপাদন বাড়বে বলে মনে করা হচ্ছে। কিন্তু রাজ্যে পেঁয়াজ সংরক্ষণের পর্যাপ্ত ব্যবস্থা না থাকায় বছরের বেশ কয়েকটি মাস ভিন রাজ্য, বিশেষ করে মহারাষ্ট্রের উপর নির্ভর করে থাকতে হয়। পুজোর পর থেকে বাজারে পেঁয়াজের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধির সময় রাজ্যে উৎপাদিত পেঁয়াজ অবশিষ্ট ছিল না। তখন পুরোপুরি মহারাষ্ট্রের উপর নির্ভরশীল থাকতে হয়েছে রাজ্যকে। সেখান থেকে পাঠানো পেঁয়াজ দেড়শো টাকা কেজির বেশি দরে কিছু সময় বিক্রি হয়েছে। রাজ্যের ভাণ্ডারে পেঁয়াজ মজুত থাকলে বাজার এতটা চড়া হতে পারত না বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করেন।
নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রীর দামের উপর নজরদারির জন্য গঠিত টাস্ক ফোর্সের সদস্য কমল দে জানিয়েছেন, রাজ্যে বর্ষাকালে পেঁয়াজ চাষ কম হয়। মূল চাষ শুরু হয় অক্টোবর-নভেম্বর মাস নাগাদ। ফসল বেশি পরিমাণে উঠতে শুরু করে ফেব্রুয়ারি-মার্চ মাসে। রাজ্যে যে পেঁয়াজ উৎপাদন হয়, তা এখন মোটামুটি জুলাই-আগস্ট পর্যন্ত বাজারের চাহিদা মিটিয়ে দেয়। সংরক্ষণের ভালো ব্যবস্থা হলে এখন যা উৎপাদন হয়, তাতেই আরও কয়েক মাস রাজ্যের নিজস্ব চাহিদা মেটানো সম্ভব। সংরক্ষণের পর্যাপ্ত ব্যবস্থা না থাকায় চাষিদের একটা বড় অংশ পেঁয়াজের ন্যায্য দাম পান না। চার-পাঁচ টাকা কেজি দরেও চাষিদের পেঁয়াজ বিক্রি করতে হয় অনেক সময়। সংরক্ষণের ব্যবস্থা থাকলে চাষিরাও বেশি দাম পাবেন। এতে আরও বেশি জমিতে এর চাষ করায় উৎসাহ পাবেন।
এখন মহারাষ্ট্র সহ দেশের সব রাজ্যেই বাঁশ-খড়ের কাঠামো তৈরি করে সেখানেই বেশিরভাগ পেঁয়াজ সংরক্ষণ করা হয়। পশ্চিমবঙ্গেও এই ধরনের সংরক্ষণের পরিকাঠমো কিছু তৈরি হয়েছে। সরকারি ভর্তুকি দেওয়ার ব্যবস্থা থাকলেও পর্যাপ্ত সংরক্ষণ পরিকাঠামো তৈরি হয়নি। কিন্তু বাঁশ-খড়ের ওই ব্যবস্থায় সংরক্ষণ করা পেঁয়াজের বেশ কিছুটা নষ্ট হয়ে যায়। প্রাকৃতিক দুর্যোগ হলে ক্ষতির মাত্রা বাড়ে। কয়েকটি রাজ্যে বেসরকারি উদ্যোগে হিমঘরে পেঁয়াজ সংরক্ষণ করা হচ্ছে। তবে তা কম। রাজ্যে কিছু বহুমুখী হিমঘরে পেঁয়াজ রাখা হয়। কিন্তু তার পরিমাণও খুবই কম। কেন্দ্রীয় সরকারি সংস্থা ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অব এগ্রিকালচার রিসার্চ পেঁয়াজ সংরক্ষণের আধুনিক সংরক্ষণাগারের মডেল তৈরি করেছে। তার পেটেন্ট নেওয়া হলেও এখনও বাণিজ্যিকভাবে ব্যবহার হচ্ছে না। এতে হিমঘরের তুলনায় সংরক্ষণের খরচ অনেক কম পড়বে বলে বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন।
পেঁয়াজের দাম মাত্রা ছড়ানোর জন্য এদিনের অনুষ্ঠানে কেন্দ্রীয় সরকারের ভূমিকাকেই দায়ী করেন মুখ্যমন্ত্রীর কৃষি উপদেষ্টা। তিনি জানান, জুন মাস নাগাদ কেন্দ্রীয় সরকারের সংস্থার কাছ থেকে ৩০ টাকা কেজি দরে পেঁয়াজ কেনার বুকিং করা হয়েছিল। মোট দুশো টন পেঁয়াজ তাদের দেওয়ার কথা। কিন্তু সেটা দেওয়া হয়নি। ফলে রাজ্য সরকারকে খোলা বাজার থেকে পেঁয়াজ কিনে ভর্তুকি দিয়ে ৫৯ টাকা কেজিতে বিক্রি করতে হয়। এখন দাম কমার পর কেন্দ্র জোর করে পেঁয়াজ চাপিয়ে দিচ্ছে।