বিদ্যার্থীদের বেশি শ্রম দিয়ে পঠন-পাঠন করা দরকার। কোনও সংস্থায় যুক্ত হলে বিদ্যায় বিস্তৃতি ঘটবে। কর্মপ্রার্থীরা ... বিশদ
লট এইট থেকে লঞ্চে মুড়িগঙ্গা পেরিয়ে কচুবেড়িয়ায় পা রাখলেই পরিবেশ সচেতনতা এবং পরিচ্ছন্নতার বিষয়টি বেশ নজর কাড়ছে। মুড়িগঙ্গা থেকে কপিল মুনি আশ্রম পর্যন্ত ৩০ কিলোমিটার চার লেনের দারুন সুন্দর রাস্তা করা হয়েছে। রাস্তার বুলেভার্ডে ও ধারে প্রচুর গাছ রোপণ করা হয়েছে। বাহারি ফুল, ফলের বাগান করা হয়েছে। ছ’হাজার গাছ লাগানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় বিধায়ক তথা গঙ্গাসাগর বকখালি উন্নয়ন পর্ষদের চেয়ারম্যান বঙ্কিম হাজরা। তিনি বলেন, গঙ্গাসাগরকে পরিচ্ছন্ন রাখাটাই আমাদের অন্যতম লক্ষ্য। ইকো ফ্রেন্ডলি অর্থাৎ পরিবেশবান্ধব মেলা করার জন্য সবরকম প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। এর জন্য উন্নয়ন পর্ষদের পক্ষ থেকে ইতিমধ্যে আড়াই লক্ষ কাগজ, চট ও কাপড়ের ব্যাগ দেওয়া হয়েছে। ২২ লক্ষ মজুত রাখা হয়েছে। আমরা চাই এই তীর্থভূমিতে দেশ-বিদেশ থেকে লক্ষ লক্ষ মানুষ এসে দেখুন, রাজ্য সরকারের সহযোগিতায় সবুজের ক্যানভাসে কীভাবে বদলে গিয়েছে গঙ্গাসাগর মেলা। প্লাস্টিক বর্জন করা হয়েছে। যাঁরা বছর দশেক আগে এসেছেন, তাঁরা চিনতে পারবেন না পরিচ্ছন্ন, পরিবেশবান্ধব এই মেলাকে।
সত্যি কথা। কপিলমুনির মন্দির নতুন করে তৈরি করা হয়েছে। মন্দির চত্বরে দক্ষিণেশ্বরের মতো তিনটি ডালা আর্কেড করা হয়েছে। যেখানে পুজোর সামগ্রী বিক্রি হয়। দু’নম্বর ডালা আকের্ডের সামনে তৈরি হয়েছে বিশাল শিবের মূর্তি। ডালা আকের্ডের সামনে রয়েছে সুন্দর সরোবর। রয়েছে নাটমন্দির। কপিলমুনির মন্দির থেকে ৫০০ মিটার দূরে সাগর। যেখানে স্নান করে কপিলমুনি ও মা গঙ্গাকে নারকেল ফাটিয়ে পুজো দিচ্ছেন পুণ্যার্থীরা। ইতিমধ্যে উত্তরপ্রদেশ, বিহার, ঝাড়খণ্ড থেকে বহু মানুষ এসে গিয়েছেন। ভিনরাজ্য এসে থেকে চিড়ে, নকুলদানা নিয়ে মাটিতে বসে বিক্রিও শুরু হয়েছে। সাগরে স্নান করার জন্য পাঁচটি গেট করা হয়েছে। প্রতি মুহূর্তে কড়া নজরদারি রাখা হয়েছে। একটি দূরত্বের পর জলে আর যাওয়ার উপায় নেই। কারণ, জলে বেলুন দিয়ে হলুদ রংয়ের ‘সেফটি ব্যারিয়ার’ করা হয়েছে।
অতীতের পরম্পরা মেনে হোগলা শেড থাকলেও কলকাতার বিভিন্ন মেলা বা অনুষ্ঠানে যে জার্মান হ্যাঙ্গার দেখা যায়, তাও লাগানো হয়েছে বেশ কয়েকটি। নানা রংয়ের এলইডি আলোয় মুড়ে দেওয়া হয়েছে মেলা প্রাঙ্গণ। দুর্গাপুজোর মত আলোর রোশনাইতে একেবারে উৎসবের চেহারা নিয়েছে গঙ্গাসাগর। ২৫ বছর ধরে করে আসা জেলা প্রশাসনের এক অফিসার অশোক গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, পুরো পরিবর্তন হয়ে গিয়েছে মেলা। একদিকে যেমন পরম্পরাকে ধরে রাখতে হোগলা শেড, অপর দিকে আধুনিকতার ছোঁয়া দিতে কর্পোরেট ধাঁচ। পরিবেশের দিকে নজর দিতে মেলা প্রাঙ্গণে পাঁচ হাজার কর্মী নিয়োগ করা হয়েছে। মোবাইল নেটওয়ার্ক থেকে শুরু করে পরিবেশবান্ধব সবরকম আধুনিক পরিকাঠামো উপহার দেওয়ার আপ্রাণ চেষ্টা করা হচ্ছে বলে জানালেন জেলাশাসক পি উল্গানাথন।