কর্মপ্রার্থীদের কোনও চুক্তিবদ্ধ কাজে যুক্ত হবার যোগ আছে। ব্যবসা শুরু করা যেতে পারে। বিবাহের যোগাযোগ ... বিশদ
শুরু হয়েছিল যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ঘটনা দিয়ে। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর অনুরোধ অমান্য করে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়কে ঘেরাওমুক্ত করতে যাদবপুর ক্যাম্পাসে গিয়েছিলেন রাজ্যপাল। তারপর থেকে প্রায় প্রতিপদেই রাজ্য সরকারের কাজকর্ম নিয়ে মন্তব্য করে তৃণমূল প্রশাসনের উপর চাপ তৈরিতে সচেষ্ট তিনি। স্বাভাবিক কারণেই, রাজ্যপাল ধনকারের ভূমিকা নিয়ে তৃণমূলের অসন্তোষ প্রকট হয়ে পড়ে। এই সংঘাতের আবহের মধ্যেই কালীপুজোয় বস্তুত উপযাচক হয়ে রাজ্যপাল ধনকার সস্ত্রীক মুখ্যমন্ত্রীর বাড়িতে গিয়েছিলেন। সেখানে মমতার আপ্যায়ন নিয়ে ভূয়সী প্রশংসাও করেন তিনি। কিন্তু সেই আপাত সৌহার্দ্য বেশিদিন টেকেনি। টেলিফোনে আড়ি পাতা নিয়ে বিজেপিকে দুষতেই, মুখ্যমন্ত্রীকে পাল্টা নিশানা করেছিলেন রাজ্যপাল। তাঁর ওই আচরণ রাজ্য বিজেপি সভাপতির মতো বলে দাবি করেছিলেন তৃণমূল মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়। সর্বশেষ এদিন সকালে আয়ুষ্মান ভারত কার্যকর না করা নিয়ে কড়া ভাষায় রাজ্য সরকারকে দুষেছেন রাজ্যপাল। অ্যাসোসিয়েশন অব মেডিক্যাল ফিজিসিস্ট অব ইন্ডিয়ার বার্ষিক সভার উদ্বোধন করেন ধনকার। সেখানে তিনি বলেন, স্বাস্থ্য ব্যবস্থা নিয়ে রাজনীতি করা অনুচিত। রাজ্যপালের দাবি, তিন-চার হাজার মানুষ কেন্দ্রের স্বাস্থ্য প্রকল্পের সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে বলে তাঁর হস্তক্ষেপ চেয়ে আবেদন করেছে। রাজ্য সরকার আয়ুষ্মান ভারত চালু না করায় এই অবস্থার সৃষ্টি হচ্ছে। ওই প্রকল্পের সুবিধা সম্পর্কে সাধারণ মানুষকে অবগত করতে হবে। যদি এই নিয়ে সমস্যা হয়, তাহলে তাঁকে সরাসরি জানানোর আর্জি জানিয়েছেন রাজ্যপাল।
রাজনৈতিক মহলের মতে, রাজ্যের নির্বাচিত সরকারের ঘোষিত নীতিগত অবস্থান নিয়ে কেন্দ্রের সঙ্গে বিরোধ যুক্তরাষ্ট্রীয় ব্যবস্থায় মোটেই অস্বাভাবিক নয়। রাজ্যের সাংবিধানিক প্রধান হলেও নির্বাচিত সরকারকে উপেক্ষা করে কোনও পরিষেবার বিষয়ে সরাসরি রাজভবনকে জানানোর আর্জি শুধু বিরল নয়, তাতে সংঘাতের ইন্ধন থাকাই প্রত্যাশিত। এদিন তৃণমূল ভবনে দলের ওয়ার্কিং কমিটির বর্ধিত বৈঠকের শেষে রাজ্যপালের বক্তব্যের প্রতিক্রিয়া জানতে চাওয়া হয় মুখ্যমন্ত্রীর কাছে। প্রশ্নকর্তার কথা শেষ হতে না হতেই তাঁর সপাট, সংক্ষিপ্ত জবাব, ‘আই কান্ট রিপ্লাই টু দেয়ার পার্টি ম্যান।’ ওদের পার্টির লোককে আমি জবাব দিতে পারি না।
এদিকে, আগামী ১৭ নভেম্বরের মধ্যে অযোধ্যা মামলার রায় দিতে চলেছে সুপ্রিম কোর্ট। স্বভাবতই, দেশজুড়ে তাকে ঘিরে জল্পনা তৈরি হয়েছে। বিশেষত, কেন্দ্রের শাসকদলের রাজনৈতিক অ্যাজেন্ডার সঙ্গে এই মামলার রায়ের সম্পর্ক অবিচ্ছেদ্য। এদিন মমতা বলেন, অযোধ্যা মামলার বিষয়টি লক্ষ্য রাখছি। সর্বত্র শান্তি বজায় রাখতে হবে। বৈঠকে তিনি দলের নেতা-নেত্রীদের জানিয়ে দিয়েছেন, ওই বিষয়ে কেউ যেন মুখ না খোলেন। এমনকী দলের হয়ে যাঁরা টিভিতে আলোচনায় অংশ নেন, সেখানেও রাশ টেনে দিয়েছেন তৃণমূল নেত্রী। তিনি বলে দিয়েছেন, অযোধ্যা নিয়ে কোনও আলোচনায় ডাকা হলে দলই বক্তা ঠিক করে দেবে।