কর্মপ্রার্থীদের কোনও চুক্তিবদ্ধ কাজে যুক্ত হবার যোগ আছে। ব্যবসা শুরু করা যেতে পারে। বিবাহের যোগাযোগ ... বিশদ
পঞ্চম শ্রেণীকে মাধ্যমিকে নিয়ে আসার পরিকল্পনা বেশ কয়েক বছরের। এত বিপুল সংখ্যক প্রাথমিক স্কুলে একটি বাড়তি ক্লাস নিয়ে আসার প্রক্রিয়াটা সহজ নয়। এর জন্য বাড়তি পরিকাঠামো প্রয়োজন। ক্লাসরুম তো বটেই, সমান অনুপাতে অন্যান্য পরিকাঠামো বৃদ্ধিরও প্রয়োজনীয়তা ছিল। এই লক্ষ্যে বাজেটে প্রাথমিক শিক্ষায় বাড়তি অর্থও বরাদ্দ করে সরকার। বহু স্কুলকে অতিরিক্ত ক্লাসরুম (এসিআর) তৈরির অর্থ দেওয়া হয়। অন্যান্য পরিকাঠামো উন্নয়নের জন্যও বিভিন্ন সময় ধাপে ধাপে টাকা দেওয়া হয়েছে। তারপর পঞ্চম শ্রেণীকে প্রাথমিকে আনার জন্য সরকার গত বছর একটি উচ্চ পর্যায়ের কমিটি গঠন করে দিয়েছিল। তারা রাজ্যের বিভিন্ন স্কুলের হাল-হকিকৎ খতিয়ে দেখে। এখন দেখা যাচ্ছে, সিংহভাগ কাজই বাকি রয়ে গিয়েছে।
শিক্ষামন্ত্রী ঘনিষ্ঠমহলে জানিয়েছেন, প্রায় ২০০ স্কুলে এখনও প্রাথমিকেই পঞ্চম শ্রেণী রয়েছে। কিন্তু বাকিগুলিতে চালুর ক্ষেত্রে এখনও চূড়ান্ত ঘোষণার সময় আসেনি। বহু স্কুল এসিআর গ্রান্টের টাকা অন্য প্রকল্পেও ব্যয় করে দিয়েছে বলে ঊষ্মাপ্রকাশ করেন তিনি। শিক্ষা দপ্তরের কর্তারা বলছেন, পঞ্চম শ্রেণী প্রাথমিকে আনার অনেক ইতিবাচক দিক রয়েছে। কিন্তু সেটা ধাপে ধাপে চালু করে কোনও লাভ হবে না। তৃণমূল শিক্ষা সেলের নেতা জয়দেব গিরি বলেন, শিক্ষাবিদ রুশোও বলেছেন, যে কোনও প্রতিষ্ঠানে ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে বয়সের বিভাজন পাঁচ বছরের কম হওয়া উচিত। জাতীয় শিক্ষানীতিতেও তাই বলা রয়েছে। বিএড পাঠ্যক্রমেও এটা পড়ানো হচ্ছে। কিন্তু সেই বিএড ডিগ্রি নিয়ে আসা প্রার্থীরা শিক্ষক হয়ে দেখছেন, বাস্তব ছবিটা অন্য। একটি উচ্চ মাধ্যমিক স্কুলে পঞ্চম এবং একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণীর ছাত্রদের মধ্যে বয়সের ফারাকটা অনেকটাই বেশি হয়ে যায়। এর ফলে, একই প্রতিষ্ঠানে থাকার জন্য বয়ঃসন্ধিকালের যাবতীয় নেতিবাচক দিকগুলি উঁচু ক্লাসের পড়ুয়াদের মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে ছোট ছেলেমেয়েদের মধ্যেও। এটা একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক। আবার এটাও ঠিক, পঞ্চম শ্রেণী হাইস্কুলে পড়ানোর জন্য ১৫,০০০ বাড়তি শিক্ষককে নিয়োগ করতে হচ্ছে। এঁদের বেতন কাঠামো প্রাথমিক শিক্ষকদের থেকে অনেকটাই বেশি। এর জন্য বাড়তি ৫০ কোটি টাকা খরচ করতে হচ্ছে রাজ্য সরকারকে, দাবি জয়দেববাবুর।
যদিও প্রথমে ব্যাপারটা ধাপে ধাপে করারই পরিকল্পনা ছিল। প্রাথমিকভাবে ঠিক হয়েছিল, ১৫০০ বা তার বেশি সংখ্যক ছাত্রছাত্রী রয়েছে, এমন স্কুলগুলিকে এর আওতায় আনা হবে। একটি বড় হাইস্কুলের ফিডার প্রাথমিক স্কুলগুলিতে এই বাড়তি ছাত্রছাত্রী ভাগ করে দেওয়া হবে। তার জন্য পরিকাঠামো গড়ে তোলা হবে সেগুলিতে। এর পরের ধাপে আসবে ১০০০ বা তার বেশি সংখ্যক ছাত্রছাত্রী থাকা স্কুলগুলি। তারপর আসবে ১০০০-এর কম পড়ুয়ার স্কুলগুলি। এভাবে পাঁচ বছরে গোটা ব্যাপারটি রেগুলারাইজড (নিয়মিত) হয়ে যাবে বলে আশা করেছিলেন আধিকারিকরা। যদিও সরকার বা শাসক-ঘনিষ্ঠ শিক্ষকদের একাংশ চাইছিল, ২০২০ সালের মধ্যেই গোটা প্রক্রিয়া শেষ করা হোক।