নিজস্ব প্রতিনিধি, চুঁচুড়া: ভোটপ্রচার মানেই নানা রঙিন ঘটনা। মঙ্গলবার হুগলির ভোটপ্রচারেও ছিল তেমনই রঙের বাহার। হুগলি লোকসভা কেন্দ্রের প্রার্থীদের কেউ এদিন ‘মঙ্গল’ সংকেত খুঁজলেন মাছের মাথায়, তো কেউ মন্দিরের দোরগোড়ায়। আবার কেউ মানুষের মাঝে থাকলেন দিনভর। প্রার্থীদের পাশাপাশি রোদে পুড়ে ঘামতে ঘামতে কর্মীরা মিছিল, রোড শো করলেন। হুগলির বিভিন্ন জনপদে উড়ল লাল-সবুজ-গেরুয়া বেলুন, ঘুরল বাহারি টোটো থেকে গাড়ি। খন্যান থেকে খরুয়া বাজার, আম জনতা দেখল লোকসভার লড়াইয়ের মহড়া। তবে প্রচার শুধু রঙিন ছিল তাই নয়, ছিল কটাক্ষ, বিবৃতি আর পাল্টা বিবৃতির তুফান। মঙ্গলবার সুসজ্জিত পিকআপ ভ্যান নিয়ে প্রচারে বেরিয়েছিলেন তৃণমূলের তারকা প্রার্থী রচনা বন্দ্যোপাধ্যায়। সপ্তগ্রাম বিধানসভার নানা এলাকায় তিনি রীতিমতো শোভাযাত্রা করে প্রচারে ঝড় তুলে দেন। তারকা ‘দিদি’কে দেখতে ভরদুপুরে মেয়ে-বউদের ঢল নেমেছিল গঞ্জের রাস্তায়। ছিলেন নানা বয়সের পুরুষরাও। কোথাও হাত মেলানোর আগ্রহ, তো কোথাও সেলফির আব্দার, ভোটপ্রচারকে ঘিরে হুড়োহুড়ি ছিল চূড়ান্ত। এদিন হনুমান জয়ন্তী ছিল। তাই সকাল সকাল মগরার একটি হনুমান মন্দিরে পুজো দেন রচনাদেবী। তারপরে শুরু হয় বর্ণাঢ্য প্রচার। প্রচারের মাঝখানেও ছিল পুজো। কোলারে একটি চণ্ডীমন্দির ও জয়পুরে অনুকুল ঠাকুরের আশ্রমে পুজোপাঠে অংশ নেন তিনি। তাঁর প্রচার শোভাযাত্রায় ছিল আদিবাসী নৃত্য শিল্পীদের দল, মহিলা ঢাকিদের দল, এমনকী ব্যান্ডপার্টিও। প্রচারের মাঝে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথাও বলেন রচনা। হাইকোর্টের রায়ে চাকরিহারাদের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, কার্যকারণ পরে। সবার আগে এটা সত্য যে, একদল মানুষ বিপদে পড়েছেন। আমরা তাঁদের সঙ্গে সমব্যাথী। এই খারাপ সময় তাঁদের পাশে থাকার বার্তা দেওয়াই স্বাভাবিক। ইতিমধ্যেই মুখ্যমন্ত্রী সেই বার্তা দিয়েছেন। সদ্য একটি স্টুডিওতে আগুন লেগে যাওয়ার প্রসঙ্গেও সমবেদনা জানিয়েছেন তৃণমূল প্রার্থী। প্রসঙ্গত, তাঁর চর্চিত টিভি শোয়ের শ্যুটিং সেখানেই হয়।
এদিন সকাল সকাল চুঁচুড়ার বৃহত্তম পাইকারি ও খুচরো বাজার রবীন্দ্রনগরে গিয়েছিলেন বিজেপি প্রার্থী লকেট চট্টোপাধ্যায়। গত কয়েকদিন ধরে তাঁর প্রচারের একটি পর্ব বাজারেই থাকছে। এদিন সেখানে তিনি দরদাম করে মাছের মাথা কেনেন। লকেট বলেন, মাছের মাথা শুভ জিনিস। সেই জন্যই কিনলাম। সেই সঙ্গে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীকে আক্রমণ করেন তিনি। বলেন, যাঁদের চাকরি গিয়েছে, তাঁরা বাড়িতে হামলা করতে পারে। সেই আশঙ্কা থেকেই কালীঘাটে নিজের ও ভাইপোর নিরাপত্তা জোরদার করেছেন। আর খুনের গল্প ফেঁদেছেন। তিনি আরও বলেন, নিয়োগ দুর্নীতির আসল মাথাকে খুঁজে বের করা হোক। পরে তিনি পাণ্ডুয়ার খন্যানে রোড শো করেন। বাঁশবেড়িয়ায় হনুমান জয়ন্তীর মিছিলে গদা হাতেও অংশ নেন লকেট চট্টোপাধ্যায়। সিপিএম প্রার্থী মনোদীপ ঘোষ এদিন নিজে প্রচারে ছিলেন না। তবে বামেরা সর্বত্র প্রচার করেছে।