সংবাদদাতা, উলুবেড়িয়া: কলকাতার বেলেঘাটার নিখোঁজ যুবক গণেশ দাসের রহস্য প্রায় উদ্ঘাটন করে ফেলল জয়পুর থানার পুলিস। এই তদন্তে পুলিসের সামনে হাড় হিম করা ঘটনা উঠে এসেছে। পুলিস জানতে পেরেছে, টাকা দেওয়ার নাম করে গণেশকে জয়পুরের খালনায় ডেকে এনে পরিকল্পনা মাফিক খুন করে ধৃত নবনীতা দাস ও তার মামা সুকল্যাণ ও মামী মনিকা মালিক। ঘটনার দু’দিন পর রাতে খালনা এলাকার গাইঘাটা খালের একটি নির্জন জায়গায় মৃতদেহটি ফেলে দেয়। ধৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ করার পর মঙ্গলবার গাইঘাটা খালে পুলিস তল্লাশি চালালেও কোন কিছু উদ্ধার হয়নি। পুলিস বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীকে খবর দিয়েছে। আজ, বুধবার তারা তল্লাশি চালাবে। প্রাথমিক তদন্তে পুলিস জানতে পেরেছে, রাজাপুর থানার বড়গ্রামের বাসিন্দা নবনীতার প্রথম বিয়ে হয়েছিল কলকাতায়। যদিও স্বামীর সঙ্গে তার সর্ম্পকের অবনতি ঘটে।। তবে এর মধ্যে গণেশের সঙ্গে তার যোগাযোগ হয়। তারা মন্দিরে গিয়ে বিয়েও করে বলে সূত্রের খবর। জানা গিয়েছে, এই সর্ম্পকের জেরে নবনীতা জমি কেনার নাম করে গণেশের কাছ থেকে বেশ কয়েক লক্ষ টাকা নেয়। যদিও সেই টাকা ফেরত না দেওয়ায় ২০২২ সালে গণেশের পরিবার নবনীতা ও তার মায়ের নামে রাজাপুর থানায় অভিযোগ দায়ের করে।
পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, এরপরেই নবনীতা তার মামা সুকল্যাণ মালিককে সঙ্গে নিয়ে গণেশকে খুনের পরিকল্পনা করে। সেই মতো গত বছর ২৩ আগস্ট টাকা ফেরত দেওয়ার নাম করে গণেশকে খালনায় মামাবাড়িতে ডেকে পাঠায় নবনীতা। গণেশ খালনায় এলে দুপুরে নবনিতা তাকে ভালোমন্দ খাওয়ায়। এরপর রাতে সুকল্যাণকে সঙ্গে নিয়ে শ্বাসরোধ করে তাকে খুন করে। প্রথমে তারা দু’দিন বাড়ির খড়িবনের পাশে মৃতদেহ লুকিয়ে রাখে। এরপর সেই মৃতদেহ ত্রিপলে বেঁধে খালের জলে ফেলে দেয়। শুধু তাই নয়, মৃতদেহ যাতে ভেসে না ওঠে, সেজন্য তাতে পাথর বেঁধে দেওয়া হয়। কোথায় মৃতদেহ ফেললে সুবিধা হয়, সেটা বুঝতে জায়গাটা আগেই রেকি করে গিয়েছিল মামা ও ভাগনি। এমনকী মৃতদেহ জলে ফেলা আসার পর মাঝে মধ্যেই দেখে আসত, সেটি ভেসে উঠেছে কি না। তদন্ত চালিয়ে শনিবার নবনীতাকে এবং রবিবার সুকল্যাণ ও মনিকা মালিককে গ্রেপ্তার করে জয়পুর থানার পুলিস। বর্তমানে তিনজনেই পুলিস হেফাজতে আছে।