কর্মে অগ্রগতি ও নতুন কাজের বরাত প্রাপ্তি। আইটি কর্মীদের শুভ। মানসিক চঞ্চলতার জন্য বিদ্যাচর্চায় বাধা। ... বিশদ
কোথাও পদের লোভ, কোথাও ক্ষমতা ধরে রাখার আগ্রাসী চাহিদা। পঞ্চায়েত ভোটের টিকিট না পেয়ে রাজ্যের অন্যান্য জায়গার মতো হাওড়াতেও নির্দল হিসেবে দাঁড়ানোর হিড়িক পড়েছিল। বহু পঞ্চায়েতে সিপিএম বা বিজেপি নয়, তৃণমূলের নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন এই নির্দলরাই। ওই অবস্থায় ‘নির্দল’দের কড়া বার্তা দিতে পিছপা হয়নি তৃণমূল নেতৃত্ব। প্রায় সব পঞ্চায়েত এলাকাতেই নির্দল হয়ে দাঁড়ানো তৃণমূল নেতাকর্মীদের বহিষ্কার করা হয়েছিল। সেই সঙ্গে বারবার বলা হয়েছিল, কোনওভাবেই আর এই ‘গদ্দার’-দের দলে ফেরানো হবে না। এই সিদ্ধান্তের ফলে কোথাও কোথাও যেমন ‘বেনোজল’ বেরিয়ে গিয়েছিল, তেমনই অনেক জায়গায় ভালো সংগঠকও হাতছাড়া হয়েছিল তৃণমূলের। হাওড়ার বেশ কিছু পঞ্চায়েতে তৃণমূলের সংগঠন দুর্বল হয়ে যায় ওই পদক্ষেপের পর। কিন্তু লোকসভা ভোট আসতেই তাঁদের অনেকে দলে ফেরার জন্য জোরাজুরি শুরু করেছেন বলে খবর। তৃণমূল নেতৃত্বের কাছে বিষয়টি ‘শাঁখের করাত’ কেন? সংগঠন যেখানে দুর্বল, সেখানে বহিষ্কৃতদের দলে ফিরিয়ে না নিলে আগামী দিনে তৃণমূলের বিপদ। আবার অনেক ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে, তাঁদের ফেরালে দলের অন্দরেই প্রশ্ন উঠছে। তৃণমূলের অনুশাসন ও ভাবমূর্তি নিয়েও সংশয় তৈরি হচ্ছে জনমানসে। যেমন, শুক্রবার জগৎবল্লভপুর বিধানসভার বেগড়িতে নির্দল সদস্য মহসিন মুফতি এবং মনিরা শেখকে ফের তৃণমূলের পতাকা ধরানো হয়েছে। তার বিরুদ্ধে গর্জে উঠেছেন স্থানীয় তৃণমূল কর্মীরাই। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক তৃণমূল কর্মী বলছেন, ‘এই সিদ্ধান্ত দেখিয়ে দিল যে নির্দল হয়ে জিতে এসে ফের দলে ঠাঁই পাওয়া যাবে। এসব বহিষ্কার আসলে ছেলে ভোলানো কথা।’ সাধারণ ভোটারদের একাংশ অবশ্য বলছেন, যেভাবে তখন পটাপট বহিষ্কার করা হচ্ছিল, তাতেই বোঝা যাচ্ছিল, এঁদের ফের দলে নেওয়া স্রেফ সময়ের অপেক্ষা। যেখানে শীর্ষ পদেই একাধিক দলবদলু নেতাদের নেওয়া হচ্ছে, সেখানে পঞ্চায়েত স্তরে এসব আর কে নিয়ন্ত্রণ করবে!
শুক্রবারের ওই ঘটনার পর জগৎবল্লভপুরের বিধায়ক সীতানাথ ঘোষ জানিয়েছেন, তৃণমূল কর্মীভিত্তিক দল। ওই নির্দল সদস্যদের বুথ থেকে দলের কর্মীদেরই চাহিদা ছিল তাঁদের দলে নেওয়ার জন্য। দলের কথা ভেবে সবদিক বিবেচনা করেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এই অবস্থায় ভবিষ্যতে এই সিদ্ধান্ত তৃণমূলের ভোটবাক্সে কী প্রভাব ফেলে, সেটাই এখন দেখার।