অত্যাধিক পরিশ্রমে শারীরিক দুর্বলতা। বাহন বিষয়ে সতর্কতা প্রয়োজন। সন্তানের বিদ্যা শিক্ষায় অগ্রগতি বিষয়ে সংশয় বৃদ্ধি। ... বিশদ
হুগলি জেলা পরিষদের কৃষি কর্মাধ্যক্ষ মনোজ চক্রবর্তী বলেন, চাষিদের আক্ষেপ একবারেই বাস্তব। আমরা ওই বিমার টাকা পাওয়ার জন্য গত দেড় বছর ধরে লাগাতার চেষ্টা করে যাচ্ছি। প্রায় সাড়ে তিনশো কোটি টাকা আলু ও পেঁয়াজের ক্ষতিপূরণবাবদ দাবি করা হয়েছিল। রাজ্য সরকার তার ভাগের টাকা দিয়ে দিলেও কেন্দ্রীয় বিমা সংস্থা ৮৫ শতাংশ প্রাপ্য টাকাই দেয়নি। এনিয়ে জেলা পরিষদের তরফে রাজ্য সরকারের সঙ্গে কথা বলব। ওই টাকা চাষিদের ন্যায্য পাওনা।
হুগলির জাঙ্গিপাড়ার আঁটপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান প্রণব দাস বলেন, পেঁয়াজ ও অন্যান্য শস্যের টাকা সরকার থেকে দেওয়া হয়। কিন্তু, আলুর বিমার টাকা পুরোটাই চাষিকে দিতে হয়। নিজেদের গাঁটের কড়ি খরচ করে বিপদের দিনে সাহায্য তো কিছুই মেলেনি উপরন্তু দু’বছর ধরে টাকা মেটানো হচ্ছে না। উম-পুনের ধাক্কায় এবারও সেই সঙ্কটের কথাই চাষিদের মাথায় ঘুরছে।
জেলার পেঁয়াজ উৎপাদনের মূলকেন্দ্র বলাগড়ের চাষি তরুণ সেন বলেন, ২০১৮ সালে পেঁয়াজ ও আলু ক্ষতির মুখে পড়েছিল। বিমা করানোর পরেও টাকা মেলেনি। কেউ কেউ সামান্য কিছু টাকা পেলেও সিংহভাগ ক্ষেত্রেই বিমার টাকা হাতে আসেনি। এভাবে বছর বছর ক্ষতি মেনে নিয়ে চাষবাস করা কঠিন হয়ে যাচ্ছে।
হুগলির জেলাশাসক ওয়াই রত্নাকর রাও বলেন, ঠিক কী সমস্যা হয়েছে, তা নিয়ে সংশ্লিষ্ট মহলে কথা বলব। চাষিদের ন্যায্য পাওনা থেকে তাঁরা যেন বঞ্চিত না হন, তা নিশ্চিত করা হবে। এবারের ক্ষয়ক্ষতির বিষয়টি খতিয়ে দেখার কাজ চলছে।
কৃষিদপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০১৮ সালের শুরুর দিকে পেঁয়াজ ও আলু ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। সেই সময় শস্যবিমার টাকা বাবদ কেন্দ্রীয় বিমা কোম্পানির কাছ থেকে সাড়ে তিনশো কোটি টাকার মতো ক্ষতিপূরণবাবদ দাবি করা হয়েছিল। বাস্তবে ৭০ কোটি টাকা কয়েক দফায় দেওয়ার পরে বিমা কোম্পানি আর কোনও টাকা দেয়নি। ওই সময় আলুচাষিদের জন্য কিছু পরিমাণ বিমার টাকা দেওয়া হলেও পেঁয়াজ চাষের জন্য একটি টাকাও কোম্পানি দেয়নি। এনিয়ে জেলা ও রাজ্যের তরফে একাধিকবার সংশ্লিষ্ট কোম্পানির কাছে বিমার টাকা চেয়ে চিঠি দিলেও টাকা মেলেনি। এবারও উম-পুনের জেরে জেলায় প্রায় ৬০০ কোটি টাকার ফসলের ক্ষতি হয়েছে। সেই প্রেক্ষিতেই ২০১৮ সালে বিমার টাকা না মেলার প্রসঙ্গ ঘুরেফিরে আসছে। সেই সঙ্গে আশঙ্কার জমাট মেঘও জমছে জেলার কৃষিক্ষেত্রে।