গুরুজনের চিকিৎসায় বহু ব্যয়। ক্রোধ দমন করা উচিত। নানাভাবে অর্থ আগমনের সুযোগ। সহকর্মীদের সঙ্গে ঝগড়ায় ... বিশদ
দক্ষিণ ২৪ পরগনার ভাঙড়, ক্যানিং, বাসন্তী, গোসাবা, জয়নগর, কুলতলিতে বাঁধাকপি, ফুলকপি, পালং, ক্যাপসিকাম, লঙ্কা, আলু চাষ হয়। সাগর, পাথরপ্রতিমা, কাকদ্বীপ, নামখানায় পানের বরজ রয়েছে। এই জেলায় ৩ লক্ষ ৩০ হাজার হেক্টর জমিতে ধান চাষ হয়েছিল। প্রায় ৫০ হাজার হেক্টরে হয়েছিল রবিশস্য। রবিচাষ করেছিলেন প্রায় ২০ হাজার চাষি। বুলবুলের দাপটে ২ লক্ষ ১৫ হাজার হেক্টর জমির ধান ও সাড়ে ৮ হাজার হেক্টর জমির সব্জি নষ্ট হয়ে গিয়েছে। পূর্ব মেদিনীপুরে কৃষিতে ক্ষতি ৫৮৫ কোটি ৩০ লক্ষ টাকা। এমনটাই প্রাথমিক রিপোর্ট তৈরি করেছে কৃষি দপ্তর। জেলার ২৫টি ব্লক থেকেই আমন ধান, পান, ফুল ও সব্জি চাষের ক্ষয়ক্ষতির রিপোর্ট সংগ্রহ করা হয়েছে। কাঁথি ১ ও ৩, দেশপ্রাণ, খেজুরি ১ ও ২, ভগবানপুর ২ ব্লকে কৃষিতে বেশি ক্ষতি হয়েছে। পূর্ব মেদিনীপুরে আড়াই লক্ষ হেক্টর জমিতে আমন চাষ হয়েছিল। তার মধ্যে ৪০ হাজার হেক্টর জমিতে ১০০ শতাংশ ফসল নষ্ট হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। এছাড়াও এই জেলায় ৩৩ শতাংশের বেশি ক্ষতি হয়েছে অন্তত ১ লক্ষ ২৫ হাজার হেক্টর জমিতে। বর্ধমানে ২৭৯৫ হেক্টর জমির ফসলের উপর বুলবুলের মারাত্মক প্রভাব পড়েছে। এই জেলায় এবার ৩ লক্ষ ৮০ হাজার হেক্টরে আমন চাষ হয়েছিল। পেঁয়াজ হয়েছিল ৩০০ হেক্টরে। ১০০ হেক্টরে প্রভাব পড়েছে। সব্জি চাষ হয়েছিল ৩২০০ হেক্টরে। প্রভাব পড়েছে ১৯০০ হেক্টরে। পূর্ব বর্ধমান জেলায় আলু লাগানো হয়েছিল ১০০০ হেক্টর জমিতে। ৭৫০ হেক্টরের বেশি জমিতে প্রভাব পড়েছে।
নদীয়া জেলাতেও বুলবুলের জেরে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ অনেকটাই। এই জেলায় ৯০ হাজার হেক্টর জমিতে ধান চাষ হয়ে থাকে। বেশিরভাগ জমির পাকা ধানে মই দিয়েছে বুলবুল। এছাড়া সর্ষে, ডাল, ফুলকপি, বাঁধাকপি, ঝিঙে, মটরশুঁটি সহ বিভিন্ন ফসলের ক্ষতি হয়েছে। কলা চাষে ক্ষতির পরিমাণ ব্যাপক। রানাঘাট ২ নম্বর ব্লকের হবিবপুর, কামগাছি, দোগাছি গ্রাম পঞ্চায়েতের বিস্তীর্ণ এলাকায় কলার চাষ হয়ে থাকে। জেলায় ১০ হাজার হেক্টর জমিতে কলা চাষ হয়। বাঁকুড়ার বিষ্ণপুর মহকুমায় আউশ ও আমন মিলিয়ে ১ লক্ষ ১৮ হাজার জমিতে ধান চাষ হয়েছিল। তার মধ্যে ১০ হাজার হেক্টরে হয়েছিল সুগন্ধী ধান। মূলত বাদশাভোগ ও গোবিন্দভোগ। সেখানেও কম-বেশি ক্ষতি হয়েছে। আরামবাগ মহকুমায় ৬৫ হাজার ৫১০ হেক্টর জমিতে আমন হয়েছিল। ৩০ হাজার হেক্টরের বেশি জমিতে আলু বসানো হয়। ২ হাজার হেক্টরে হয়েছিল সব্জিচাষ। প্রাথমিক রিপোর্ট, ২৭ হাজার ৩৭৮ হেক্টর জমির ধান নুইয়ে পড়েছে। বর্ধমানের কাটোয়ায় পর পর দু’বছর ধান চাষিরা মার খেলেন। গত বছর বৃষ্টির অভাব ও বিকল্প সেচের ব্যবস্থা না থাকায় ক্ষতির মুখে পড়ে চাষ। অনেক চাষি জমিতেই গোরুকে খাইয়ে দিতে বাধ্য হন ফসল। কৃষি আধিকারিকরা জানিয়েছেন, জমি থেকে জল নেমে গেলে ব্লাইটক্স, ডাইথেন এম ৪৫ জাতীয় ছত্রাকনাশক জমিতে ছড়াতে হবে। কাটা ধান জলের নীচে পড়ে থাকলে ক্ষতির পরিমাণ বাড়বে। ফলে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। জল নামার পর জমিতে পরবর্তী জো না আসা পর্যন্ত আলু বা পেঁয়াজ চাষ শুরু করা যাবে না। ফলে প্রায় চাষ প্রায় ২ সপ্তাহ পিছিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা। বারবার প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের কথা মাথায় রেখে চাষিদের ফসল বিমার উপর আরও জোর দিতে বলা হয়েছে। প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে, পঞ্চায়েত স্তরে ক্যাম্প করে বিমা করানো হচ্ছে। নিজস্ব চিত্র