নিজস্ব প্রতিনিধি, কৃষ্ণনগর ও সংবাদদাতা, তেহট্ট: বুধবার পলাশীপাড়া কোয়ারেন্টাইন সেন্টার থেকে মহারাষ্ট্র থেকে ফেরা পাঁচ পরিযায়ী শ্রমিক পালিয়ে গেলেন। যদিও পরে তাঁদের খোঁজ পাওয়া যায়। তাঁদের পালিয়ে যাওয়ার খবর পেতেই প্রশাসনিক মহলে তোলপাড় পড়ে যায়। কোয়ারেন্টাইন সেন্টারের সামনে পুলিসি প্রহরা থাকা সত্ত্বেও কীভাবে ওই পাঁচজন বাইরে বেরিয়ে গেলেন তা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। পালিয়ে যাওয়ার ঘটনা জানাজানি হতেই আতঙ্ক শুরু হয় ওই এলাকায়। পালিয়ে যাওয়া পাঁচজনের মধ্যে দু’জনের বাড়ি চাপড়া থানা এলাকায় ও তিনজনের বাড়ি পলাশীপাড়া থানা এলাকায়। পরে তাঁদের পাঁচজনকেই পুলিস উদ্ধার করে কোয়ারেন্টাইন সেন্টারে নিয়ে আসে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মহারাষ্ট্র থেকে কয়েকদিন আগে চাপড়ার বাসিন্দা দু’জন ও পলশন্ডা-২ গ্রাম পঞ্চায়েতের বরেয়া গ্রামের তিনজন ফেরেন। তাঁদের পলাশীপাড়া কর্মতীর্থে কোয়ারেন্টাইন সেন্টারে রাখা হয়। তাঁদের ওই সেন্টার থেকে লালারস সংগ্রহ করা হয়েছে। এখনও কারও রিপোর্ট আসেনি। ওই সেন্টারে কিছুদিন আগে খাবার নিয়ে গণ্ডগোল হয়। এরপর তেহট্ট-২ ব্লক থেকে কোয়রেন্টাইন সেন্টারে থাকা মানুষদের জন্য ব্রাশ, পেস্ট, সাবান, শ্যাম্পু এমনকী টিভির ব্যবস্থা করা হয়। তারপরও এদিন পাঁচজন ওই কোয়ারেন্টাইন সেন্টার থেকে পালিয়ে যান। বেশ কিছুক্ষণ পরে চাপড়ার দু’জনকে খুঁজে পায় পুলিস। বাকি তিনজনকে পলাশীপাড়ার বাজারের কাছ থেকে উদ্ধার করে পুলিস।
এদিন কৃষ্ণনগরের সংসদ সদস্য মহুয়া মৈত্র সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি ভিডিও পোস্ট করে বলেন, পশালীপাড়া কোয়ারেন্টাইন সেন্টার থেকে পাঁচজন পালিয়ে যান। কয়েকজন লোক এই সেন্টারে কিছুদিন ধরেই গণ্ডগোল চালাচ্ছে। এই সেন্টারে প্রশাসন যথাযথ ব্যবস্থা নিয়েছে। সকলকে বুঝতে হবে, এটা কোনও পাঁচতারা হোটেল নয়, যে সময়মতো চা-বিস্কুট দেওয়া হবে। যাদের উস্কানিতে এসব করা হল তা বরদাস্ত করা হবে না। এরকম করে নিজের ও অন্যের বিপদ বাড়াবেন না। তিনি এদিন হোম কোয়ারেন্টাইনের নিয়ম ভাঙা নিয়েও ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেছেন, যাঁরা ফিরছেন তাঁরা এসে সকালে বাড়িতে থাকছেন। সন্ধ্যা হলেই বেড়াতে চলে যাচ্ছেন। আড্ডায় চলে যাচ্ছেন। এটা কোনও খেলা নয়। আপনাদের জন্য যদি অন্য লোক সংক্রামিত হন, সেটা কিন্তু ঠিক হবে ন। এমন যাঁরা ফিরেছেন তাঁদের বন্ধুবান্ধবরাও সতর্ক থাকুন।
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, এখন পর্যন্ত জেলায় মোট আক্রান্তের সংখ্যা ১৭। গত ২৪ঘণ্টায় রেকর্ড সংখ্যক মানুষের লালারস সংগ্রহ হয়েছে। জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, ৪৫৩জনের লালারসের নমুনা সংগ্রহ হয়েছে গত ২৪ ঘণ্টায়। জেলার বিভিন্ন আইসোলেশন ওয়ার্ডে মোট ১১৭জন ভর্তি রয়েছেন। ২০৮জন কোয়ারেন্টাইন সেন্টারে ভর্তি। কল্যাণীর জেএনএম হাসপাতালে একজনের মৃত্যু হয়েছে। জেলা থেকে প্রাপ্ত প্রেস নোট অনুযায়ী, তাঁর লালারসের পরীক্ষার রিপোর্ট আসার জন্য অপেক্ষা করা হচ্ছে।