কর্মক্ষেত্রে সহকর্মীর ঈর্ষার কারণে সম্মানহানি হবে। ব্যবসায়ীদের আশানুরূপ লাভ না হলেও মন্দ হবে না। দীর্ঘ ... বিশদ
পুলিস ও প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, এদিন ভোররাতে উত্তরপ্রদেশে লরির ধাক্কায় ২৪ জনের মৃত্যু হয়। তাঁদের মধ্যে পুরুলিয়ারও ওই চারজন ছিলেন। তাঁদের মিলন ও চন্দন রাজস্থানের একটি মার্বেল কারখানায় কাজ করতেন। মিলনের দাদা দেবাশিস বাদ্যকার বলেন, আমাদের তিনভাইয়ের মধ্যে মিলন মেজো। ভাই হেপ্লার হিসেবে কাজ করার জন্য দুর্গাপুজোর সময় রাজস্থানে গিয়েছিল। তারপর থেকে আর বাড়ি আসেনি। পরপর তিনদফার লকডাউন ঘোষণা হয়। ওরা তখন কারখানাতেই ছিল। সেখানে খাওয়া দাওয়ার তেমন সমস্যা ছিল না। তবে চতুর্থ দফার লকডাউন ঘোষণা হতে পারে, এই আশঙ্কায় ও চিন্তিত হয়ে পড়েছিল। তাই যেকোনও উপায়ে তার আগেই বাড়ি ফেরার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। ১৪মে ওদের লরিতে করে ফেরার কথা ছিল। জয়পুর পর্যন্ত গিয়ে অন্য লরিতে পুরুলিয়ায় আসার কথা জানিয়েছিল। শুক্রবার সন্ধ্যায় ও ফোন করে জানিয়েছিল, রাতের খাওয়া দাওয়া হয়ে গিয়েছে। গাড়ি ছাড়লে জানিয়ে দেবে বলেছিল। কিন্তু, রাতে ফোন করেনি। এদিন সকালে ভাইয়ের এক বন্ধুর মাধ্যমে দুঃসংবাদটা পাই। আমাদের বড় ক্ষতি হয়ে গেল।
দুর্ঘটনায় মৃত চন্দনবাবুর ভাই অনুপ রাজোয়াড় বলেন, শুক্রবার রাত সাড়ে ৮টা নাগাদ দাদার সঙ্গে শেষবার কথা হয়েছিল। লরিতে করেই ওদের ফেরার কথা ছিল। সকালে উত্তরপ্রদেশে দুর্ঘটনার খবর টিভিতে দেখার পরই বুকটা কেঁপে উঠেছিল। সঙ্গে সঙ্গে দাদাকে ফোন করি। কিন্তু, মোবাইল বন্ধ ছিল। তখন থেকেই মনটা কু গাইছিল। এরপর ওদের সঙ্গে থাকা ঝাড়খণ্ডের বিকাশ কালিন্দি বলে একজনকে ফোন করি। তিনিই আমাদের মর্মান্তিক খবরটা দেন। অনুপবাবু বলেন, টাকা রোজগার করছিল। আমরা দাদার বিয়ে দেব বলে ঠিক করেছিলাম। সব শেষ হয়ে গেল। এখন মনে হচ্ছে, এর চেয়ে বাড়িতে থাকলেই ভালো হতো। এখানে থাকলে বেঁচে তো থাকত।
এদিকে, দুর্ঘটনার খবর পেয়ে অজিত মাহাতর পরিবারও কান্নায় ভেঙে পড়ে। উপরবাটরি গ্রামেও নেমে আসে শোকের ছায়া। তবে এদিন সন্ধ্যা পর্যন্ত মৃত অপরজনের পরিচয় জানাতে পারেনি প্রশাসন।
অন্যদিকে, এদিন দুমদুমি ও উপরবাটরি গ্রামে গিয়ে মৃতদের পরিবারকে সমবেদনা জানান সভাধিপতি সুজয় বন্দ্যোপাধ্যায়, যুব তৃণমূলের জেলা সভাপতি সুশান্ত মাহাত প্রমুখ। সুজয়বাবু বলেন, রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে মৃতদের পরিবারকে দু’লক্ষ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে। দলীয়ভাবেও আমরা মৃতদের পরিবারের পাশে রয়েছি। কেন্দ্রীয় সরকারের আচমকা লকডাউন ঘোষণার ফলেই দুর্ঘটনার কবলে পড়তে হচ্ছে পরিযায়ী শ্রমিকদের।