গুরুজনের চিকিৎসায় বহু ব্যয়। ক্রোধ দমন করা উচিত। নানাভাবে অর্থ আগমনের সুযোগ। সহকর্মীদের সঙ্গে ঝগড়ায় ... বিশদ
তবে কমিশনারেট সূত্রের দাবি, চিকিৎসকের মৃত্যুর পিছনে এখনও কোনও অস্বাভাবিক কারণ পাওয়া যায়নি। তবে আপাতত অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করে ঘটনার তদন্ত শুরু করা হয়েছে। এক পুলিসকর্তা জানান, সমস্ত সম্ভাবনাই খতিয়ে দেখা হচ্ছে। বিশেষ করে উনি যেহেতু একাকী থাকতেন, তাই কিছু মানসিক সমস্যা তাঁর হয়েছিল। তার জন্য তাঁর চিকিৎসাও চলছিল। সেইরকম কোনও ওষুধ অতিরিক্ত খেয়ে ফেলার কারণে তাঁর মৃত্যু কি না, তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। বিশেষ করে ঘটনার সময় চিকিৎসকের বাড়িতে কিছু পারিপার্শ্বিক পরিস্থিতির প্রমাণ পাওয়া গিয়েছে, তা দেখে পুলিসের এই সন্দেহ হচ্ছে। পুলিসকর্তা জানান, এবিষয়েও চিকিৎসকদের রিপোর্ট আসা পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে।
এদিকে, স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, চিকিৎসক জয় বসু এখানে দীর্ঘদিনই একাকী থাকতেন। তাঁর এক দিদি আমেরিকায় থাকেন। কলকাতায় এক দূর সম্পর্কের ভাই রয়েছেন, তিনি মাঝে-মধ্যে এসে দেখা করে যেতেন। দু-তিন বছর আগে তিনি সল্টলেকের একটি প্যাথলজিক্যাল ল্যাবের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। তবে সম্প্রতি তিনি কোনও হাসপাতাল বা ল্যাবের সঙ্গে জড়িত নেই। বাড়িও রোগী দেখতেন না বলেই প্রতিবেশীদের থেকে জানা গিয়েছে। এক প্রতিবেশীর কথায়, খুব মেলামেশা না করলেও, দেখা হলে সকলের সঙ্গে হেসে কথা বলতেন ডাক্তারবাবু। রবিবার রাতে তাঁর সঙ্গে শেষ দেখা হয়। পরিচারিকাই তাঁর খাওয়াদাওয়া সহ অন্যান্য দেখাশোনা করতেন।
সোমবার সেই পরিচারিকাই প্রথমে সকাল সাড়ে সাতটা, তারপরে সাড়ে ১০ টা এবং শেষে দুপুর আড়াইটে নাগাদ ডেকেও কোনও সাড়া না পেয়ে প্রতিবেশীদের খবর দেন। তখন এক প্রতিবেশী জয়বাবুর দিদির সঙ্গে যোগাযোগ করেন। তিনি প্রতিবেশীকে জানান, ভাই তো অনেক সময়েই সারারাত জেগে থেকে সকালে ঘুমাতে যান। তাই হয়ত দুপুর পর্যন্ত সাড়া পাচ্ছেন না। আরও একটু সময় দেখতে বলেন। যদিও এরপরেও প্রতিবেশীরা অনেক ডাকাডাকি করে চিকিৎসকের কোনও সাড়া না পেয়ে, জানালার একাংশ ভেঙে কী হয়েছে, দেখার চেষ্টা করেন। সেই সময় তাঁরা দেখতে পান, জয় বসু নিজের বিছানায় শুয়ে রয়েছে, কোনও সাড়া দিচ্ছেন না। এরপরেই পুলিস দরজা ভেঙে তাঁকে উদ্ধার করে। প্রতিবেশীরা জানিয়েছেন, উনি বিয়ে করেননি। আত্মীয়রাও কেউ নেই। বাবা-মা অনেকদিন আগে মারা গিয়েছেন। এই অবস্থায় দীর্ঘদিন একাকী থাকার ফলে মানসিকভাবে কিছু সমস্যার মধ্যে দিয়ে যাচ্ছিলেন হয়ত। এবিষয়ে তিনি চিকিৎসাও করছিলেন বলে পুলিস সূত্রের দাবি। সল্টলেকে এরকম একাকী প্রচুর মানুষ থাকেন। তাঁদের নিয়ে ব্লক এবং পুলিসের থেকে বিভিন্ন সময় কিছু অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়। কিন্তু, সারা বছর তাঁরা কে, কীভাবে রয়েছেন— সেই খবর কেউই রাখে না বলে অভিযোগ প্রতিবেশীদের।