উচ্চতর বিদ্যায় আগ্রহ বাড়বে। মনোমতো বিষয় নিয়ে পঠন-পাঠন হবে। ব্যবসা স্থান শুভ। পৈতৃক ব্যবসায় যুক্ত ... বিশদ
ভরতপুর-১ ব্লকের সিজগ্রাম পঞ্চায়েতের অধীনে রয়েছে কারোল বিল। মুর্শিদাবাদ নবাব এস্টেটের অধীনে কয়েক হাজার হেক্টর এলাকাজুড়ে রয়েছে ওই বিল। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, প্রতিবছর বর্ষার সময় বিল কানায় কানায় ভরে যায়। ফলে ওই বিলে প্রচুর মাছ উৎপাদন হয়। বোয়াল জাতীয় মাছ ছাড়াও, কাতলা, ট্যাংরা ও অন্যান্য মাছের ব্যাপক আমদানি হয় বছরের এই সময়। বিল থেকে মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করে আশপাশের অন্তত ২০টি গ্রামের হাজারের বেশি পরিবার। কিন্তু এবছর সেভাবে বর্ষা না নামায় বিলে কার্যত জল নেই বললেই চলে। ফলে বিল থেকে বাজারগুলিতে মাছ আমদানি হচ্ছে না। স্থানীয় পল্লিশ্রী, কুলুপুকুর গ্রামের মৎস্যজীবী অরূপ রাজবংশী, সন্দীপ রাজবংশী, রামানন্দ রাজবংশী প্রমুখ জানান, অন্যান্য বছরগুলিতে এলাকার মৎস্যজীবীদের এই সময় দম ফেলার ফুরসত থাকে না। দিনের অধিকাংশ সময় বিলে মাছ ধরে সময় কাটান তাঁরা। এমনকী রাতের দিকে নৌকায় প্রচুর মৎস্যজীবী মাছ ধরেন। কিন্তু এবছর তাঁদের অবস্থা করুণ। বিলে জল না থাকায় বেশিরভাগ মৎস্যজীবী মাছ ধরতে পারছেন না। বড় আকারের মাছ ধরার জাল বাড়ি থেকে বের করতেই পারছেন না। নৌকাগুলিও কার্যত বসিয়ে রাখা হয়েছে। ফলে পুজোর আগে বহু মানুষের রুজি-রোজগারে টান পড়েছে। এদিকে পাটন বিলও মুর্শিদাবাদ এস্টেটের অধীনে রয়েছে। বিশাল আয়তনের ওই বিল নবগ্রাম, খড়গ্রাম, কান্দি, বহরমপুর প্রভৃতি ব্লক এলাকার অংশজুড়ে রয়েছে। বর্ষার সময় কয়েক হাজার মৎস্যজীবী ওই বিলে মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করেন। কিন্তু এবছর ঠিকভাবে বর্ষা না হওয়ায় ওই বিলের উপর নির্ভরশীল মৎস্যজীবীদের অবস্থা খুবই খারাপ। ফকিরপাড়া গ্রামের মৎস্যজীবী সুবল মণ্ডল বলেন, প্রতিবছর এই সময় সাত-আটজনের দল করে নৌকায় রাতভর মাছ ধরি এলাকার কয়েক হাজার মৎস্যজীবী। কিন্তু এবছর কার্যত হতাশ করেছে ওই বিল। বৃষ্টি কম হওয়ায় বিলের জল তলানিতে লেগে রয়েছে। এলাকার মৎস্যজীবীদের সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রতিবছর তাঁদের পুজোর খরচের জন্য চিন্তা দূর করে বিলের মাছ। পুজোর আগে যেভাবে ওই দুই বিল থেকে মাছ উৎপাদন হয়ে থাকে তাতে পুজোর খরচ বাদে বছরের কয়েক মাস নিশ্চিন্তে কাটানো যায়। কিন্তু এবছর হতাশ করেছে, তাঁদের মাছ উৎপাদন নেই বললেই চলে। ফলে বহু মৎস্যজীবী পুজোর আগে ভিনরাজ্যে ভিন্ন পেশায় কাজ করতে চলে যাচ্ছেন। পল্লিশ্রী গ্রামের চন্দন রাজবংশী বলেন, আমাদের গ্রামের শতাধিক যুবক ও প্রৌঢ় অন্য রাজ্যে গিয়েছেন বিভিন্ন কাজে। কেউ রাজমিস্ত্রি, কেউ কাঠমিস্ত্রির কাজে দক্ষিণের রাজ্যগুলিতে গিয়েছেন। কারণ সামনেই পুজোর বিশাল খরচ। সেই খরচ উঠে আসত বিলের মাছ ধরে। কিন্তু এবছর বিলে মাছ না থাকায় মৎস্যজীবীরা বাধ্য হয়ে ভিনরাজ্যে কাজ করতে যাচ্ছেন।
খড়গ্রাম ব্লকের রতনপুর গ্রামের মৎস্যজীবী আনোয়ার খাঁ বলেন, বিলে এবছর জল নেই, তাই মাছ পাওয়া যাবে না। সেটা এলাকার সকলেই বুঝতে পারছেন। এরপর বর্ষা এলেও সেভাবে মাছ উঠবে না। তাই অনেকে বিভিন্ন কাজে দিল্লি, মুম্বই, চেন্নাই চলে গিয়েছেন। তবে কিছু যুবক পুজোর আগে বাড়ি ফিরে আসবেন বলে জানা গিয়েছে। বাইরে কাজ করতে যাওয়া যুবকদের রোজগারের উপর নির্ভর করবে ওই পরিবারগুলির পুজোর আনন্দ। নিজস্ব চিত্র