কর্মরতদের উপার্জন বৃদ্ধি পাবে। শরীর-স্বাস্থ্য ভালোই যাবে। পেশাগত পরিবর্তন ঘটতে পারে। শিল্পী কলাকুশলীদের ক্ষেত্রে শুভ। ... বিশদ
করোনা মহামারীর জেরে শিলিগুড়িবাসী আতঙ্কিত। গোটা বিশ্বের ত্রাস এই ভাইরাসের মোকাবিলায় বাসিন্দারা অক্সিজেন সিলিন্ডার জোগাড়ে তৎপর। এ জন্য প্রতিদিনই শহরের অক্সিজেনের ব্যবসায়ীদের দোকানে ভিড় দেখা যাচ্ছে। কয়েকজন বাসিন্দা বলেন, বাড়িতে বয়স্ক বাবা, মা রয়েছেন। তাঁরা নানা ধরনের রোগব্যাধিতে আক্রান্ত। মাঝেমধ্যে তাঁরা শ্বাসকষ্টেও ভোগেন। করোনা ছোবল বসালে তাঁদের অবস্থা আরও সঙ্কটজনক হতে পারে। তাই বিপদকালীন সময়ের মোকাবিলা করতে অক্সিজেনের সিলিন্ডার জোগাড় করে রাখছি। আবার কেউ বলেন, বাড়ির বয়স্কদের শরীরে অক্সিজেনের মাত্রা ঘনঘন ওঠা-নামা করছে। তাই চিকিৎসকের পরামর্শমতো অক্সিজেন সিলিন্ডার নিচ্ছি। সকলেরই বক্তব্য, বাজারে বিভিন্ন ধরনের সিলিন্ডার রয়েছে। যার দামও বিভিন্নরকম। তাই দৈনিক ৪০-৫০ টাকা হিসেবে ১৫ দিন কিংবা ৩০ দিনের জন্য সিলিন্ডার ভাড়া নিচ্ছি। এ জন্য কারবারিদের কাছে ২-৩ হাজার টাকা সিকিউরিটি মানি জমা করতে হচ্ছে। আর নগদ টাকায় কিনতে হচ্ছে সিলিন্ডারের রেগুলেটর। যার দাম ১১০০ টাকা। ইদানীংকালে অক্সিজেন সিলিন্ডারের চাহিদা বৃদ্ধির কথা ব্যবসায়ীরা মেনে নিয়েছেন। কয়েকটি অক্সিজেন সিলিন্ডার ডিস্ট্রিবিউটরের সঙ্গে কথা বলে জানা গিয়েছে, ২.২ লিটারের সিলিন্ডারে ০.৫০ কিউবিক মিটার, ৩ লিটারের সিলিন্ডারে ১ কিউবিক মিটার, ৫ লিটারের সিলিন্ডারে ১.২৫ কিউবিক মিটার, ১০.২ লিটার সিলিন্ডারে ১.৫০ কিউবিক মিটার এবং ৪৬ লিটারের সিলিন্ডারে ৭ কিউবিক মিটার তরল অক্সিজেন থাকে। ২.২ লিটার সিলিন্ডারের দাম ৫২০০-৬৫০০ টাকা, তিন লিটারের দাম ৫২০০- ৭০০০ টাকা, পাঁচ লিটারের সিলিন্ডারের দাম ৬৫০০ টাকা, ১০.২ লিটার সিলিন্ডারের দাম ৭৭০০ টাকা এবং ৪৬ লিটারের সিলিন্ডারের দাম প্রায় ১৪ হাজার টাকা। শেষেরটি সাধারণত নার্সিংহোমে ব্যবহার করা হয়। আর সিলিন্ডারগুলি দৈনিক ভাড়া ২০ টাকা, ৩০ টাকা ও ৪০ টাকা।
শহরের একটি অক্সিজেন ডিলারের মালিক রঞ্জন সাহা বলেন, কোভিড পরিস্থিতির আগে দিনে এক থেকে দু’টি করে সিলিন্ডার বিক্রি হতো। তাও আবার অনেকদিন হতো না। কারণ, সেই সময় ফুসফুসের সংক্রমণে আক্রান্ত রোগীরাই অক্সিজেন ব্যবহার করতেন। কোভিড পরিস্থিতির পর সিলিন্ডারের চাহিদা বেড়েছে। দিনে তিন-চারটি সিলিন্ডার বিক্রি হচ্ছে। এক্ষেত্রে ২.২ এবং ৩ লিটারের সিলিন্ডারের চাহিদা বেশি। তাছাড়া দিনে চার-পাঁচটি করে সিলিন্ডার ভাড়া দেওয়া হচ্ছে। তবে অক্সিজেনের দাম বেশি নেওয়া হচ্ছে না। অক্সিজেনের জোগানেরও অভাব নেই। তবে সিলিন্ডারের রেগুলেটরের কিছুটা অভাব আছে। তা বিভিন্নভাবে মেটানো হচ্ছে।
প্রসঙ্গত, শিলিগুড়ি শহরের উপকণ্ঠে ডাবগ্রাম শিল্পতালুকে সরকার অনুমোদিত অক্সিজেন রিফিলিং ইউনিট রয়েছে। ওই সংস্থা সূত্রে জানা গিয়েছে, গুজরাত থেকে সড়ক পথে সংশ্লিষ্ট ইউনিটে অক্সিজেন আনা হয়। সেখান থেকে দার্জিলিং, কোচবিহার, আলিপুরদুয়ার, জলপাইগুড়ি, কালিম্পং প্রভৃতি জেলা হাসপাতালে অক্সিজেন সরবরাহ করা হয়। খোলা বাজারেও কিছু ডিলারের মাধ্যমে তারা অক্সিজেন বিক্রি করে। ইউনিটের ম্যানেজার পবন মালাহান অবশ্য বলেন, অক্সিজেনের মজুত স্বাভাবিক রয়েছে।