কর্মক্ষেত্রে সহকর্মীর ঈর্ষার কারণে সম্মানহানি হবে। ব্যবসায়ীদের আশানুরূপ লাভ না হলেও মন্দ হবে না। দীর্ঘ ... বিশদ
এঁরা হচ্ছেন প্রবাসী ভারতীয়। ‘ওভারসিজ সিটিজেন অব ইন্ডিয়া’ বা সংক্ষেপে ওসিআই। অর্থাৎ, ভারতের বাসিন্দা, কিন্তু সরাসরি নাগরিক নন। কারণ, এদের জন্ম বিদেশে, তাই ভারতীয় পাসপোর্ট পাবেন না। বদলে ওসিআই কার্ড।
বিশ্বজুড়ে এই ওসিআইয়ের সংখ্যা প্রচুর। মূলত পড়াশোনার স্বার্থেই এঁরা বিদেশ পাড়ি দেন। কিন্তু করোনা সংক্রমণ ঠেকাতে লকডাউন ঘোষণার আগেই এদের ভারতে ফেরার রাস্তাটা বন্ধ করে দিয়েছিল মোদি সরকার। আর ‘বন্দে ভারত মিশন’ চালু হওয়ার পরও রাস্তাটা বন্ধই। কারণ, এই অভিযানে শুধুমাত্র বিদেশে আটকে পড়া ভারতীয় নাগরিকদের ফেরাচ্ছে নয়াদিল্লি। ফলে চরম আশঙ্কা এবং অসহায় অবস্থাতেই দিন কাটছে ওসিআইদের। বিদেশে অবস্থিত ভারতীয় মিশনগুলির মুখাপেক্ষী হয়ে বসে থাকা ছাড়া আর কোনও উপায় নেই তাঁদের।
ওয়েলসের বাঙর ইউনিভার্সিটির স্নাতক স্তরের ওই তৃতীয় বর্ষের পড়ুয়ার কথাই ধরা যাক। বাড়ি বেঙ্গালুরুতে। কোর্স শেষ করে মে মাসে ভারতে ফেরার কথা ছিল। কিন্তু দু’মাস আগে তাঁর ক্লাস বাতিল হয়ে গিয়েছে। কিন্তু এখনও আটকে রয়েছেন ব্রিটেনে। কীভাবে ফিরবেন তাও জানেন না। শুধু বলছিলেন, ‘মা দু’বছর আগে মারা গিয়েছেন। বাড়িতে বাবা একা। এখানে আমার কোনও আত্মীয়-স্বজনও নেই। ফলে যেভাবেই হোক, বাড়ি ফিরতে হবে। কারণ, এখানে থাকা-খাওয়া বেশ ব্যয়বহুল।’ কিন্তু কীভাবে ফিরবেন জানা নেই। কারণ, খোঁজ নিয়ে জেনেছেন বাণিজ্যিকভাবে বিমান পরিষেবা চালু না হলে ভারতে ফিরতে পারবেন না প্রবাসী ভারতীয়রা। এই সিদ্ধান্তে হতাশ হয়ে বলছেন, ‘সে তো সেই জুলাই মাস। ততদিনে হয়তো শেষ হয়ে যাব।’
লন্ডনের ইম্পেরিয়াল কলেজের স্নাতক স্তরের এক পড়ুয়া আটকে পড়েছেন ক্যালিফোর্নিয়ায়। ক্লাস বাতিল হয়ে যাওয়ার পর গোটা ক্যাম্পাস খালি হয়ে গিয়েছিল। বেশ কিছুদিন সেখানে একাই থাকতে হয়েছিল তাঁকে। কিন্তু টাকা পয়সায় টান পড়ায় বাধ্য হয়ে এক আত্মীয়ের বাড়িতে আশ্রয় নিতে হয়েছে তাঁকে। এখনও সেখানেই আটকে আছেন। কিন্তু তাঁর প্রশ্ন, ‘এভাবে কতদিন?’ তাঁর আশা প্রবাসী ভারতীয়দের দেশে ফেরানো নিয়ে শীঘ্রই নীতি বদল করবে কেন্দ্র। লন্ডনের ইউনিভার্সিটি অব দ্য আর্টসের ফাউন্ডেশন ডিপ্লোমা পড়ুয়ার আক্ষেপ, ‘আমি বেঙ্গালুরুতে বড় হয়েছি। সেখানেই আমার ছোটবেলা কেটেছে। সেখানে এখনও আমার পরিবার রয়েছে। কিন্তু আমি সেখানে ফিরতে পারছি না। ছোট থেকে আমাকে শেখানো হয়েছে, আমি আর পাঁচটা ভারতীয়ের মতোই। কিন্তু এখন আমার নিজেকে বিধ্বস্ত মনে হচ্ছে।’
দেশে ফিরতে না পেরে, এই পরিস্থিতি বিদেশে থাকা-খাওয়া জোগাড় করতে করতে প্রবাসী ভারতীয় পড়ুয়ারা সত্যিই ক্লান্ত। দেশে ফেরার অপেক্ষায় মোদি সরকারের দিকে তাকিয়ে তাঁরা।