কর্মের প্রসার ও উন্নতি হবে। ব্যবসায়ীদের দিনটি অনুকূল। অর্থকড়ি প্রাপ্তি যোগ শুভ। অর্থ সঞ্চয় বাড়বে ... বিশদ
দেশের মেডিকেল গবেষণা সংক্রান্ত শীর্ষ সংস্থা আইসিএমআরের মহামারীবিদ্যা বিভাগের প্রধান বৈজ্ঞানিক সমীরণ পাণ্ডা শনিবার জানান, ‘ভ্যাকসিন নেওয়ার পরেও করোনার সংক্রমণকে বলা হয় ‘ব্রেক-থ্রু ইনফেকশন।’ এটি অস্বাভাবিক নয়। মনে রাখতে হবে কোভিডের যেসব ভ্যাকসিন আবিষ্কার হয়েছে, তা রোগ রুখতে নয়, মৃত্যু রোখাই মূল উদ্দেশ্য। আক্রান্তের শরীরে রোগের ভয়ঙ্কর আকার (সিভিয়রিটি) আটকানোই মূল উদ্দেশ্য’।
করোনার অন্যতম টিকা ‘কোভ্যাকসিন’ আবিষ্কারের সঙ্গে সক্রিয়ভাবে যুক্ত আইসিএমআরে’র এই বাঙালি বিজ্ঞানী বলেন, ‘ইদানীং আমরা সমীক্ষা করে মজার ব্যাপার লক্ষ করছি। সেটি হল, যাঁরা ডবল ডোজ নিয়েছেন, অনেকাংশে তাঁরা যাঁরা সিঙ্গল ডোজ নিয়েছেন, এমন অংশের চেয়ে বেশি ব্রেক-থ্রু ইনফেকশনের কবলে পড়ছেন। এমনও দেখা যাচ্ছে, যাঁরা এখনও একটিও ডোজ নেননি, তাঁদের অনেক আক্রান্তই হননি।’
কেন এমন হচ্ছে? উত্তর খুঁজতে গিয়ে দেখা যাচ্ছে, বিষয়টি হল সম্পূর্ণ ব্যবহারিক। ডা. সমীরণ পাণ্ডা জানান, ‘ব্রেক-থ্রু ইনফেকশন বেশি হচ্ছে প্রবীণদের। প্রথমত তাঁরা সবার আগে টিকা পেয়েছেন। তার উপর ডবল ডোজ। তাই অনেকের মধ্যেই বেপরোয়া ভাব ধরা পড়ছে। যথার্থভাবে মাস্ক পরা ছেড়ে দিয়েছেন। আর যাঁরা এখনও একটিও ডোজ নেননি, তাঁরা সংক্রমণের ভয়ে রয়েছেন। তাই মাস্ক পরছেন। কোভিড বিধি মানছেন। ফলে সংক্রমণও আটকাচ্ছেন।’ ডা. সমীরণ পাণ্ডা বলেন, ‘তার মানে অবশ্য এই নয় যে, ভ্যাকসিন না নেওয়াই ভালো। কোভিডের ভাইরাস সার্স কোভ-টু অত্যন্ত মারাত্মক। মহামারী ঘটিয়েছে। ভাইরাসের নিত্য নতুন ভেরিয়েন্টের সন্ধানও মিলছে হচ্ছে। যার মধ্যে ডেল্টাই এখন দেশ দাপাচ্ছে। তাই সংক্রমণ হলে যাতে রোগীর বাড়াবাড়ি না হয়, সেকথা মনে রেখেই ভ্যাকসিন দেওয়া। একইভাবে সংক্রমণের ঝুঁকি এড়াতে আবশ্যিক মাস্কও।’
একই সুরে নয়াদিল্লি এইমসের ডিরেক্টর ডা. রণদীপ গুলেরিয়ার বক্তব্য, ‘ভ্যাকসিন নেওয়ার পরেও সংক্রমণ হতেই পারে। হচ্ছেও। তবে তা সামান্যই। সেই কারণেই সবাইকেই কোভিড বিধি মেনে চলার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। তবে ভ্যাকসিন নেওয়ার ফলে শরীরে যেহেতু করোনার অ্যান্টিবডি তৈরি হচ্ছে, তাই তা নিরাপদ। কার্যকরীও। সার্স কোভ-টুর সঙ্গে লড়াই করতে ভ্যাকসিনের দুটি ডোজই নিতে হবে। টিকা নেওয়ার প্রতি অনীহা কাটাতেই হবে।’
স্বাস্থ্যমন্ত্রকের দেওয়া তথ্যই বলছে, ভ্রান্ত ধারনার বশে সময় হয়ে গেলেও অনেকে দ্বিতীয় ডোজ নিতে গড়িমসি করছেন। গোটা দেশে এই মুহূর্তেই প্রায় ৯ কোটি নাগরিকের দ্বিতীয় ডোজের সময় হয়ে গেছে। তবুও তাঁরা ডোজ নেননি। উত্তরপ্রদেশ, রাজস্থান, ওড়িশা এবং পশ্চিমবঙ্গে এই সংখ্যাটি বেশি। অথচ রাজ্যের কাছে ডোজ পড়ে রয়েছে। তাই উপরিউক্ত রাজ্যগুলিকে বাড়তি উদ্যোগ নিতে চিঠি দিয়েছেন কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যসচিব রাজেশ ভূষণ।
এদিকে, উৎসবের মরশুমে কেন্দ্র বারবার সতর্ক করার পরেও ফের কোভিড সংক্রমণ বাড়ছে। টানা ১২ দিন দৈনিক সংক্রমণ ছিল ১৫ হাজারের কম। কিন্তু গত ২৪ ঘণ্টায় ১৬ হাজার ৩২৬ জন আক্রান্ত হয়েছেন বলেই শনিবারই জানিয়েছে স্বাস্থ্যমন্ত্রক। বেড়েছে মৃত্যুও। ৬৬৬ জন একদিনে মারা গিয়েছেন। যদিও কেরলে আগের না জানানো ৪৬৪ জনের মৃত্যুর রেকর্ড যুক্ত হওয়ার কারণেই দৈনিক মৃত্যুর সংখ্যাটি বেড়েছে।