শত্রুরা পরাভূত হবে। কর্মে পরিবর্তনের সম্ভাবনা। স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদের জন্য ব্যয়-বৃদ্ধির যোগ আছে। কোনও ... বিশদ
করোনার দাপটে এখন কাঁপছে গোটা বিশ্ব। টিকা আবিষ্কারে রাতদিন পরিশ্রম করছেন বিজ্ঞানীরা। আমেরিকা, চীন, ফ্রান্স, ইতালি, ব্রিটেনের বহু নামজাদা সংস্থাই টিকা তৈরিতে ঝাঁপিয়েছে। সব মিলিয়ে ১৫০টিরও বেশি প্রকল্প চলছে বিশ্বব্যাপী। তবে এখনও পর্যন্ত চূড়ান্ত সাফল্যের দাবি করতে পারেনি কেউই। তার মধ্যে ভারতের তৈরি ‘কোভ্যাকসিন’ মানদেহের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হলে ইতিহাস সৃষ্টি করবে বলে মনে করছেন বিজ্ঞানীরা। সোমবার টিকা তৈরির কথা ঘোষণা করেন ভারত বায়োটেকের চেয়ারম্যান ও ম্যানেজিং ডিরেক্টর কৃষ্ণ এল্লা। তাঁর দাবি, ‘দেশীয় পদ্ধতিতে প্রথম এই টিকা আবিষ্কার করতে পেরে আমরা গর্বিত। ‘কোভ্যাকসিন’ তৈরিতে আইসিএমআর এবং এনআইভি আমাদের সহযোগিতা করেছে। পাশাপাশি আমাদের গবেষকরাও অক্লান্ত পরিশ্রম করেছেন।’
গবেষণায় সাফল্য কীভাবে? টিকা আবিষ্কারে ‘ভারত বায়োটেক’-এর সুনাম দীর্ঘদিনের। এর আগেও তারা পোলিও, র্যাবিস, জিকা, এইচ১এন১, রোটা ও চিকুনগুনিয়ার মতো ভাইরাসঘটিত রোগের টিকা আবিষ্কারে সাফল্য পায়। বিশ্বে কোভিডের প্রাদুর্ভাব শুরু হওয়ার প্রথম থেকেই তারা ভ্যাকসিন তৈরির প্রকল্প হাতে নেয়। ঢাকঢোল না পিটিয়ে গবেষণা শুরু করে দেন বিজ্ঞানীরা। জানা গিয়েছে, প্রথমে সার্স-কোভ-২ স্ট্রেইনটি পুনের এনআইভি’তে বিচ্ছিন্ন করার পর ভারত বায়োটেকে পাঠানো হয়েছিল। ওই স্ট্রেইনটি থেকেই হায়দরাবাদের জেনোম ভ্যালিতে অবস্থিত ভারত বায়োটেকের বায়ো-সেফটি লেভেল-৩ পরীক্ষাগারে তৈরি হয়েছে এই টিকা। মানুষের শরীরে সেটি প্রয়োগের আগে প্রি-ক্লিনিক্যাল পরীক্ষাও হয়েছে। টিকার কার্যকারিতা জানার পর, তা স্বাস্থ্যমন্ত্রকের অধীন ডিসিজিআই-এর কাছে পাঠানো হয়। তারপরই মানব শরীরে ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের অনুমতি মেলে। ভারত বায়োটেকের আশা, ‘কোভ্যাকসিন’ সাফল্য পেলে করোনার টিকা আবিষ্কারে নতুন মাইল ফলক তৈরি করবে ভারত। মারণ ভাইরাসের হাত থেকে মুক্তি পাবে মানবসভ্যতা।
এদিকে কোভিড ভ্যাকসিন তৈরিতে পিছিয়ে নেই মার্কিন ওষুধ প্রস্তুতকারক সংস্থা জনসন অ্যান্ড জনসন। সংস্থার তরফে জানানো হয়েছে, জুলাইয়ের মাঝামাঝি থেকে তাদের তৈরি ভ্যাকসিনের ট্রায়াল শুরু হবে। তিনটি পর্যায়ে চলবে এই পরীক্ষা। প্রথমে ১ হাজার ৪৫ জনের ওপর ভ্যাকসিনের কার্যকারিতা নিয়ে পরীক্ষা চালানো হবে। ২০২১ সালের মধ্যে ১ কোটি ভ্যাকসিন তৈরির লক্ষ্যমাত্রা নিয়েছে সংস্থাটি। বিশ্বে টিকা তৈরির যতগুলি প্রকল্প চলছে, তাদের মধ্যে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় বেশ খানিকটা এগিয়ে। তাদের তৈরি চ্যাডক্স-১ ভ্যাকসিনের তৃতীয় পর্যায়ের ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল শুরু হয়েছে। অক্সফোর্ড এবং অ্যাস্ট্রোজেনেকার উদ্যোগে তৈরি এই ভ্যাকসিন নিয়ে ব্রাজিলের সঙ্গে মোটা অঙ্কের চুক্তিও হয়েছে তাদের। ভারতের সিরাম ইনস্টিটিউটও জুলাই মাসে ২০ থেকে ৩০ লক্ষ চ্যাডক্স ভ্যাকসিন তৈরি করবে বলে জানিয়েছে। চীনের রাষ্ট্রায়ত্ত ওষুধ প্রস্তকারক সংস্থা সিনোফার্মার ভ্যাকসিনেরও তৃতীয় পর্যায়ের ট্রায়াল চলছে।