রাহুল চক্রবর্তী, কলকাতা: দুঃসময়েও ভরসা জোগাল ‘রূপশ্রী’। কন্যাদায়গ্রস্ত বাবা-মায়ের মুখে হাসি ফুটিয়ে উচ্চ প্রশংসিত মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই প্রকল্প। লকডাউন পিরিয়ডে ৫৫ হাজারেরও বেশি পরিবার পেয়েছে ‘রূপশ্রী’র সুবিধা। কোভিডের মোকাবিলায় টানা প্রায় দু’মাস পূর্ণ লকডাউনের কবলে ছিল গোটা দেশ। কাজ হারিয়েছেন বহু মানুষ। মার খেয়েছে ছোটখাট ব্যবসাও। ফলে বিবাহযোগ্য কন্যাদের নিয়ে চরম বিপাকে পড়েছিলেন বাবা-মায়েরা। বিয়ের বন্দোবস্ত করেও দুশ্চিন্তার শেষ ছিল না তাঁদের। এই সঙ্কট-মুহূর্তে তাঁদের কাছে বড় সহায় হয়ে উঠেছে ‘রূপশ্রী’। আর সেই সাহায্য পেয়ে, কথা মতো মেয়ের বিয়ে দিতে পেরে খুশি প্রাপকরা। গত চার মাসে ৫৫ হাজারেরও বেশি রাজ্যবাসী এই প্রকল্পের টাকা পেয়েছেন। নারী, শিশু ও সমাজকল্যাণ দপ্তরের তথ্য বলছে, মার্চ মাসে আবেদনপত্র জমা পড়েছিল ৩৬ হাজার ৫৮৮টি। ফেব্রুয়ারি মাসেও বহু আবেদন জমা পড়ে। দু’মাসে জমা পড়া আবেদনগুলি পর্যালোচনা করে চূড়ান্ত হয় ৪৩ হাজার ৪৭৩টি। আবেদনকারীদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে সরাসরি ‘রূপশ্রী’র টাকা পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা করে রাজ্য সরকার। এপ্রিল-মে মাসে পূর্ণ লকডাউনের সময়েও প্রকল্পের পরিষেবা পৌঁছে দিতে তৎপর ছিল প্রশাসন। জানা গিয়েছে, এপ্রিল মাসে আট হাজার ৬৭৪টি ‘রূপশ্রী’ প্রকল্পে আবেদনপত্রের টাকা মঞ্জুর করা হয়। আবেদনপত্র জমা পড়েছিল তিন হাজার ৮১৬টি। তথ্য খতিয়ে দেখে অনুমোদিত হয় তিন হাজার ৩০১টি। পরবর্তী সময়ে আরও দু’হাজার ৩৩৩টি আবেদনপত্রের জন্য এককালীন টাকা পাঠিয়ে দেওয়া হয় ব্যাঙ্কে।
পুরো লকডাউন কাটিয়ে এখন চলছে আনলক পর্ব। চলতি মাসেও কয়েক হাজার পাত্রীর ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে পৌঁছেছে ‘রূপশ্রী’র টাকা। দপ্তরের মন্ত্রী শশী পাঁজা বলেছেন, ‘লকডাউন হোক বা আনলক, ৩৬৫ দিনই সরকার মানুষের পাশে রয়েছে। ‘রূপশ্রী’ প্রকল্পের কাজও থেমে থাকেনি। আবেদনপত্র খতিয়ে দেখে দ্রুততার সঙ্গে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে টাকা পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে।’ পরিবারের বার্ষিক আয় দেড় লক্ষ টাকা বা তার কম হলে ‘রূপশ্রী’ প্রকল্পে আবেদন করতে পারবেন একমাত্র প্রাপ্তবয়স্ক পড়ুয়ারাই। বিয়ের ৩০ দিন আগে আবেদন করতে হবে। বিয়ে প্রস্তুতির আনুষঙ্গিক তথ্যও জমা দিতে হবে আবেদনপত্রের সঙ্গে। প্রকল্পের আর্থিক সাহায্যের পরিমাণ এককালীন ২৫ হাজার টাকা।