অতিরিক্ত পরিশ্রমে শারীরিক ক্লান্তি। প্রিয়জনের বিপদগামিতায় অশান্তি ও মানহানির আশঙ্কা। সাংসারিক ক্ষেত্রে মতানৈক্য এড়িয়ে চলা ... বিশদ
ভাতার ব্লকে এবার ধানের ফলন বেশি হওয়ায় বিঘা প্রতি ১-২ বস্তা করে ধান বেশি পাওয়ার আশা করেছিলেন চাষিরা। কিন্তু যেভাবে শোষক পোকায় ধান গাছ নষ্ট হচ্ছে, তাতে ক্ষতির মুখে পড়তে হবে কিনা তা নিয়েই ভাবছেন চাষিরা। ভাতারের মাহাচান্দা গ্রাম পঞ্চায়েতের খুরুল গ্রামের গিয়ে দেখা গেল বিঘার পর বিঘা জমিতে শোষক পোকায় নষ্ট হয়েছে ধান গাছ। ক্ষতিগ্রস্ত জমি দেখাতে গিয়ে খুরুল গ্রামের চাষি গয়ানাথ ঘোষ বলেন, কীভাবে পোকা লেগে ধান শেষ হয়ে যাচ্ছে, আমরাও বুঝতে পারছি না। কৃষি দপ্তরে সরকারি ছুটি লেগেই থাকায় সেভাবে কোনও সাহায্য পাচ্ছি না। অথচ এবারে ফলন ভালোই হচ্ছিল।
বিঘা প্রতি ১-২ বস্তা ধান বেশি পাওয়ার আশা আমার মতো অনেকেরই ছিল। কিন্তু এখন যেভাবে শোষক পোকায় ধান শেষ হচ্ছে তাতে লাভ তো দূর, চাষের টাকা উঠবে কি না সেটাই ভাবছি। খুড়ুল গ্রামের ছবি ভাতারের বিভিন্ন এলাকায়। কৃষি বিজ্ঞানীদের মতে অবিলম্বে কীটনাশক স্প্রে না করলে এই পোকায় গোটা জমির ধানই নষ্ট হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থেকেই যায়। কল্যাণীর কৃষি বিজ্ঞানী কৌশিক ব্রহ্মচারী বলেন, যে ছবি দেখলাম তাতে গোটা এলাকার স্বর্ণ ধানই শেষ হয়ে যাবে যদি অবিলম্বে ব্যবস্থা না নেওয়া হয়। আগে এই ব্লকে শ্যামাপোকার উপদ্রব ছিল অনেক বেশি। সেই পোকা তাড়াতে প্রচুর পরিমাণে চাষিরা সিন্থেটিক কীটনাশক একসময়ে ব্যবহারের ফলেই এখন এই অবস্থা। অবিলম্বে আক্রান্ত গাছে ৭-৮ সারি অন্তর পাশাঠেলা দিয়ে গাছের গোড়ায় আলো বাতাস ঢোকার সুযোগ করে দিতে হবে। কার্বারিল ৫০ শতাংশ ২.৫ গ্রাম অথবা ডাইক্লোরভস ৭৬ শতাংশ ১ গ্রাম প্রতি লিটার জলে দিয়ে স্প্রে করতে হবে। যে সমস্ত গাছ এখনও আক্রমণের শিকার হয়নি, সেই গাছে বেশি করে যত্ন নিতে হবে।
প্রসঙ্গত, ২০১৭ সালেও ভাতার ব্লকে এই বাদামি শোষক পোকায় ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। সেই সময়ে সরকারকে পরিস্থিতি মোকাবিলায় আর্থিক সাহায্য করতে হয়েছিল। এলাকার চাষি শ্রীদাম মণ্ডল, তুহিন ঘোষ বলেন, আমরা কয়েকজন কৃষি বিশেষজ্ঞর কাছেও পরামর্শ নিয়েছিলাম। তাঁরা জানিয়েছেন, এখন ধানের পুষ্টির সময়। ভিতরে চাল তৈরি হচ্ছে। এই চাল তৈরি হওয়ার যে রস আছে তা ধানের ভিতরে। সেই অবস্থায় কীটনাশক দিলে ধান ঝলসে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে। সব মিলিয়ে অসহায় অবস্থায় এলাকার চাষিরা। কৃষি দপ্তরও সেভাবে এগিয়ে না আসায় আরও জটিলতা বাড়ছে।
যদিও ভাতার পঞ্চায়েত সমিতির কৃষি কর্মাধ্যক্ষ প্রদ্যুৎ পাল বলেন, কৃষি দপ্তর ব্যবস্থা নিচ্ছে না, এটা ঠিক নয়। চাষিদের বিভিন্নভাবে সচেতন করা হচ্ছে। আমরাও কৃষিদপ্তরকে এবিষয়ে জানিয়েছি।