অতিরিক্ত পরিশ্রমে শারীরিক ক্লান্তি। প্রিয়জনের বিপদগামিতায় অশান্তি ও মানহানির আশঙ্কা। সাংসারিক ক্ষেত্রে মতানৈক্য এড়িয়ে চলা ... বিশদ
বিধানচন্দ্র কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. রাজীব নাথ জানিয়েছেন, ধান কাটার পর জমিতে জো এলে একটা চাষ দিয়ে ডাল বোনা যেতে পারে। সেক্ষেত্রে বিঘা প্রতি মুসুরের জন্য বীজ লাগবে ৪ কেজি, উন্নত জাত মৈত্রী। ছোলার ক্ষেত্রে বিঘায় বীজ লাগবে ৮ কেজি। ভালো জাত জাকি ৯২-১৮। মটরের ক্ষেত্রে বিঘায় বীজ দরকার ৮ কেজি। রচনা, প্রকাশ জাতগুলি ভালো। খেসারির উন্নত জাত রতন, প্রতীক। ডাল চাষের জন্য বিঘায় সার লাগবে ৬ কেজি ইউরিয়া, ৩০ কেজি ফসফেট ও ৭ কেজি মিউরিয়েট অব পটাশ। সঙ্গে সাড়ে তিন কেজি জিঙ্ক সালফেট দিতে পারলে ভালো। যাঁরা পয়রা ফসল হিসেবে ডাল চাষ করবেন, তাঁদের ধান কাটার ১৫-২০ দিন আগে জমি যখন কাদা থাকবে, তখন মুসুর বিঘা প্রতি ৮-১০ কেজি, খেসারি বিঘায় ১২-১৪ কেজি, মটরের জন্য ১০-১২ কেজি বীজ ছড়িয়ে দিতে হবে। তবে ডালবীজ ছড়ানোর আগে ৬-৮ ঘণ্টা আগে জলে ভিজিয়ে রাখতে হবে। জীবাণুসার হিসেবে রাইজোবিয়াম মিশিয়ে নিতে পারলে ভালো। প্রতি বিঘার জন্য ২০০ গ্রাম রাইজোবিয়াম হলেই চলবে। ঠাণ্ডা জলে ডালের বীজের সঙ্গে রাইজোবিয়াম মিশিয়ে নেওয়ার পর আধঘণ্টা ছায়ায় শুকিয়ে নিতে হবে। আরও বেশি করে ডালশস্য চাষে কৃষকদের উৎসাহিত করছে রাজ্যের কৃষিদপ্তর। কৃষিবিদদের সুপারিশ, সারা বছর ধরে যে জমিতে চাষ করা হয়, সেখানে একটি ফসল হিসেবে অবশ্যই ডাল চাষ করতে হবে। এতে যেমন জমির উর্বরতাশক্তি বৃদ্ধি পায়, তেমনই কৃষকের বাড়তি আয় সম্ভব। সর্ষে, তিসি ও গমের সঙ্গে একই জমিতে ডাল চাষ করা যেতে পারে। এতে লাভের পরিমাণ বাড়বে। রাই সর্ষে, তিসি ও গমের সঙ্গে ছোলার ডাল মিশ্র ফসল হিসেবে চাষ করা যায়। এতে রোগপোকার আক্রমণ কমে। আবার আখের সঙ্গে ছোলা চাষ করা যায় সাথী ফসল হিসেবে। সর্ষের সঙ্গে ছোলা ১ : ৪ অনুপাতে সারিতে অন্তর্বর্তী ফসল হিসেবে চাষ করা যেতে পারে। মুসুর ডালও গম, সর্ষে ও তিসির সঙ্গে মিশ্র ফসল হিসেবে চাষ করে বাড়তি আয় করা সম্ভব। প্রতি হেক্টরে ২০-২২ কেজি মুসুর ও আড়াই কেজি তিসি মিশ্রভাবে ছিটিয়ে বুনলে মুসুরের ঢলে পড়া রোগ কম হয় বলে জানিয়েছেন কৃষি বিশেষজ্ঞরা। আখ, তিল, তোসা পাটের সঙ্গে সাথী ফসল হিসেবে মুগ ডাল চাষ করলে অপেক্ষাকৃত বেশি লাভ পাওয়া যায়। অড়হর, তুলো, জোয়ার, ভুট্টা প্রভৃতির সঙ্গেও মুগ চাষ করা যেতে পারে। ভুট্টা, বাজরা ও জোয়ারের সঙ্গে চাষ করলে হলুদ কুটে রোগ ও শুঁটি ছিদ্রকারী পোকার আক্রমণ কমে। যেসব কৃষক আমনের জমিতে পয়রা পদ্ধতিতে ডাল চাষ করবেন, তাঁদের প্রাথমিক সার হিসেবে নাইট্রোজেন প্রয়োগ করতে হবে না বলে জানাচ্ছেন কৃষিবিদরা। তাঁদের সুপারিশ, যদি দেখা যায় গাছের ভালো বৃদ্ধি হচ্ছে না, তা হলে ডালের বীজ বোনার ২০-২৫ দিন পর বিঘা প্রতি ৬ কেজি ইউরিয়া প্রয়োগ করা যেতে পারে। এইসময় জমিতে সিঙ্গল সুপার ফসফেট প্রয়োগ করলে মাটিতে যদি ফসফেট ও সালফারের ঘাটতি থাকে, তা হলে তা মিটে যায়। ডালশস্যের ফুল ফোটার ১০দিন আগে ইউরিয়া ২ শতাংশ (প্রতি লিটার জলে ২০ গ্রাম) বা তরল সার এনপিকে ১৯:১৯:১৯ সাড়ে সাত গ্রাম প্রতি লিটার জলে গুলে স্প্রে করা যেতে পারে। হেক্টর প্রতি এই দ্রবণ ৭০০-৮০০ লিটার লাগে।