কর্মক্ষেত্রে সহকর্মীর ঈর্ষার কারণে সম্মানহানি হবে। ব্যবসায়ীদের আশানুরূপ লাভ না হলেও মন্দ হবে না। দীর্ঘ ... বিশদ
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, পূর্বাভাস অনুযায়ী উম-পুনে পূর্ব বর্ধমানে খুব বেশি ক্ষতির সম্ভাবনা ছিল না। কিন্তু, শেষ পর্যন্ত বাদ যায়নি এই জেলাও। জেলার কাটোয়া ও কালনা মহকুমার উপর দিয়ে বয়ে গিয়ে ভাগীরথী নদী। নদী তীরবর্তী এলাকাগুলিতে ক্ষতির পরিমাণ সবচেয়ে বেশি। উম-পুন আসার আগেই ওই দুই মহকুমার ৪৯টি ফেরিঘাট বন্ধ করে দেওয়ার পাশাপাশি ৭০টির বেশি পরিবারকে অন্যত্র স্থানান্তর করা হয়েছিল। উম-পুন শুরু হওয়ার পরেও বুধবার এবং বৃহস্পতিবার সকালে আরও ১৫০ এর বেশি পরিবারকে স্থানান্তর করতে হয়েছে। বাড়ি ঘর ভেঙে যাওয়ায় অনেককে ত্রাণ শিবিরে নিয়ে আসা হয়েছে। মেমারির ব্রাহ্মণপাড়ায় একটি বড় ত্রাণ শিবির খোলা হয়েছে। সেখানে অনেককেই নিয়ে আসা হয়েছে।
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, বুধবার সন্ধ্যায় মঙ্গলকোটের জগেশ্বরহিডি এলাকায় পাঁচিল চাপা পড়ে রাধারমন ঘোষ (৭২) নামে এক বৃদ্ধের মৃত্যু হয়েছে। গোয়ালঘরের পাঁচিল তাঁর উপর ভেঙে পড়ে। আশঙ্কাজনক অবস্থায় উদ্ধার করে তাঁকে কাটোয়া মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকেরা মৃত বলে ঘোষণা করেন। কাটোয়ার মহকুমা শাসক প্রশান্ত রাজ শুক্লা বলেন, উম-পুন সাইক্লোনের জেরেই ওই বৃদ্ধের মৃত্যু হয়েছে।
অন্যদিকে, বুধবার সন্ধ্যায় পূর্বস্থলী-২ মাজিদা অঞ্চলের কমলনগর ঘাটে ভাগীরথী নদীতে একটি ভুটভুটি নৌকোও ডুবে যায়। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, কোনও হতাহত হয়নি। ভুটভুটিতে ৭-৮ জন ছিলেন। প্রত্যেকেই সাঁতরে ডাঙায় উঠে আসেন। প্রবল বৃষ্টির জেরে সমুদ্রগড়ের নসরতপুর এলাকায় প্রচুর তাঁতঘরে জলে ঢুকে গিয়েছে। এর ফলে, তাঁতশিল্পীরা বিপাকে পড়েছেন। কালনার জাফরপাড়া এলাকায় রাস্তার উপর বহু বছরের প্রাচীন একটি বটগাছ শিকড় সহ উপড়ে পড়েছে। স্থানীয়দের দাবি, ওই বটগাছের বয়স প্রায় ৫০০ বছর। বিকেল পর্যন্ত রাস্তা পরিষ্কার করা যায়নি। কালনা পুরসভার পক্ষ থেকে ২০০টি পরিবারকে এদিন সকালে ত্রিপল দেওয়া হয়। বিদ্যুৎ বিভ্রাটের জেরে দুপুর পর্যন্ত পানীয় জলের পরিষেবা বিঘ্নিত হলেও বিকেলের পর থেকে স্বাভাবিক হতে শুরু করে। বর্ধমান শহরেও ঝড়ের দাপটে গাছ ও বিদ্যুতের খুঁটি ভেঙে পড়েছে। বর্ধমানের সাধনপুর, ক্যানেলপাড় এলাকায় গাছ পড়ে গিয়ে একসঙ্গে বেশ কয়েকটি বাড়ি ভেঙে গিয়েছে। কাটোয়া শহরেও বেশকিছু জায়গায় গাছ ভেঙে পড়েছে। বুধবার সন্ধ্যায় ঝড়ের সময় দুর্গাপুর থেকে ট্রেনে বর্ধমানে এসে কয়েকটি পরিবার চরম অসুবিধায় পড়েন। প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাঁদের বিদ্যার্থী বয়েজ হাইস্কুলে নিয়ে গিয়ে রাখা হয়।
পূর্ব বর্ধমানের জেলাশাসক বিজয় ভারতী বলেন, বৃহস্পতিবার সকাল ১০টা পর্যন্ত আমরা জেলা থেকে যা রিপোর্ট পেয়েছি, তাতে উম-পুনের জেরে জেলায় ১৮০০টি বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তার মধ্যে সমস্ত ব্লক ও পুরসভা মিলিয়ে ২৫৪টি বাড়ি সম্পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং ১৫৪৬টি বাড়ি আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। জেলায় ৮ জন জখম হয়েছেন। এই সংখ্যাটি আরও বাড়তে পারে। জরুরি ভিত্তিতে আমরা বুধবার রাতেই ৫০টি পরিবারকে অন্যত্র স্থানান্তর করেছি। এদিন সকালেও ১১৫টি পরিবারকে স্থানান্তর করতে হয়েছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে সমস্ত রকম প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। জেলায় ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ বাড়তেও পারে। আমরা পুরো জেলায় নজরদারি চালাচ্ছি। বিদ্যুৎ বিভ্রাট কম হয়েছে। তবুও সব জায়গাতেই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।