বাংলা নিউজ এজেন্সি: সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কায় বাঁকুড়া মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের আইসোলেশন ওয়ার্ড গোবিন্দনগর ক্যাম্পাস থেকে লোকপুরে সরিয়ে নেওয়া হল। বাঁকুড়া মেডিক্যালের অধ্যক্ষ পার্থপ্রতিম প্রধান বলেন, দপ্তরের নির্দেশিকা অনুযায়ী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মূল ক্যাম্পাস থেকে বেশ কিছুটা দূরে পুরনো ক্যাম্পাসে আইসোলেশন ওয়ার্ড সরিয়ে আনা হয়েছে। ওই ওয়ার্ডে ১৫টি বেডের পাশাপাশি ফিভার ক্লিনিকের জন্য আরও অতিরিক্ত ২৫টি বেড রাখা হয়েছে। লোকপুর থেকে কার্ডিওলজি ও চক্ষু বিভাগ গোবিন্দনগরে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। এর ফলে সংক্রমণের সম্ভাবনা এড়ানো যাবে। তবে বাঁকুড়া মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে আইসোলেশনে কেউ ভর্তি নেই।
এদিকে এদিন সকাল থেকে বাঁকুড়ার বিভিন্ন ব্লকে তৃণমূল কংগ্রেসের তরফে গরিব মানুষদের চাল, ডাল ও আলু বিলি করা হয়। বাঁকুড়া আরপিএফের তরফে গৌরীপুর কুষ্ঠ হাসপাতালে ১০০ টি আবাসিক পরিবারের হাতে খাদ্য সামগ্রী তুলে দেওয়া হয়। বিষ্ণুপুর মহকুমা পুলিস আধিকারিক ও কোতুলপুর থানার আইসি গরিব মানুষের হাতে ডাল তুলে দেন। জেলা পরিষদের মেন্টর অরূপ চক্রবর্তী শহরের কিছু দরিদ্র মানুষের হাতে চাল, আলু তুলে দেন।
পুরুলিয়া জেলার বিভিন্ন প্রান্তে এদিনও চাল, আলু ও সব্জি বিলি করলেন জনপ্রতিনিধি ও পুলিস প্রশাসন। অন্যদিকে, এদিনও ঝাড়খণ্ড থেকে কয়েকজন শ্রমিক পায়ে হেঁটেই ঝালদা শহরে পৌঁছন। স্থানীয় বাসিন্দারা তাঁদের খাবারের ব্যবস্থা করেন। এদিকে পুরুলিয়ায় লরির ভিতরে কোয়ারেন্টাইনে রয়েছেন ভিন রাজ্যে কর্মরত দুই লরি চালক। লকডাউন শুরু হতেই ওড়িশা ও অন্ধ্রপ্রদেশে কর্মরত পুরুলিয়ার তিন বাসিন্দা লরি নিয়ে হাজির হন পুরুলিয়া ২ নম্বর ব্লকের পাথরডি গ্রামের কাছে। কিন্তু গ্রামবাসীদের বাধায় তাঁদের গ্রামে নিজের বাড়িতে ঢোকা সম্ভব হয়নি। তাই পাশের পলাশকোলা গ্রামে খোলা মাঠের মধ্যে লরির ভিতরে কোয়ারেন্টাইনে রয়েছেন ওই তিনজন। বাড়ি থেকে তাঁদের খাবার, পানীয় জল দিয়ে আসছেন পরিবারের লোকজন। পুরুলিয়ায় হোম কোয়ারেন্টাইনে রয়েছেন ১৫ হাজার ৮৩ জন। তবে হাসপাতালে কোয়ারেন্টাইনে থাকা রোগীর সংখ্যা কমে পাঁচজন হয়েছে। অপরদিকে বাঘমুণ্ডিতে এক রেশন ডিলারের বিরুদ্ধে চাল বিক্রির অভিযোগ পেয়ে রেশন দোকানে হানা দেন বাঘমুণ্ডির বিডিও উৎপল দাসমুহুরী।
আরামবাগে লকডাউনের পাশাপাশি আন্তঃজেলা যোগাযোগ বন্ধ করতে তৎপর হয় পুলিস প্রশাসন। আরামবাগ শহরের সঙ্গে একদিকে হাওড়া, পশ্চিম মেদিনীপুর ও অন্যদিকে বাঁকুড়া জেলার মূল প্রবেশ পথ রয়েছে। যে কারণে শহরের প্রবেশ ও বাহির পথের গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় পুলিস পিকেটিং বসানো হয়। এছাড়া মহকুমার চারটি থানার পুলিস কর্মীরা বিভিন্ন গ্রামাঞ্চলে পেট্রলিং করে লকডাউন মেনে চলার জন্য মাইকিং করছেন। আরামবাগ রেলস্টেশন এখন কার্যত তালাবন্দি অবস্থায় পড়ে রয়েছে। রেলস্টেশনের নিরাপত্তার দায়িত্ব সামলাচ্ছেন মাত্র পাঁচজন আরপিএফ কর্মী। চিকিৎসা পরিষেবা অব্যাহত রাখার জন্য ইতিমধ্যেই আরামবাগ মহকুমা সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে স্বাস্থ্যকর্মীদের একটি স্পেশাল টিম তৈরি করা হয়েছে।