নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: বেসরকারি স্কুলগুলিতে এপ্রিল থেকেই নয়া শিক্ষাবর্ষ শুরু হয়। লকডাউনের জেরে স্কুল বন্ধ। কিন্তু তাতে পড়াশোনা বন্ধ রাখতে নারাজ বিভিন্ন স্কুল কর্তৃপক্ষ। অনলাইনেই সিলেবাস এগিয়ে রাখতে চাইছে তারা। এর মধ্যেই স্কুলগুলিতে অনলাইন ক্লাস নেওয়ার নির্দেশ দিল আইসিএসই বোর্ড। মঙ্গলবার সব স্কুলকে চিঠি দিয়ে বিষয়টি জানানো হয়েছে। কেন্দ্রীয় সরকারের নানা অনলাইন পোর্টালের সাহায্য নেওয়ার কথা বলা হয়েছে। বোর্ডের পরীক্ষা দেবে এমন পড়ুয়াদের জন্য বিগত কয়েক বছরের টেস্ট পেপার সলভ করার ব্যবস্থা করতে বলেছে স্কুলগুলিকে। ফিউচার ফাউন্ডেশন স্কুলে যেমন আজ, বুধবার থেকে নতুন ক্লাস শুরুর কথা ছিল। করোনার জেরে স্কুল বন্ধ। ফলে বাড়ি বসেই ছেলে-মেয়েরা ক্লাসের পড়া সেরে ফেলতে পারবে, সেই ব্যবস্থাই করেছে কর্তৃপক্ষ। প্রিন্সিপাল রঞ্জন মিটার বলেন, প্রত্যেক পড়ুয়ার একটি আইডি আছে। সিলেবাস তো সবাই জানে। আমরা প্রত্যেক পড়ুয়াকে বলছি, বাড়িতেই বিষয়গুলি পড়ে নাও। তারপর যদি কোনও প্রশ্ন থাকে, তাহলে তা শিক্ষককে জানাবে। সেই মতো তিনি অনলাইন ভিডিওর মাধ্যমে ক্লাস নিয়ে সেই প্রশ্নের উত্তর দেবেন। বা কারও কিছু যদি বুঝতে অসুবিধা হয়, তাও বুঝিয়ে দেবেন শিক্ষকরা। এর ফলে পরবর্তী সময় ছাত্রছাত্রীদের উপর বাড়তি চাপ পড়বে না। অন্যদিকে, ডন বসকো পার্ক সার্কাসেও অনলাইনে ক্লাস নেওয়ার কথা বলা হয়েছে। অভিভাবকদের চিঠি দিয়ে স্কুলের প্রিন্সিপাল ফাদার বিকাশ জানিয়েছেন, স্কুলের পোর্টালে সিলেবাস আপলোড করে দেওয়া হয়েছে। শিক্ষকরা বাড়ি থেকেই কাজ করবেন। পড়ুয়ারাও নতুন পদ্ধতিতে পড়াশোনার মজা নিতে পারবে। শিক্ষকরা হোমওয়ার্ক দেবেন। পড়ুয়ারা বাবা-মায়ের সাহায্য নিয়ে তা করবে। কিন্তু খেয়াল রাখতে হবে, অভিভাবকরা যেন সেই কাজ পুরো করে না দেন। এই হোমওয়ার্ক স্কুল খুললে মূল্যায়ন করা হবে। এছাড়াও অনলাইনে বিভিন্ন স্টাডি মেটেরিয়াল আপলোডও করে দেওয়া হবে। পড়ুয়ারা তা ব্যবহার করতে পারবে। এদিকে, ছাত্রছাত্রীদের পড়াশোনায় যাতে কোনও বাধা না আসে, তার জন্য ডিপিএস রুবি পার্ক স্কুল কর্তৃপক্ষ অনলাইন ক্লাস শুরু করে দিয়েছে। জুনিয়র ক্লাসের জন্য দিনে দু’টি এবং যারা আগামী বছর বোর্ডের পরীক্ষা দেবে, তাদের জন্য পাঁচটি ক্লাস নেওয়া হচ্ছে। প্রিন্সিপাল জয়তী চৌধুরী বলেন, পড়ুয়াদের মধ্যে এনিয়ে বিশেষ আগ্রহ লক্ষ্য করা যাচ্ছে। তবে একটু একটু করে পড়ানো হচ্ছে। এখনও পর্যন্ত আমরা পাঁচদিন ক্লাস নিতে পেরেছি। কোনওভাবেই যাতে ছেলেমেয়েদের পঠনপাঠন ব্যাহত না হয়, সেই কথা মাথায় রেখেই এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। হাওড়ার ঩ডিপিএস-এ পড়ুয়াদের জন্য হোয়াটসঅ্যাপ, জুমক্লাউড-এর মত অত্যাধুনিক সফটওয়্যার ব্যবহার করা হচ্ছে। এর মাধ্যমেই লকডাউন পরিস্থিতিতে ঘরে বসে থাকা পড়ুয়াদের প্রয়োজনীয় শিক্ষাদান করছেন সংশ্লিষ্ট স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকারা। যদিও কিছু স্কুল এখনই এই পদ্ধতিতে ক্লাস নিতে চাইছে না।