উচ্চবিদ্যার ক্ষেত্রে বাধার মধ্য দিয়ে অগ্রসর হতে হবে। কর্মপ্রার্থীদের ক্ষেত্রে শুভ যোগ। ব্যবসায় যুক্ত হলে ... বিশদ
বহরমপুর শহরে জলাভূমি ভরাটের সমস্যা বহুদিনের। শহরের চারপাশে ছড়িয়ে থাকা পুকুর, বিল ও খাল অবাধে ভরাট করার পর সেগুলি প্লট করে বিক্রি করা হচ্ছে বলে অভিযোগ। এর বিরুদ্ধে বেশ কয়েক মাস আগেই সরব হয়েছেন শহরের নাগরিকদের একাংশ। ইতিমধ্যে তাঁরা বিভিন্ন স্কুলের শিক্ষক, শিক্ষিকা, সরকারি কর্মী ও সমাজসেবীদের নিয়ে জলাভূমি রক্ষা কমিটি গঠন করেছেন। এদিন তাঁরা শহরের প্রশাসনিক ভবনের কাছে গান্ধী মূর্তির পাদদেশে সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত অবস্থান বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেন। কর্মসূচিতে অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক সুনীতি বিশ্বাস, চুঁয়াপুর হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষিকা শিল্পী সেন, বিজ্ঞান মঞ্চের জেলা সভাপতি তপন সামন্ত প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
পরে চুঁয়াপুর হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষিকা বলেন, শহরের বিভিন্ন এলাকায় অবাধে পুকুর ভরাট করা হচ্ছে। জমির চরিত্র বদল করা হচ্ছে। প্রশাসনের কাছে একাধিকবার অভিযোগ জানিয়েও তেমন কোনও লাভ হয়নি। এর প্রতিবাদে শহরে তিনটি পথসভা করা হয়। এদিন জলাভূমি রক্ষা কমিটির নেতৃত্বে অবস্থান বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করা হল। জলাভূমি রক্ষা কমিটির আহ্বায়ক শুক্লা মণ্ডল বলেন, পুকুর ভরাট রুখতে জলাভূমি আইন প্রয়োগ করা, জলাভূমি সংস্কার করা, বহরমপুর শহরে ভূমি-চরিত্র নিয়ে পরিপূর্ণ সমীক্ষা করা ও জলাভূমিগুলির এলাকা চিহ্নিত করে ভরাট ও জবরদখল করার বিরুদ্ধে বিজ্ঞপ্তি জারি করা, শহরের নিকাশি-নালার জল পরিস্রুত করে বিলে ফেলা এই চারটি দাবিতে প্রশাসনের কাছে স্মারকলিপি দেওয়া হয়েছে। এরপরও দাবিগুলি পূরণ না হলে গণস্বাক্ষর সহ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দ্বারস্থ হব। এজন্য বিভিন্ন জলাভূমির ছবি তোলা হয়েছে। পাশাপাশি, আইনি লড়াই চালানো হবে।
অন্যদিকে, জলাভূমি ভরাটের বিরুদ্ধে অভিযানে নেমেছে ভূমি ও ভূমি সংস্কার দপ্তর। তারা প্রতি সপ্তাহে জলভূমি ভরাটের বিরুদ্ধে শহরে মাইকিং করছে। ইতিমধ্যে লিফলেটও বিলি করেছে। পাশাপাশি, জলাভূমি ভরাটে অভিযুক্ত কয়েকজনকে শোকজ করা হয়েছে। সন্তোষজনক উত্তর না মেলায় কয়েকজন অভিযুক্তের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ জানানো হয়েছে।
বহরমপুর মহকুমা ভূমি ও ভূমি সংস্কার আধিকারিক প্রিয়ব্রত রাড়ি বলেন, শহরের গোরাবাজারের ঘোষ লেনে সুইমিং পুল ভরাটের অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগ খতিয়ে দেখোর পর সোমবার সংশ্লিষ্ট পুকুরের সাত মালিককে শোকজ করা হয়েছে। ১৫দিনের মধ্যে ভরাট হওয়া পুকুরের অংশকে পূর্বের অবস্থায় ফেরানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বিষয়টি জেলা প্রশাসন ও পুলিসকে জানানো হয়েছে। নির্দেশ অমান্য করা হলে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হবে। সেই পুকুরের বুজিয়ে ফেলা অংশ থেকে ভরাট বা মাটি তুলে ফেলা হবে। এধরনের বেশ কয়েকটি পদক্ষেপ ইতিমধ্যে নেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি, শহরের সমস্ত পুকুরের পাড়ে জলাভূমি ভরাট নিষিদ্ধ বলে সাইনবোর্ড ঝোলানো হয়েছে। বেআইনিভাবে পুকুর, বিল সহ যে কোনও ধরনের জলাভূমি ভরাট করা হলে জেলা ও জরিমানা হতে পারে। এব্যাপারে নজরদারি চালাতে দু’জন অফিসার ও পুলিস কর্মী নিয়ে একটি স্কোয়াড গঠন করা হয়েছে।