উচ্চবিদ্যার ক্ষেত্রে বাধার মধ্য দিয়ে অগ্রসর হতে হবে। কর্মপ্রার্থীদের ক্ষেত্রে শুভ যোগ। ব্যবসায় যুক্ত হলে ... বিশদ
লোকসভা নির্বাচনে বীরভূম জেলার দু’টি আসনে তৃণমূল জয়লাভ করলেও বিজয় মিছিল থেকে লাড্ডু বিলি, সবেতেই কয়েককদম এগিয়ে বিজেপি। এমনকী, অনুব্রত মণ্ডলের গড়ে তৃণমূলের সঙ্গে চোখে চোখ রেখে লড়াই করছে বিজেপি, ‘কেষ্ট’র গড় বোলপুরে তৃণমূলের দলীয় কার্যালয় দখল করার অভিযোগ উঠছে বিজেপির বিরুদ্ধে। এই অবস্থায় ফল ঘোষণার পর এতদিন চুপ থাকলেও এদিন তাঁরা তোপ দাগলেন। অন্যদিকে, সংগঠন নতুন করে চাঙ্গা করার কাজও শুরু করল তৃণমূল। সেই কাজও নানুর ব্লক থেকেই শুরু হচ্ছে, এদিন তা স্পষ্ট হয়ে যায়। তৃণমূল জেলা পরিষদে ছ’বছর ক্ষমতায় এলেও এই প্রথম জেলা পরিষদ অফিসে দাপিয়ে বেড়াতে দেখা গেল কাজল শেখকে। নানুরের সাংগঠনিক দায়িত্ব দেওয়ার পরের দিনই কাজলকে নিয়ে জেলা সভাধিপতির কক্ষে বৈঠক করল তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্ব। উপস্থিত ছিলেন, ব্লক সভাপতি সুব্রত ভট্টাচার্য ও জেলা পরিষদের পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ কেরিম খান। বৈঠক শেষে কাজলের দাবি, নানুরের যেসব জায়গায় বিজেপির পতাকা উঠছে একমাস পরে তা আর থাকবে না।
বিজেপির জেলা সভাপতি রামকৃষ্ণ রায় বলেন, আমরা অনুমতি নিয়েই কর্মসূচি করছি। আর ওরা মাঠে নেমেই আছে, কিন্তু আর নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে না। এসব হুমকিতে বিজেপি ভয় পায় না। আর কাজল শেখকে নিয়ে আমাদের মাথাব্যথা নেই, ওটা ওদের আভ্যন্তরীণ বিষয়।
ভোট পরবর্তী হিংসায় জ্বলছে নানুর সহ গোটা জেলা। ২৩মে লোকসভা ভোটের ফল বের হতেই দেখা যায়, রাজ্যে ১৮টি আসনে জয় পেয়েছে গেরুয়া শিবির। এমপি সংখ্যা ২ থেকে ১৮ হওয়ার পরেই কার্যালয় দখল ঘিরে বিজেপি-তৃণমূল সংঘর্ষে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে রাজ্য। বীরভূমে দু’টি আসন তৃণমূল দখলে রাখলেও বিজেপি ভোট পাওয়ার নিরিখে ব্যাপকভাবে উঠে এসেছে। যার জেরে জিতেও যেন ঝিমিয়ে গিয়েছিল তৃণমূল। আর ফাঁকা রাজনৈতিক ময়দানে দাপিয়ে বেড়াচ্ছিল বিজেপি। মোদি ক্ষমতায় আসায় লাড্ডু বিলি থেকে বিজয় মিছিল হয়েছে। নানুর, রামপুরহাট, তারাপীঠ সর্বত্রই হিংসার ছবিও ধরা পড়েছে। তবুও প্রকাশ্যে মন্তব্য করতে দেখা যায়নি বিপর্যয়ের মুখে পড়া তৃণমূল নেতাদের। কিন্তু সোমবার কেষ্টর বাড়ির অদূরে বোলপুর থানার সেনকাপুরে তৃণমূলে কার্যালয় বিজেপির দখল করে নেওয়া এবং তাতে ময়ূরেশ্বরের লোকপাড়ায় তৃণমূল-বিজেপি সংঘর্ষ তাদের স্থির থাকতে দিল না। এদিন তাই রীতিমতো হুঁশিয়ারি দিতে দেখা গেল জেলার সহসভাপতি অভিজিৎ সিংহকে।
অন্যদিকে, দল গোছানোর কাজও শুরু হয়েছে তৃণমূল শিবিরে। গত লোকসভা ভোটে যে নানুর বিধানসভা ৬২হাজার ভোটে লিড দিয়েছিল তৃণমূলকে সেই বিধানসভা এবার মাত্র ১৮হাজার ভোটে লিড দিয়েছে। এমনকী এই এলাকার মোহনপুরে তৃণমূল কার্যালয়ে হামলা করার অভিযোগ উঠেছে বিজেপির বিরুদ্ধে। চারকোল গ্রামে তৃণমূল-বিজেপি সংঘর্ষ হয়েছে। নানুরে তৃণমূলের সঙ্গে সমানে টেক্কা দিচ্ছে বিজেপি। তাই ডাকসাইটে তৃণমূল নেতা কাজল শেখকে সোমবারই মূলস্রোতে ফিরিয়েছে দল। আর সময় নষ্ট না করে বাকি নানুরের নেতৃত্ব ও অনুব্রত মণ্ডল ছাড়া জেলার প্রধান সেনাপতিরা কাজল শেখের সঙ্গে বৈঠক করেন। রুদ্ধদ্বার কক্ষে বৈঠকের আলোচনা নিয়ে কোনওপক্ষ কিছু বলতে না চাইলেও কাজল শেখের চওড়া হাসিই বলে দিচ্ছে ফের নানুর অভিযান শুরু হল বলে।